পেরুর প্রাচীন ইনকা দুর্গ মাচু পিকচুতে স্থানীয় প্রতিবাদের কারণে শত শত পর্যটক মঙ্গলবার আটকা পড়েছেন। পেরুর পর্যটন মন্ত্রী জানিয়েছেন, যাত্রী ট্রেন সেবা স্থগিত হওয়ায় পর্যটকরা চরম সমস্যার মুখোমুখি হয়েছেন।
ট্রেন অপারেটর প্রতিষ্ঠান পেরুরেল সোমবার জানিয়েছে, কুসকো অঞ্চলের পাহাড়ি রুটে স্থানীয় বাসিন্দারা “বিভিন্ন আকারের পাথর” ফেলে প্রতিবাদ চালানোর কারণে সেবা বন্ধ করতে হয়েছে। স্থানীয়রা দাবী করছেন, পর্যটন বাস অপারেটর কনসেট্তুরের অনুমোদন মেয়াদ শেষ হওয়ার পর নতুন কোম্পানি নির্বাচনের প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতা নেই। তারা চান, এই গুরুত্বপূর্ণ শিল্পে স্থানীয় ব্যবসাগুলোও সুবিধা পাবে।
পর্যটন মন্ত্রী ডেসিলু লিওন স্থানীয় রেডিওকে জানান, সোমবার পর্যন্ত ১,৪০০ পর্যটক উদ্ধার করা হয়েছে, তবে এখনও আনুমানিক ৯০০ পর্যটক আগুয়াস কালিয়েন্টেসে আটকা আছেন। এটি মাচু পিকচুর সবচেয়ে কাছের শহর।
প্রতিবাদ শুরু হয় গত সপ্তাহে কনসেট্তুরের কনসেশন মেয়াদ শেষ হওয়ার পর। এই কোম্পানি পর্যটকদের আগুয়াস কালিয়েন্টেস থেকে ১৫শ শতকের ইনকা দুর্গের প্রবেশদ্বার পর্যন্ত পরিবহন করত। প্রতিবেশী জেলা নতুন বাস কোম্পানি নিয়োগ করার চেষ্টা করলেও, আগুয়াস কালিয়েন্টেসের প্রতিবাদীরা তাকে কার্যক্রম চালাতে বাধা দিয়েছেন।
এদিকে, পেরুরেলের স্থানীয় ইউনিট জানিয়েছে, “তৃতীয় পক্ষ” রেলপথের কিছু অংশ খুঁড়ে ফেলেছে, যার ফলে ট্র্যাকের স্থায়িত্ব ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং পর্যটক উদ্ধারের প্রক্রিয়া ধীরগতিতে চলছে।
নিউ৭ওয়ান্ডারস, একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা যা বিশ্বব্যাপী গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক স্থানগুলোকে হাইলাইট করে, একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, এই সংঘাত বৃদ্ধি পেলে মাচু পিকচুর বিশ্বনবীর মর্যাদা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। সংস্থাটি ইতিমধ্যেই পেরুর সরকারকে চিঠি পাঠিয়েছে।
২০০৭ সালে নিউ৭ওয়ান্ডারসের একটি বৈশ্বিক ভোটাভুটিতে মাচু পিকচুকে বিশ্বের অন্যতম বিস্ময় হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। এই তালিকায় ছিল চীনের গ্রেট ওয়াল, ভারতের তাজ মহল এবং মেক্সিকোর চিচেন ইৎজা।
পর্যটন বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দ্রুত এবং কার্যকর সমাধান না হলে পর্যটন শিল্পে বড় ধরনের প্রভাব পড়তে পারে। স্থানীয় প্রশাসনও এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে।