বনভিত্তিক কর্মশালা, নাট্যোৎসব এবং প্যারা থিয়েটারের সমন্বয়ে গত ৮ আগস্ট শুরু হয়েছে এক দেড় মাসব্যাপী নাট্যোৎসব। এই উৎসব আয়োজন করেছে একটি স্বাধীন থিয়েটার কালেকটিভ, যা নিজস্ব সংস্কৃতির স্বকীয়তা এবং নতুন প্রজন্মের সৃজনশীল চেতনা প্রকাশের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে।
দলটি ২০১৮ সালে শুরু হয় শহীদুল জহিরের উপন্যাস অবলম্বনে একটি নাটক মঞ্চস্থ করার মাধ্যমে। শুরু থেকেই তারা মঞ্চে তুলে এনেছে সমাজ, রাজনীতি ও মানবিকতার নানা বিষয়বস্তুকে বিদ্রোহী মননের মাধ্যমে উপস্থাপন, যা বুদ্ধিবৃত্তিক এবং নান্দনিক দিক দিয়ে সমানভাবে সমৃদ্ধ। এর মধ্যে রয়েছে নাটকগুলো যেমন ৪.৪৮ মন্ত্রাস, বিস্ময়কর সবকিছু, আমি বীরাঙ্গনা বলছি এবং তবুও জেগে উঠি।
এই বছর সাত বছর পূর্ণ করেছে দলটি, আর তা উদযাপন করতে আয়োজন করা হয়েছে ‘উৎসবে স্পর্ধা: বিদ্রোহের চেতনায় দিন প্রতিদিন’ শিরোনামের এই নাট্যোৎসব। উৎসব তিনটি পর্বে বিভক্ত, যেখানে প্রতিটি পর্বে আছে প্রতিবাদী নাট্যভাষার প্রতিফলন, নতুন প্রজন্মের সৃজনশীল উন্মোচন এবং থিয়েটার চর্চার নতুন দিক অনুসন্ধান।
উৎসবের প্রথম পর্ব ‘পূর্বরঙ্গ’ মূলত পাঁচটি ভিন্নধর্মী কর্মশালার এক সমন্বয়। এই কর্মশালাগুলোতে সিনেমাটোগ্রাফি, চিত্রনাট্য, সেট ডিজাইন এবং ইনস্টলেশন আর্টের মতো বিষয় নিয়ে তরুণ সদস্যরা নিজস্ব দক্ষতা প্রদর্শন করছে।
দ্বিতীয় পর্ব ‘উত্তাল তরঙ্গ’ ৫ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হবে, যেখানে তিনটি নাটক মঞ্চস্থ হবে। বিকেল ৪টা এবং সন্ধ্যা ৭টায় স্টুডিও থিয়েটারে মঞ্চস্থ হবে ‘আমি বীরাঙ্গনা বলছি’, যা পরিচালনা করেছেন দলের অভিজ্ঞ নির্দেশক। ৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৭টা এবং ৮ সেপ্টেম্বর বিকেল ৪টা ও সন্ধ্যা ৭টায় প্রদর্শিত হবে নাটক ‘তবুও জেগে উঠি’, যা পরিচালনা করেছেন অন্য একজন অনার পরিচালক।
উৎসবের আরও একটি আকর্ষণীয় নাটক ‘বিস্ময়কর সবকিছু’, যা ব্রিটিশ নাট্যকারের নাটক অবলম্বনে মঞ্চস্থ হবে। এটি মানসিক স্বাস্থ্য এবং অন্তর্দৃষ্টি সম্পর্কিত যাত্রার চিত্র ফুটিয়ে তোলে। এই পর্বে থাকবে আরও চারটি কর্মশালা এবং একটি মুক্ত বাহাস, যেখানে থিয়েটার বিষয়ক আলোচনা ও মতবিনিময় হবে।
উৎসবের শেষ পর্ব ‘অন্তিম ভাটি’ দর্শককে থিয়েটার থেকে প্রকৃতির সঙ্গে সংযোগের অভিজ্ঞতা দেবে। এই পর্বে আয়োজন করা হয়েছে ‘ট্রেকিং অভিজ্ঞতাজাত প্যারাথিয়েটার’, যা দর্শককে নাট্যচর্চার সীমার বাইরে নিয়ে যাবে।