Thursday, November 20, 2025
spot_img
Homeবাংলাদেশফার্মগেটে মেট্রোরেল পিলার থেকে বিয়ারিং প্যাড পড়ে এক পথচারীর মৃত্যু, চলাচল স্থগিত

ফার্মগেটে মেট্রোরেল পিলার থেকে বিয়ারিং প্যাড পড়ে এক পথচারীর মৃত্যু, চলাচল স্থগিত

রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় মেট্রোরেলের একটি পিলার থেকে বিয়ারিং প্যাড খুলে নিচে পড়ে এক পথচারীর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনার পর নিরাপত্তার স্বার্থে পুরো মেট্রোরেল চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।

রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে দুর্ঘটনাটি ঘটে। নিহত ব্যক্তির নাম আবুল কালাম (৩৫), বাড়ি শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলায়। তিনি পেশায় একটি ট্রাভেল এজেন্সির কর্মী ছিলেন এবং পরিবার নিয়ে নারায়ণগঞ্জের পাঠানটুলি এলাকায় বসবাস করতেন।

দুর্ঘটনার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে। নিহত ব্যক্তির সঙ্গে থাকা একটি পাসপোর্টের মাধ্যমে তাঁর পরিচয় নিশ্চিত করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।

ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) জানায়, ফার্মগেটে এ দুর্ঘটনার পর দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল চলাচল সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়। নিরাপত্তা পরীক্ষা সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত ট্রেন চলাচল চালু হবে না বলে সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

এর আগে গত বছর সেপ্টেম্বরে একই এলাকায় মেট্রোরেলের একটি বিয়ারিং প্যাড খুলে নিচে পড়ে যায়। তখনও এ নিয়ে বিশেষজ্ঞ ও সংশ্লিষ্ট মহলে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দেয়। এবারে একই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটায় বিষয়টি আবারও আলোচনায় এসেছে।

বিয়ারিং প্যাড মূলত রাবারের তৈরি ভারী বস্তু, যা উড়ালপথের পিলারের সঙ্গে সংযুক্ত থাকে। প্রতিটির ওজন প্রায় ১৪০ থেকে ১৫০ কেজির মধ্যে। এই প্যাডগুলো উড়ালপথের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এগুলো খুলে পড়লে উড়ালপথ স্থানচ্যুত হওয়ার বা দেবে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।

নিহত আবুল কালামের পরিবারের সদস্য আরিফ হোসেন সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে উপস্থিত হয়ে জানান, দুপুরে একটি অচেনা নম্বর থেকে ফোন আসে—যেখানে বলা হয়, আবুল কালাম গুরুতর দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন এবং হাসপাতালে আসতে হবে। পরে হাসপাতালে গিয়ে তিনি মৃত্যুর খবর পান।

তিনি আরও জানান, আবুল কালামের বাবা-মা কেউ জীবিত নেই। তাঁর স্ত্রী এবং দুই সন্তান রয়েছে। চাকরির প্রয়োজনে ঢাকায় ট্রাভেল এজেন্সির কাজে এসেছিলেন তিনি।

একই ধরনের দুর্ঘটনা এক বছরের ব্যবধানে দ্বিতীয়বার ঘটায় নাগরিকদের মধ্যে মেট্রোরেল নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যবস্থার নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ এবং কাঠামোগত পর্যালোচনা আরও জোরদার করা জরুরি।

বর্তমানে দুর্ঘটনাস্থলে তদন্ত চলছে এবং কর্তৃপক্ষ বিয়ারিং প্যাডটি কেন খুলে পড়ল, তা নির্ধারণে কাজ করছে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments