সেপ্টেম্বর ২০২৫–এর বৈঠকে ফেডারেল রিজার্ভ এ বছরের প্রথমবারের মতো সুদের হার কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ফেডের লক্ষ্য সুদের হারের নিম্ন সীমা দাঁড়িয়েছে ৪ শতাংশে। সেপ্টেম্বর ১৭ তারিখে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কিছুটা মন্থর হয়েছে। চাকরির সংখ্যা কমেছে, বেকারত্ব কিছুটা বেড়েছে যদিও এখনো তা নিম্ন পর্যায়ে রয়েছে। অন্যদিকে, মূল্যস্ফীতি বেড়ে কিছুটা উচ্চ মাত্রায় স্থিত হয়েছে।
প্রশ্ন হচ্ছে, এই ধরনের সিদ্ধান্ত গৃহমালিক বা সম্ভাব্য ক্রেতাদের জন্য কী অর্থ বহন করে? বিশেষজ্ঞদের মতে, মর্টগেজ বাজার সরাসরি ফেডের ঘোষিত সুদের হারের ওপর নির্ভর করে না, বরং একই অর্থনৈতিক পরিস্থিতির সঙ্গে সাড়া দেয় যেটা ফেডকে সুদের হারে পরিবর্তন আনতে প্রভাবিত করে। ফেডারেল ফান্ডস রেট নির্ধারণের মাধ্যমে ফেড ব্যাংকগুলোর স্বল্পমেয়াদি ঋণের ওপর প্রভাব ফেলে। আর সেখান থেকেই ব্যাংকগুলো তাদের প্রাইম রেট ঠিক করে, যা মর্টগেজ, নির্মাণ ঋণ কিংবা হোম ইক্যুইটি ফাইন্যান্সিংয়ের খরচ বাড়াতে বা কমাতে ভূমিকা রাখে।
স্থায়ী সুদে মর্টগেজ নিলে ফেডের সিদ্ধান্তে তেমন প্রভাব পড়ে না। কিন্তু যারা নতুন স্থায়ী মর্টগেজ নিতে চান বা অ্যাডজাস্টেবল রেট মর্টগেজ (ARM) নিয়েছেন, তাদের ক্ষেত্রে পরিবর্তনের প্রভাব স্পষ্ট হতে পারে। কারণ অধিকাংশ ARM সুদের হার সরাসরি ফেডের নীতির সঙ্গে ওঠানামা করে।
একইভাবে, হোম ইক্যুইটি লাইনে (HELOC) সাধারণত ভ্যারিয়েবল সুদ প্রযোজ্য হয়, তাই ফেড সুদের হার বাড়ালে এর খরচও বাড়তে পারে। তবে হোম ইক্যুইটি লোন সাধারণত নির্দিষ্ট সুদের হারে দেওয়া হয়, ফলে পুরোনো ঋণে কোনো পরিবর্তন হবে না। নতুন লোন নিতে গেলে অবশ্য উচ্চ সুদের কারণে ব্যয় বাড়তে পারে।
ভবিষ্যতে মর্টগেজ হারের গতিপ্রকৃতি নির্ভর করবে বাজার পরিস্থিতি, বিনিয়োগকারীদের মনোভাব এবং মর্টগেজ-সমর্থিত সিকিউরিটিজ (MBS) কেনাবেচার ওপর। অর্থনীতি শক্তিশালী হলে বিনিয়োগকারীরা ঝুঁকিপূর্ণ খাতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হয়, ফলে মর্টগেজ হারে চাপ বাড়ে। বিপরীতে, দুর্বল অর্থনীতিতে নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে MBS–এর চাহিদা বাড়ে, আর এতে মর্টগেজ হার কমতে পারে।
তবে উচ্চ সুদের সময়েও সাশ্রয়ী মর্টগেজ পাওয়ার কিছু উপায় রয়েছে। যেমন— একাধিক ঋণদাতার প্রস্তাব তুলনা করা, ক্রেডিট স্কোর উন্নত করা, বেশি ডাউন পেমেন্ট দেওয়া অথবা সুদ কমানোর জন্য ডিসকাউন্ট পয়েন্ট কেনা। এসব কৌশল সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারলে মর্টগেজ খরচ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।