অনেকে রোজ ব্যথা কমানোর জন্য বিভিন্ন ওষুধ খাচ্ছেন, কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে অনেকের মাথাব্যথা কমছে না, বরং বেড়েই চলেছে। বিষয়টি যে ভয়ঙ্কর হতে পারে, তা অনেকেই জানেন না। চিকিৎসাবিজ্ঞান এটিকে ‘মেডিকেশন ওভার ইউজ হেডেক’ বা ওষুধের অতিরিক্ত ব্যবহারে মাথাব্যথা বলে।
যদি কেউ তিন মাসের বেশি সময় ধরে মাসে ১৫ দিনের বেশি ব্যথার ওষুধ গ্রহণ করেন, তখন মস্তিষ্কের ব্যথা নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আসে। ফলে ওষুধ খেলে ব্যথা কমার পরিবর্তে বাড়ে, আবার ওষুধ বন্ধ করলে ব্যথা কমতে থাকে।
সাধারণত যাদের দীর্ঘদিন ধরে মাইগ্রেন বা টেনশন হেডেক থাকে এবং নিয়মিত ওষুধ গ্রহণ করছেন, তাঁদের মধ্যে এটি বেশি দেখা যায়। মেয়েদের ক্ষেত্রে এটি ছেলেদের তুলনায় বেশি। বিভিন্ন ধরনের ওষুধ এই সমস্যার কারণ হতে পারে, যেমন:
-
বারবিচুরেট জাতীয় ওষুধ: অ্যাসিটামিনোফেন বা প্যারাসিটামল ও ক্যাফেইনযুক্ত ওষুধ, সাধারণত তীব্র মাথাব্যথায় দেওয়া হয়।
-
অপিওয়েড ওষুধ: তীব্র ব্যথায় সীমিত ব্যবহৃত হয়, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহার আসক্তির ঝুঁকি বাড়ায়।
-
ট্রিপটান জাতীয় ওষুধ: যেমন সুমাট্রিপটান বা জলমিট্রিপটান, মাইগ্রেনে ব্যবহৃত হয়, বেশি ব্যবহারে মাথাব্যথা বাড়তে পারে।
যদি ওষুধ খাওয়ার কারণে মাথাব্যথা হয়, নিজে নিজে চিকিৎসা করার চেষ্টা না করে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। চিকিৎসক খুঁজে বের করবেন কোন ওষুধ থেকে সমস্যা হচ্ছে এবং ডোজ কেমন কমানো বা বিকল্প ওষুধ ব্যবহার করা যায়।
মুখ্য পরামর্শ:
-
ব্যথার জন্য ওষুধ কখনো নিজের মতো বন্ধ করবেন না।
-
কোন ধরনের মাথাব্যথা, তা জানার পরই ওষুধ গ্রহণ করুন।
-
প্রেসক্রিপশনের ডোজ ও সময়সীমা মেনে চলুন।
ইমার্জেন্সি পরিস্থিতি:
-
হঠাৎ তীব্র ব্যথা যা আগে কখনো হয়নি।
-
মাথাব্যথার সঙ্গে খিঁচুনি, অজ্ঞান হওয়া বা আচরণে পরিবর্তন।
-
কথা বলতে অসুবিধা, কোনো পাশ দুর্বল হওয়া বা দেখার সমস্যা।
-
জ্বর ও ঘাড় শক্ত হওয়া।
-
অন্তঃসত্তা বা বয়স্কদের ক্ষেত্রে দ্রুত নিকটস্থ হাসপাতালে পৌঁছানো জরুরি।
মোটকথা, মাথাব্যথা কমানোর জন্য ওষুধ গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু তা সতর্কতার সঙ্গে নেওয়া আবশ্যক।