যুক্তরাষ্ট্রে দক্ষ কর্মীদের জন্য জনপ্রিয় এইচ-১বি ভিসায় নতুন নিয়ম চালু করেছে প্রশাসন। হঠাৎ ঘোষণা অনুযায়ী, নতুন আবেদনকারীদের ক্ষেত্রে প্রতিটি ভিসার জন্য ১ লাখ মার্কিন ডলার ফি দিতে হবে। এই সিদ্ধান্তের পরপরই ভিসাধারী কর্মী, বিভিন্ন কোম্পানি এবং বিদেশি সরকারগুলো আতঙ্কে পড়ে যায়।
শুক্রবার এক ঘোষণায় জানানো হয়, এই উচ্চ ফি কোম্পানিগুলোকেই দিতে হবে। তবে ঘোষণায় পরিষ্কার করা হয়নি যে এটি শুধু নতুন আবেদনকারীদের জন্য নাকি বিদ্যমান ভিসাধারীদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে। অস্পষ্ট তথ্যের কারণে কর্মী থেকে শুরু করে প্রতিষ্ঠান—সবাইই সর্বোচ্চ খারাপ পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করে।
ভারত সরকার জানিয়েছে, এই পদক্ষেপ মানবিক সংকট তৈরি করতে পারে, বিশেষ করে পরিবারগুলোতে ভাঙন সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে—অনেক কর্মী দেশ ছাড়ার পরিকল্পনা বাতিল করেন, কেউ কেউ আবার তড়িঘড়ি করে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আসেন। প্রযুক্তি খাতের বড় কোম্পানিগুলো জরুরি পরামর্শ দিয়ে কর্মীদের ভ্রমণ এড়িয়ে চলতে বলেছে।
শনিবার হোয়াইট হাউস জানায়, এই নতুন নিয়ম কেবল ভবিষ্যতের আবেদনকারীদের জন্য প্রযোজ্য এবং বিদ্যমান ভিসাধারীরা এতে প্রভাবিত হবেন না। একই সঙ্গে নিশ্চিত করা হয়, এটি বার্ষিক ফি নয়, বরং একবারের জন্য নির্ধারিত চার্জ।
তবে এর মধ্যেই ব্যাপক বিশৃঙ্খলা ও আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন দেশের নাগরিকরা ভ্রমণ বাতিল করেছেন, কেউ কেউ বিমানে ওঠার পরও নেমে গেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে যাত্রীদের মধ্যে বিভ্রান্তি ও অনিশ্চয়তার চিত্র দেখা গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রে কর্মরত ভারতীয় ও চীনা নাগরিকরাই সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হওয়ার আশঙ্কায় আছেন। কারণ গত বছর অনুমোদিত এইচ-১বি ভিসাধারীদের মধ্যে ৭১ শতাংশই ছিলেন ভারতীয়, আর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ছিল চীন। এ অবস্থায় ভারত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনায় স্থানীয় পণ্য ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের কিছু কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই পদক্ষেপ অভিবাসন প্রক্রিয়ার অপব্যবহার কমাবে এবং স্থানীয় শ্রমবাজারকে সুরক্ষিত রাখবে। তবে প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো বলছে, এতে দক্ষ জনবল নিয়োগে বড় ধরণের জটিলতা তৈরি হবে।