Thursday, November 20, 2025
spot_img
Homeখেলার জগৎবিশ্বকাপজয়ী ভারতের মেয়েদের জন্য একের পর এক সম্মান ও পুরস্কার ঘোষণা

বিশ্বকাপজয়ী ভারতের মেয়েদের জন্য একের পর এক সম্মান ও পুরস্কার ঘোষণা

নারী ক্রিকেট বিশ্বকাপে ইতিহাস গড়েছে ভারতের মেয়েরা। দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে তারা প্রথমবারের মতো শিরোপা জিতেছে, আর সেই জয়ের পর থেকেই একের পর এক আসছে অভিনন্দন ও পুরস্কারের বন্যা। দেশের নানা প্রান্ত থেকে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে আসছে সম্মাননা ঘোষণা, যা আরও একবার প্রমাণ করছে—এই জয় শুধু একটি দলের নয়, পুরো জাতির গর্বের প্রতীক।

বিশ্বকাপজয়ের সুবাদে ভারতীয় নারী ক্রিকেট দল পেয়েছে আইসিসির কাছ থেকে প্রায় ৪৪ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৫৪ কোটি টাকার সমান। সেই সঙ্গে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডও দলটির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে ৫১ কোটি রুপি অর্থ পুরস্কার ঘোষণা করে। এই বিপুল অর্থ পুরস্কার যেন তাদের পরিশ্রম ও আত্মত্যাগের যথাযথ স্বীকৃতি হয়ে এসেছে।

তবে এখানেই শেষ নয়। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসছে আরও অনন্য পুরস্কারের ঘোষণা। গুজরাটের একজন শিল্পপতি ও সংসদ সদস্য ভারতীয় নারী ক্রিকেটারদের জন্য ঘোষণা দিয়েছেন এক ব্যতিক্রমী উপহার। তিনি জানিয়েছেন, প্রতিটি খেলোয়াড়ের ঘরে পৌঁছে দেওয়া হবে হীরার গয়না ও সৌরবিদ্যুতের প্যানেল। এই দুই উপহার হবে তাঁদের সাফল্যের প্রতি শ্রদ্ধা ও দেশের জন্য তাঁদের অবদানের প্রতীক।

ফাইনালের আগেই এই শিল্পপতি ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের এক কর্মকর্তার কাছে চিঠি লিখে জানিয়েছিলেন, তিনি চান প্রতিটি ক্রিকেটার হাতে তৈরি প্রাকৃতিক হীরার গয়না পান। তাঁর ভাষায়, এটি হবে সেই প্রতিভা, শৃঙ্খলা ও সাহসের প্রতি সম্মান, যা মেয়েরা দেখিয়েছে মাঠে ও মাঠের বাইরে।

তাঁর দেওয়া চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, প্রতিটি খেলোয়াড়ের বাড়ির ছাদে সৌরবিদ্যুতের প্যানেল স্থাপন করা হবে—যাতে তাঁদের জীবনে আলো ছড়িয়ে যায় ঠিক সেইভাবে, যেমনভাবে তারা দেশের জন্য আলো ছড়িয়েছে বিশ্বমঞ্চে।

দাতব্য কার্যক্রমের জন্য পরিচিত এই শিল্পপতি আরও লিখেছেন, ভারতীয় নারী ক্রিকেট দল তাঁদের নিষ্ঠা ও দৃঢ়তার মাধ্যমে কোটি মানুষের হৃদয় জয় করেছে। দেশের নারীশক্তির এই সাফল্য নতুন প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।

অন্যদিকে, মধ্যপ্রদেশ সরকারও এক উদাহরণ স্থাপন করেছে। রাজ্যের এক সদস্য, ক্রান্তি গৌড়, যিনি বিশ্বকাপজয়ী দলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন, তাঁকে দেওয়া হচ্ছে এক কোটি রুপির বিশেষ পুরস্কার। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, “আমাদের রাজ্যের মেয়ে যেমন অসাধারণ খেলেছে, তেমনি পুরো ভারতীয় দল দেশকে গর্বিত করেছে।”

ছাতারপুর জেলার ঘুয়ারা গ্রামের এই তরুণী ফাইনালে বল হাতে শৃঙ্খলাপূর্ণ পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন। তিন ওভার বল করে কোনো উইকেট না পেলেও মাত্র ১৬ রান দিয়েছেন। পুরো টুর্নামেন্টে তিনি ৮ ম্যাচে ৬৩ ওভার বল করে ওভারপ্রতি ৫.৭৩ রান দিয়ে ৯টি উইকেট নিয়েছেন—যা দলের জয়ে বড় অবদান রেখেছে।

ভারতের এই ঐতিহাসিক জয়ের পর থেকে দেশের সব স্তরে যে উচ্ছ্বাস তৈরি হয়েছে, তা নারীদের প্রতি সম্মান ও বিশ্বাসের এক নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে। মাঠের পারফরম্যান্স ছাড়াও তাদের এই লড়াই এখন ভারতের নারীশক্তির প্রতীক হয়ে উঠেছে।

এই জয় শুধু একটি ট্রফি নয়—এটি একটি প্রজন্মের প্রেরণা, যা প্রমাণ করে, পরিশ্রম ও আত্মবিশ্বাস থাকলে নারীরা যেকোনো স্বপ্নকেও বাস্তবে রূপ দিতে পারে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments