Sunday, October 5, 2025
spot_img
Homeআপনার স্বাস্থ্যযুক্তরাষ্ট্রে আমদানি পণ্যের ওপর নতুন শুল্ক আরোপের ঘোষণা

যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি পণ্যের ওপর নতুন শুল্ক আরোপের ঘোষণা

যুক্তরাষ্ট্রে আবারও বড় ধরনের শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা ঘোষণা করা হয়েছে। সম্প্রতি দেশটির প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, আসন্ন সময়ে আমদানি করা একাধিক পণ্যের ওপর কড়া শুল্ক বসানো হবে। এর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হলো বিদেশ থেকে আমদানি করা ব্র্যান্ডেড ওষুধ।

ঘোষণায় বলা হয়, ব্র্যান্ডেড বা পেটেন্ট করা যেকোনো ওষুধের ওপর ১০০% শুল্ক আরোপ করা হবে। তবে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে না যদি কোনো কোম্পানি ইতোমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রে নিজস্ব উৎপাদন কারখানা স্থাপন শুরু করে থাকে। শুল্ক আরোপের এ পদক্ষেপ স্থানীয় ফার্মাসিউটিক্যাল শিল্পকে উৎসাহিত করার পাশাপাশি বাইরের প্রতিযোগিতা নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়েছে।

ওষুধ ছাড়াও বিভিন্ন খাতে নতুন শুল্কের ঘোষণা এসেছে। ভারী ট্রাকের ওপর ২৫% এবং রান্নাঘরের কেবিনেটের ওপর ৫০% শুল্ক আরোপ করা হবে। আগামী সপ্তাহ থেকেই বাথরুমের ভ্যানিটি (মেকআপ কেবিনেট) এর ওপর ৫০% এবং কিছু আসবাবের ওপর ৩০% শুল্ক কার্যকর করার পরিকল্পনা রয়েছে। ঘোষণামতে, সবকিছুই আগামী ১ অক্টোবর থেকে বাস্তবায়ন হবে।

প্রেসিডেন্ট জানান, এসব সিদ্ধান্ত জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে। কারণ আমদানি পণ্যের স্রোত স্থানীয় উৎপাদকদের জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি আরও জানান, বাইরের দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকছে, যা স্থানীয় ব্যবসাগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

এদিকে ব্যবসায়ীরা বলছেন, নতুন এই পদক্ষেপ বিশ্ব অর্থনীতির ওপরও প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষত, যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শিল্পে যেসব কাঁচামাল আমদানি নির্ভর, সেখানে ব্যয় বাড়বে এবং সিদ্ধান্তহীনতা তৈরি হতে পারে।

ফার্মাসিউটিক্যাল খাতের প্রতিনিধিরা এরই মধ্যে নতুন শুল্কের বিরোধিতা করেছে। তাদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবহৃত ওষুধের উপাদানের ৫৩% দেশেই উৎপাদিত হয়, তবে বাকিটা আসে ইউরোপ ও অন্যান্য মিত্র দেশ থেকে। এ অবস্থায় দ্বিগুণ শুল্ক আরোপ করলে ওষুধ সরবরাহ শৃঙ্খলা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র চেম্বার অব কমার্সও ট্রাক আমদানির ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ না করার আহ্বান জানিয়েছে। তাদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাক আমদানির প্রধান উৎস দেশগুলো হলো মেক্সিকো, কানাডা, জাপান, জার্মানি এবং ফিনল্যান্ড। এরা সবাই যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ অংশীদার এবং জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি নয়।

তবে পরিসংখ্যান বলছে, মেক্সিকো যুক্তরাষ্ট্রের জন্য সবচেয়ে বড় মধ্যম ও ভারী ট্রাক রপ্তানিকারক। একটি গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৯ সালের পর থেকে মেক্সিকো থেকে এই ধরনের গাড়ির আমদানি তিন গুণ বেড়েছে। এর ফলে স্থানীয় শিল্পের প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

সব মিলিয়ে, আসন্ন অক্টোবর থেকে কার্যকর হতে যাওয়া নতুন শুল্কগুলো যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ শিল্পকে সুরক্ষা দেওয়ার পাশাপাশি বৈশ্বিক অর্থনীতিতেও আলোচনার জন্ম দিচ্ছে। এখন দেখার বিষয়, এ সিদ্ধান্তে দেশটির স্থানীয় উৎপাদকরা কতটা লাভবান হন এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক কীভাবে প্রভাবিত হয়।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments