বার্নাব্যুতে চ্যাম্পিয়নস লিগের লড়াইয়ে রিয়াল মাদ্রিদ এবার বড় ধাক্কা খেল ম্যানচেস্টার সিটির কাছে। ম্যাচ শেষ হলো ২-১ ব্যবধানে সফরকারী দলের জয় দিয়ে, যা রিয়ালের কোচের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে।
রিয়াল মাদ্রিদ সম্প্রতি লিগে ধারাবাহিক চারটি ম্যাচে পয়েন্ট হারানোর পর চ্যাম্পিয়নস লিগেও হতাশাজনক পারফরম্যান্স দেখালো। উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের এই গুরুত্বপূর্ণ লিগ ম্যাচে রিয়ালের প্রতিরক্ষা ও আক্রমণ উভয় ক্ষেত্রেই কিছুটা দুর্বল দেখা গেছে। ম্যানচেস্টার সিটির হয়ে গোল করেছেন নিকো ও’রিলি ও আর্লিং হলান্ড। রিয়ালের একমাত্র গোলটি এসেছে রদ্রিগোর পা থেকে।
রিয়াল কোচের জন্য চাপটা শুরু হয়েছে লা লিগায় সেলতা ভিগোর কাছে হারের পর থেকে। লিগ শিরোপার দৌড়ে বার্সেলোনার সঙ্গে পিছিয়ে পড়ায় রিয়াল কোচের উপর চাপে ছিল। এবার সিটির বিপক্ষে ম্যাচের আগে এই চাপ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়ের অনুপস্থিতি। ডিফেন্ডার দানি কারভাহাল এবং আক্রমণভাগের কিলিয়ান এমবাপ্পের চোটের কারণে তাঁরা খেলতে পারেননি। এছাড়া ট্রেন্ট আলেক্সান্ডার-আর্নল্ড ও আরও একজন ডিফেন্ডারের অনুপস্থিতি রক্ষণভাগকে দুর্বল করেছে।
ম্যাচের শুরু থেকে ম্যানসিটি বলের নিয়ন্ত্রণে থাকলেও রিয়ালের প্রতিরোধ প্রতিযোগিতামূলক ছিল। ২৮ মিনিটে রিয়াল প্রথম গোলের সুযোগ পায়। জুড বেলিংহামের পাস রদ্রিগো সফলভাবে জালে পাঠান। এটি চলতি মৌসুমে তার প্রথম গোল। বিশেষ করে মার্চের পর প্রথমবারের মতো তিনি সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে গোল করেছেন ৩২ ম্যাচের মধ্যে।
তবে রদ্রিগোর গোলের সুবিধা বেশিক্ষণ ধরে রাখা যায়নি। ৩৫ মিনিটে ম্যানসিটির রায়ান চেরকির কর্নার কিকে ইয়োস্কা গাভার্দিওল হেড করেন, যা রিয়াল গোলকিপার থিবো কোর্তোয়ার নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যর্থ হন। তখন ও’রিলি সহজে বল জালে পাঠান এবং ১-১ সমতা হয়। এরপর ৮ মিনিটের মধ্যেই রিয়াল দ্বিতীয় গোল হজম করে। এই গোলের পেছনে দায় ছিল জার্মান ডিফেন্ডার অ্যান্টনিও রুডিগারের, যিনি হলান্ডকে বক্সের মধ্যে ফেলে দেন। পেনাল্টি থেকে হলান্ড গোল করেন।
প্রথমার্ধের শেষে রিয়াল আরও পিছিয়ে পড়ার সুযোগ পায়, তবে কোর্তোয়া কিছু দুর্দান্ত সেভ দেখান। দ্বিতীয়ার্ধেও রিয়ালকে বেশ কয়েকবার বাঁচান তিনি। বিশেষ করে ৫২ মিনিটে চেরকি ও ৬১ মিনিটে জেরেমি ডকুর শটকে সেভ করেন কোর্তোয়া। মোট ম্যাচে তিনি ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ সেভ করেছেন।
সিটির গোলকিপার জিয়ানলুইজি দোন্নারুম্মা কম পরীক্ষায় পড়লেও ৮৫ মিনিটে এনদ্রিকের হেড প্রতিহত করতে ব্যর্থ হলে রিয়াল সমতা পেত। ম্যাচের শেষ দিকে রিয়ালের কিছু আক্রমণ দেখা গেল, তবে সিটির রক্ষণভাগ তাদের সফল হতে দেয়নি। সিটি কোচ পেপ গার্দিওলা রুডিগারের লাল কার্ড চেয়ে আবেদন করেন এবং হলুদ কার্ড পান।
শেষ পর্যন্ত প্রথমার্ধের ২-১ ব্যবধানই রয়ে গেল এবং ম্যানচেস্টার সিটি বার্নাব্যু থেকে ৩ পয়েন্ট নিয়ে চলে যায়। এই জয় তাদের ৬ ম্যাচে ১৩ পয়েন্টে তুলে দিয়েছে এবং সিটি এখন লিগে ৪ নম্বরে অবস্থান করছে। সমান ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে রিয়াল ৭ নম্বরে রয়েছে।



