Thursday, November 20, 2025
spot_img
Homeবাংলাদেশমাদারীপুরে মহাসড়কে গাছ ফেলে ঘণ্টাব্যাপী অবরোধ, পরে স্বাভাবিক চলাচল

মাদারীপুরে মহাসড়কে গাছ ফেলে ঘণ্টাব্যাপী অবরোধ, পরে স্বাভাবিক চলাচল

মাদারীপুরে নিষিদ্ধ ঘোষিত রাজনৈতিক কর্মসূচি ‘শাটডাউন’ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে ঢাকা–বরিশাল মহাসড়কের গোপালপুর এলাকায় একদল রাজনৈতিক কর্মী ভোর থেকেই সড়ক অবরোধ করে রাখেন। রোববার সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গাছ কেটে ফেলে রাখা হয় এবং সেই সঙ্গে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করা হয়। হঠাৎ সৃষ্ট এই অবরোধের কারণে সড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং দূরপাল্লার যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকরা চরম ভোগান্তির মুখে পড়েন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভোর থেকেই উপজেলার কয়েকজন শীর্ষ রাজনৈতিক নেতা কর্মসূচির নেতৃত্ব দেন। কর্মীরা প্রথমে গোপালপুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় জড়ো হন। পরে যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে প্রায় ১০ থেকে ১২টি গাছ কেটে মহাসড়কের বিভিন্ন অংশে ফেলে রাখা হয়। ফলে মহাসড়কের দুই পাশে লম্বা যানজটের সৃষ্টি হয়। অপেক্ষায় থাকা বাস, ট্রাক, অ্যাম্বুলেন্সসহ বিভিন্ন গাড়ির যাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। বিশেষ করে দূরপাল্লার যাত্রীদের দুর্দশা ছিল সবচেয়ে বেশি, কারণ অনেকেই ভোরে যাত্রা শুরু করলেও অবরোধের কারণে আটকে পড়েন।

অবরোধকারীরা টায়ার জ্বালিয়ে স্লোগান দেন এবং মহাসড়কে একটি ভ্যান এনে সেটিকে অস্থায়ী মঞ্চে রূপান্তর করে বক্তব্য প্রদান করেন। বক্তৃতায় স্থানীয় দুই শীর্ষ পদাধিকারী বলেন, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে এবং বর্তমান সরকারের প্রতি অসন্তোষ জানাতেই এই শাটডাউন কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। একই সঙ্গে উপস্থিত নেতা–কর্মীদের কর্মসূচি সফল করার জন্য ধন্যবাদ জানান তাঁরা।

অবরোধের বিষয়টি জানার পর কালকিনি থানা পুলিশ, ডাসার থানা পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। সকালের দিকে নিরাপত্তা বাহিনী পৌঁছানোর পর কর্মীরা সরে যান বলে জানা গেছে। ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সহায়তায় মহাসড়কে ফেলে রাখা সব গাছ সরানোর কাজ শুরু হয়। গাছের আকার বড় হওয়ায় সেগুলো অপসারণে বেশ সময় লাগে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গণমাধ্যমকে জানান, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন এবং ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় কাটা গাছগুলো সরানো হয়। তিনি আরও বলেন, সকাল সাড়ে নয়টার দিকে সড়কে যান চলাচল আবার স্বাভাবিক হয়।

দীর্ঘ সময় মহাসড়ক বন্ধ থাকার বিষয়ে তিনি জানান, একাধিক বড় গাছ কেটে ফেলায় সেগুলো সরাতে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি সময় ব্যয় করতে হয়েছে। এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা হয়নি, তবে ঘটনার বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়া চলছে।

এদিকে, সড়কে আটকে পড়া যাত্রীদের অনেকে জানান, হঠাৎ এমন অবরোধের কারণে তাদের পরিকল্পিত কাজ ব্যাহত হয়েছে। কেউ কেউ চিকিৎসা, চাকরি বা ব্যক্তিগত কাজে ঢাকায় কিংবা বরিশালে যাচ্ছিলেন, কিন্তু চার ঘণ্টা ধরে আটকে থাকায় চরম অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়েছে।

যদিও অবরোধ শেষে স্বাভাবিক যান চলাচল শুরু হয়েছে, তবে স্থানীয়দের মতে, এমন ঘটনা এলাকায় স্বাভাবিক জীবনে বিশৃঙ্খলা তৈরি করে এবং যাত্রীদের নিরাপত্তাহীনতার অনুভূতি বাড়িয়ে দেয়।

সকালের এই পরিস্থিতি দেখিয়েছে, রাজনৈতিক কর্মসূচি যখন সড়কে হয়, তখন তা সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় কতটা নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments