Thursday, November 20, 2025
spot_img
Homeবাংলাদেশপ্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিল ‘মোন্থা’: কবে নামবে বৃষ্টি বাংলাদেশে?

প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিল ‘মোন্থা’: কবে নামবে বৃষ্টি বাংলাদেশে?

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’ ধীরে ধীরে শক্তি সঞ্চয় করে এখন প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। এই ঘূর্ণিঝড় আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা বা রাতের দিকে ভারতের অন্ধ্র প্রদেশ উপকূলে আঘাত হানতে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর আজ সকালে বিশেষ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই তথ্য জানিয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ বুলেটিন অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড়টি বর্তমানে পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এবং এর আশপাশের এলাকায় অবস্থান করছে। মঙ্গলবার সকাল ৬টার হিসাব অনুযায়ী, এটি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে প্রায় ১,২৯০ কিলোমিটার, কক্সবাজার থেকে ১,২৫০ কিলোমিটার, মোংলা থেকে ১,১৪০ কিলোমিটার এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১,১৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল।

আবহাওয়াবিদদের ধারণা, ‘মোন্থা’ আজ সন্ধ্যা বা রাত নাগাদ স্থলভাগে অতিক্রম করবে, এবং তখন এর গতিপথ ও প্রভাব আরও স্পষ্ট হয়ে উঠবে।

প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্র থেকে ৬৪ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় প্রায় ৯০ কিলোমিটার। মাঝে মাঝে ঝোড়ো হাওয়ার দমকে এই গতি ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত পৌঁছাচ্ছে। এর ফলে বঙ্গোপসাগরের সাগরপৃষ্ঠ এখন বেশ উত্তাল অবস্থায় রয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে উত্তর বঙ্গোপসাগরে থাকা সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি অবস্থান করতে এবং গভীর সাগরে না যেতে বলা হয়েছে।

বাংলাদেশে এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব সম্পর্কে জানতে যোগাযোগ করলে আবহাওয়ার কর্মকর্তারা জানান, ঘূর্ণিঝড়টি স্থলভাগে আঘাত করার পরই এর প্রকৃত প্রভাব নির্ধারণ করা সম্ভব হবে। এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে উল্লেখযোগ্য বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। তবে বুধবার থেকে কিছু এলাকায় হালকা বৃষ্টি হতে পারে, আর বৃহস্পতিবার ও শুক্রবারে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে বাতাসের গতি সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং আকাশ আংশিক মেঘলা থাকতে পারে। তবে এখনই বড় ধরনের ঝুঁকির আশঙ্কা নেই।

বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিটি ঘূর্ণিঝড়ের গতিপথ ও প্রভাব নির্ভর করে এটি কখন, কোন এলাকায় এবং কীভাবে স্থলভাগে আঘাত হানে তার ওপর। তাই আপাতত সতর্ক থাকা এবং আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরবর্তী নির্দেশনা অনুসরণ করাই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ হবে।

উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, ঘূর্ণিঝড়টির নাম ‘মোন্থা’ দেওয়া হয়েছে থাইল্যান্ডের পক্ষ থেকে। শব্দটির অর্থ ‘সুগন্ধি ফুল’।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসেবে ঘূর্ণিঝড় সবসময় অনিশ্চয়তার মধ্যেই থাকে। তাই উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষকে সবসময় প্রস্তুত থাকতে এবং জরুরি প্রয়োজনে স্থানীয় প্রশাসনের নির্দেশনা মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

এই মুহূর্তে ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’ বঙ্গোপসাগরের উপর সক্রিয় থাকলেও এর গতিপ্রকৃতি পরিবর্তনশীল হতে পারে। তাই সর্বশেষ আপডেট জানতে আবহাওয়া অধিদপ্তরের নিয়মিত বুলেটিন অনুসরণ করা জরুরি।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments