Sunday, October 5, 2025
spot_img
Homeবিশেষ প্রতিবেদনফৌজদারি অভিযোগের মুখে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক এফবিআই প্রধান

ফৌজদারি অভিযোগের মুখে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক এফবিআই প্রধান

যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ সাবেক কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো (এফবিআই) প্রধানের বিরুদ্ধে গুরুতর ফৌজদারি অভিযোগ এনেছে। বৃহস্পতিবার এ সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর দেশজুড়ে শুরু হয়েছে ব্যাপক আলোচনা।

অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে মিথ্যা বিবৃতি প্রদান ও কংগ্রেসের তদন্ত কার্যক্রমে ইচ্ছাকৃতভাবে বাধা সৃষ্টি। আইনি বিশেষজ্ঞদের মতে, এসব অভিযোগ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে তাঁর।

এফবিআইয়ের সাবেক এ প্রধান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত এক ভিডিওবার্তায় নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন। সেখানে তিনি জানান, বিচার বিভাগের এমন পদক্ষেপে তিনি মর্মাহত হলেও যুক্তরাষ্ট্রের বিচার ব্যবস্থার প্রতি তাঁর পূর্ণ আস্থা রয়েছে। একই সঙ্গে তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করে সুষ্ঠু বিচার প্রক্রিয়ার ওপর আস্থা রাখার আহ্বান জানান।

রাজনৈতিক অঙ্গনে এ ঘটনাকে দেখা হচ্ছে তৎকালীন মার্কিন প্রশাসনের প্রতিপক্ষ দমনের কৌশল হিসেবে। দীর্ঘদিন ধরেই দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের জেলে পাঠানোর ঘোষণা দিয়ে আসছিলেন। অবশেষে তাঁর প্রশাসন প্রথমবারের মতো বিচার বিভাগের মাধ্যমে বাস্তবে এমন পদক্ষেপ নিল।

এ ঘটনাকে ঘিরে আরও কিছু বিতর্ক সামনে এসেছে। জানা গেছে, সাবেক এফবিআই প্রধানের মামলায় দায়িত্বপ্রাপ্ত এক ফেডারেল আইনজীবী সম্প্রতি পদত্যাগ করেছেন। কারণ হিসেবে জানা যায়, তিনি মামলার প্রমাণের শক্তি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন, যা প্রেসিডেন্টের ক্ষোভ ডেকে আনে। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আইনজীবীর সহকর্মীরাও মন্তব্য করেছেন, অভিযোগ প্রমাণের মতো যথেষ্ট উপাদান এ মামলায় নেই।

শুধু সাবেক এফবিআই প্রধান নন, প্রশাসনের অন্য সমালোচকরাও বর্তমানে আইনি ঝুঁকিতে আছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত কার্যক্রম চলছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র। এর মধ্যে রয়েছেন নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের শীর্ষ আইন কর্মকর্তা এবং সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা। সমালোচকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক চাপমুক্ত রাখার যে ঐতিহ্য, তা বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে।

সাবেক প্রেসিডেন্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে অভিযোগ দায়েরকে “যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ন্যায়বিচার” হিসেবে অভিহিত করেন। একই সঙ্গে তিনি অভিযোগ আনেন যে সাবেক এফবিআই প্রধান দীর্ঘ সময় ধরে দেশটির ক্ষতি করেছেন।

উল্লেখ্য, সাবেক প্রেসিডেন্ট তাঁর প্রথম মেয়াদের শুরুর দিকে এফবিআই প্রধানকে বরখাস্ত করেছিলেন। এরপর থেকে তিনি নিয়মিতভাবে এফবিআইয়ের তদন্ত কার্যক্রমের সমালোচনা করে আসছেন। বিশেষত, ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিদেশি শক্তির প্রভাব খাটানো বিষয়ক তদন্ত ছিল তাঁর সমালোচনার কেন্দ্রে।

বর্তমান অভিযোগ অনুযায়ী, ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে সিনেটের এক শুনানিতে সাবেক এফবিআই প্রধান দাবি করেছিলেন, তিনি কোনো কর্মকর্তাকে গণমাধ্যমে তথ্য ফাঁসের অনুমতি দেননি। পরে আইনজীবীরা জানান, এই বক্তব্য মিথ্যা ছিল। একই সঙ্গে শুনানিতে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গোপন রেখে আইন প্রণয়নের কাজ ব্যাহত করার অভিযোগও তাঁর বিরুদ্ধে আনা হয়েছে।

সর্বশেষ এই ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের বিচারব্যবস্থা, প্রশাসনিক নীতিমালা ও রাজনৈতিক সংস্কৃতির ওপর নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। সমালোচকরা মনে করছেন, রাজনৈতিক প্রতিশোধ ও ক্ষমতার অপব্যবহারই এর মূল কারণ। অন্যদিকে, সমর্থকরা বলছেন, ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতেই এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments