টানা দ্বিতীয়বার মেজর লিগ সকারের (এমএলএস) বর্ষসেরা খেলোয়াড়ের (এমভিপি) খেতাব জিতে ইতিহাস গড়েছেন লিওনেল মেসি। এমএলএসের তিন দশকের ইতিহাসে তিনিই প্রথম ফুটবলার, যিনি ধারাবাহিকভাবে দুইবার এই পুরস্কার অর্জন করলেন।
২০২৫ মৌসুমের এমএলএস কাপের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হওয়ার পর আবারও এমভিপি পুরস্কার জয়ী হয়ে মেসি তার অসাধারণ পারফরম্যান্সের পরিচয় দিয়েছেন। যদিও তার দল ইন্টার মায়ামি নিয়মিত মৌসুমের সাপোর্টার্স শিল্ড জিততে ব্যর্থ হয়েছে, তবে পরে এমএলএস কাপ জয় নিশ্চিত করেছে।
গত রোববার চেজ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফাইনালে ইন্টার মায়ামি ভ্যাঙ্কুভার হোয়াইটক্যাপসকে ৩-১ গোলে হারিয়ে প্রথমবারের মতো এমএলএস কাপ চ্যাম্পিয়ন হয়। এই জয়ে মূল ভূমিকা রাখেন মেসি, যিনি ফাইনালে তিনটি গোলের মধ্যে দুটি অ্যাসিস্টের মাধ্যমে দলের জয় নিশ্চিত করেন। পুরো ২০২৫ মৌসুম জুড়ে তার ছন্দ ছিল অব্যাহত, যা তাকে এমভিপি হওয়ার পথে আরও শক্ত অবস্থানে রেখেছে।
নিয়মিত মৌসুমে মেসি ২৮ ম্যাচে ২৯ গোল করেন এবং ১৯টি অ্যাসিস্টে অংশ নেন। ২০২৪ মৌসুমের তুলনায় তার পরিসংখ্যান উন্নত হয়েছে; তখন তিনি ২০ গোল ও ১৬ অ্যাসিস্ট করেছিলেন। এমএলএসে নিয়মিত মৌসুমে সবচেয়ে বেশি পয়েন্ট অর্জন করা দল সাপোর্টার্স শিল্ড জিতেছে, কিন্তু এবার মেসির দল তৃতীয় স্থানে শেষ হয়।
প্লে-অফে গতবার হতাশাজনক পারফরম্যান্সের পর এবার উদযাপন ছিল। ১৮ দলের এমএলএস প্লে-অফে মেসি ৬ ম্যাচে ৬ গোল ও ৯টি অ্যাসিস্ট করে। ফাইনালে তার জোড়া অ্যাসিস্ট বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
মেসির এই মৌসুমটি ছিল রেকর্ড ভাঙার। তিনি টানা নয় ম্যাচে অন্তত তিনটি করে গোল বা অ্যাসিস্টে অবদান রাখেন, যা নতুন রেকর্ড। এছাড়া এক মৌসুমে ১০টি ম্যাচে একাধিক গোল করা এবং একাধিকবার অন্তত ৩৬টি ‘গোল-অবদানের’ কৃতিত্ব অর্জন করাও তার নামে নতুন রেকর্ড হিসেবে যোগ হলো।
মেজর লিগ সকারে এমভিপি পুরস্কারটি ১৯৯৬ সাল থেকে প্রদত্ত হয়ে আসছে। এই পুরস্কার পায় এমন খেলোয়াড় যিনি ক্লাব, খেলোয়াড় ও গণমাধ্যমের ভোটের মাধ্যমে দলের জন্য সবচেয়ে মূল্যবান হিসেবে বিবেচিত হন। মেসি এই পুরস্কার দুবার জেতা দ্বিতীয় খেলোয়াড়। এর আগে দুবার এমভিপি হয়েছেন প্রেকি (১৯৯৭ ও ২০০৩)।
২০২৫ সালে মেসি বিশাল ব্যবধানে পেছনে ফেলেছেন সান ডিয়েগো এফসির আন্দ্রেস ড্রেয়ারকে। সংবাদ মাধ্যমের ভোটে মেসি পেয়েছেন ৮৩.০৫ শতাংশ, খেলোয়াড়দের কাছ থেকে ৫৫.১৭৪৩ শতাংশ এবং ক্লাব থেকে ৭৩.০৮ শতাংশ ভোট। সব মিলিয়ে তার গড় ভোট প্রাপ্তি ৭০.৪৩ শতাংশ, যেখানে ড্রেয়ারের হার মাত্র ১১.১৫ শতাংশ।
মেসির এই রেকর্ড গড়া মৌসুম ও ধারাবাহিক পারফরম্যান্স ইন্টার মায়ামির জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় তৈরি করেছে। তার দক্ষতা ও নেতৃত্বে দল নিয়মিত মৌসুমে কিছুটা হলেও চূড়ান্ত সাফল্য পায়নি, তবুও প্লে-অফে এবং ফাইনালে তার অবদান দলকে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।



