যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব ও অভিবাসন সংস্থা ঘোষণা করেছে যে, ২০ অক্টোবর ২০২৫ থেকে নাগরিকত্ব প্রক্রিয়ায় নতুন সিভিক্স বা নাগরিকত্ব পরীক্ষা কার্যকর হবে। এই পরিবর্তন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাহী আদেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আনা হয়েছে এবং নাগরিকত্ব প্রার্থীদের মূল্যায়ন আধুনিক করার লক্ষ্য নিয়ে পরিকল্পিত। নতুন পরীক্ষার মাধ্যমে প্রার্থীদের যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস, সরকারী কাঠামো এবং নাগরিক জীবনে সক্রিয় অংশগ্রহণের দক্ষতা যাচাই করা হবে।
নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, যারা ২০ অক্টোবর ২০২৫-এর আগে ‘ফর্ম এন-৪০০’ (নাগরিকত্ব আবেদন ফর্ম) জমা দেবেন তারা ২০০৮ সালের সিভিক্স পরীক্ষা দেবেন। আর যারা ২০ অক্টোবর বা তার পরে আবেদন করবেন, তাদের নতুন ২০২৫ সালের সিভিক্স পরীক্ষা দিতে হবে। নতুন পরীক্ষা পূর্ববর্তী সংস্করণের ভিত্তিতে তৈরি হয়েছে, যেখানে প্রশাসনিক কিছু পরিবর্তন এসেছে, যা পরীক্ষার গ্রহণ প্রক্রিয়াকে আরও মানসম্মত ও আধুনিক করবে।
নাগরিকত্ব পরীক্ষা মূলত মৌখিক আকারের এবং এতে প্রার্থীর যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস, সরকারী কাঠামো, নাগরিক অধিকার ও দায়িত্ব সম্পর্কে জ্ঞান যাচাই করা হয়। নতুন পরীক্ষায় ১২৮টি প্রশ্নের তালিকা থেকে র্যান্ডমলি ২০টি প্রশ্ন নেওয়া হবে। পাসের জন্য কমপক্ষে ১২টি সঠিক উত্তর দিতে হবে। যেসব প্রার্থী পরীক্ষায় ফেল হন, তারা মূল সাক্ষাৎকারের ৬০–৯০ দিনের মধ্যে সর্বাধিক দুইবার পুনঃপরীক্ষার সুযোগ পাবেন।
পরীক্ষার সঙ্গে ইংরেজি ভাষার দক্ষতা প্রদর্শন আবশ্যক। প্রার্থীরা যদি ইংরেজি ভাষায় কথা বলতে, পড়তে ও লিখতে সক্ষম হন, তা পরীক্ষার অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়। বয়স বা স্বাস্থ্যজনিত কারণে যারা ইংরেজি দক্ষতা প্রদর্শনে অক্ষম, তাদের জন্য নির্দিষ্ট ছাড় এবং দিকনির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
প্রস্তুতির জন্য ইউএসসিআই প্রার্থীদের বিভিন্ন উপকরণ সরবরাহ করে, যেমন ভোকাবুলারি লিস্ট, নমুনা প্রশ্ন এবং অফিসিয়াল গাইড। প্রার্থীদের আগে থেকে এই উপকরণগুলো দেখে প্রস্তুতি নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পরীক্ষার সফলতা প্রায়ই প্রার্থীর প্রস্তুতি এবং নিয়মাবলী বোঝার দক্ষতার উপর নির্ভর করে।
২০০৮ সালের পরীক্ষায় প্রার্থীদের ১০০টি প্রশ্নের তালিকা থেকে ১০টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হতো এবং পাসের জন্য ছয়টি সঠিক উত্তর প্রয়োজন। নতুন ২০২৫ সালের পরীক্ষায় প্রশ্নের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে এবং পাসের মান আরও কঠোর করা হয়েছে, যাতে প্রার্থীর জ্ঞান এবং দক্ষতার মূল্যায়ন আরও স্পষ্ট হয়।
পরীক্ষার মূল উদ্দেশ্য হলো নতুন নাগরিকরা যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস, সরকারী কাঠামো এবং নাগরিক দায়িত্ব সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা রাখবেন এবং নাগরিক জীবনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে সক্ষম হবেন। নতুন পরীক্ষার মাধ্যমে নাগরিকত্ব প্রক্রিয়াকে আরও মানসম্মত এবং স্বচ্ছ করার লক্ষ্য রাখা হয়েছে।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে যে, আবেদনকারীদের সময়সূচি সম্পর্কে সচেতন থাকা জরুরি। ২০ অক্টোবরের আগে আবেদনকারীরা পুরনো পরীক্ষা দেবেন, আর পরবর্তী সময়ে আবেদনকারীরা নতুন পরীক্ষা দেবেন। তাই প্রার্থীদের উচিত আগে থেকেই পরিকল্পনা করে আবেদন করা।
পরীক্ষার গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো সংক্ষেপে:
-
২০ অক্টোবর ২০২৫-এর আগে আবেদন করলে ২০০৮ সালের পরীক্ষা।
-
২০ অক্টোবর ২০২৫ বা তার পরে আবেদন করলে ২০২৫ সালের নতুন পরীক্ষা।
-
ইংরেজি দক্ষতা আবশ্যক, কিছু ক্ষেত্রে বিশেষ ছাড় প্রযোজ্য।
-
পরীক্ষায় ফেল হলে দুইবার পুনঃপরীক্ষার সুযোগ।
-
পরীক্ষায় সফল হতে প্রার্থীর যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস, সংবিধান, সরকারী কাঠামো এবং নাগরিক দায়িত্ব সম্পর্কে গভীর জ্ঞান থাকা আবশ্যক।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ২০ অক্টোবর ২০২৫ থেকে কার্যকর নতুন নাগরিকত্ব পরীক্ষা কেবল একটি পরীক্ষামূলক ধাপ নয়, বরং এটি প্রমাণ করবে যে নতুন নাগরিকরা দেশীয় ইতিহাস, সরকারী কাঠামো এবং নাগরিক জীবনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের জন্য পর্যাপ্ত দক্ষ। প্রার্থীদের উচিত এই পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিয়ে যথাযথভাবে প্রস্তুতি নেওয়া।



