যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার নরফোক শহরে গাড়ির উপর ব্যাপক নজরদারির অভিযোগ উঠেছে। এক অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মামলা করে জানান, মাত্র চার মাসে তার গাড়ির অবস্থান ৫২৬ বার রেকর্ড করা হয়েছে। আদালতে জমা দেওয়া নথি অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারি থেকে জুলাইয়ের মধ্যে শহরের ১৭৬টি স্বয়ংক্রিয় লাইসেন্স প্লেট রিডার (ALPR) ক্যামেরা এ তথ্য সংগ্রহ করেছে। গড়ে দিনে প্রায় চারবার তার চলাচল নথিভুক্ত করা হয়।
এই নজরদারির প্রযুক্তি পরিচালনা করছে Flock Safety নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, যারা বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে এ ধরণের সেবা প্রদানকারীদের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি শুধু পুলিশ বিভাগই নয়, বরং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও হোমওনার অ্যাসোসিয়েশনগুলোকেও সাবস্ক্রিপশন ভিত্তিতে এ সেবা দিয়ে থাকে। নরফোক সিটি কর্তৃপক্ষ ২০২৭ সাল পর্যন্ত এ ক্যামেরা ব্যবস্থার জন্য ২২ লাখ ডলারের চুক্তি করেছে।
মামলায় বলা হয়েছে, ওয়ারেন্ট ছাড়া এ ধরণের তথ্য সংগ্রহ চতুর্থ সংশোধনী (Fourth Amendment) লঙ্ঘন করে এবং নাগরিকদের মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্ণ করছে। বাদীপক্ষের আইনজীবীরা দাবি করেছেন, এসব ক্যামেরা বন্ধ করা এবং সংগৃহীত ডেটা মুছে ফেলা উচিত।
একই মামলায় আরেকজন স্বাস্থ্যকর্মীও যুক্ত হয়েছেন, যিনি আরও বেশি নজরদারির শিকার হয়েছেন। তার গাড়ির অবস্থান রেকর্ড হয়েছে ৮৪৯ বার, অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে ছয়বারের বেশি। মামলার নথিতে এমনও উল্লেখ রয়েছে, একজন চালকের গাড়ি মাত্র সাড়ে ছয় ঘণ্টায় ১৪ বার ট্র্যাক করা হয়েছে।
অন্যদিকে, Flock Safety কর্তৃপক্ষ বলছে, এসব ক্যামেরা শুধুমাত্র প্রকাশ্য সড়কে গাড়ির মুহূর্তভিত্তিক ছবি তোলে, কোনো নাগরিককে নিরবচ্ছিন্নভাবে অনুসরণ করে না। ফলে এটি অবৈধ নজরদারির মধ্যে পড়ে না।
এদিকে গোপনীয়তা রক্ষা আন্দোলনকারীরা বলছেন, ALPR প্রযুক্তি এখন কার্যত গণ-নজরদারিতে রূপ নিয়েছে। তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, সংগৃহীত এই বিপুল তথ্যভাণ্ডার অভিবাসন সংক্রান্ত তদন্তেও ব্যবহার হতে পারে।
নাগরিক অধিকারকর্মীরা মনে করছেন, এই মামলা শুধু নরফোক নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে চলমান গণ-নজরদারি বিতর্ককে নতুনভাবে সামনে নিয়ে এসেছে।