যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চলের একটি শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয় হঠাৎ করেই বৈচিত্র্য, সমতা ও অন্তর্ভুক্তি (DEI) কার্যক্রম বাতিলের ঘোষণা দিয়েছে। এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক ও মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট দায়িত্ব নেওয়ার তিন দিনের মাথায় এক ঘোষণায় জানান, নতুন ফেডারেল আইন অনুযায়ী উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে DEI অফিস ও কার্যক্রম চালু রাখা যাবে না। তাই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়ে এই কর্মসূচি বন্ধ করছে।
এ ঘোষণায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন অনেক প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও নাগরিক অধিকারকর্মী। তাদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়টির ঐতিহাসিক অবস্থান ও প্রগতিশীল সুনামের সঙ্গে এই সিদ্ধান্ত সাংঘর্ষিক। বিশেষ করে যারা DEI-এর মাধ্যমে শিক্ষায় সুযোগ পেয়েছেন ও বহুসংস্কৃতিক পরিবেশে বড় হয়েছেন, তাদের কাছে এই পদক্ষেপ ছিল আঘাতের মতো।
একাধিক প্রাক্তন শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, তারা আশা করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়টি আইনগত লড়াইয়ের মাধ্যমে হলেও এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবে। অনেকের মতে, এটি “প্রতিরোধের আগেই আত্মসমর্পণ” করার মতো। সমালোচকরা আরও বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপুল আর্থিক সংস্থান থাকা সত্ত্বেও লড়াই না করে নতি স্বীকার করা হতাশাজনক।
অন্যদিকে, একদল প্রভাবশালী কৃষ্ণাঙ্গ প্রাক্তন শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্টের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তাদের বক্তব্য, তিনি নতুন দায়িত্ব নিয়েছেন, তাই আইন মানা ছাড়া তার হাতে অন্য কোনো বিকল্প নেই। বরং এখন প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের দায়িত্ব হলো শিক্ষার্থী ও প্রতিষ্ঠানকে সহায়তা করা। তারা অতীতে বৃত্তি ও সহায়তা তহবিল গড়ে তুলেছিলেন, যা দিয়ে কৃষ্ণাঙ্গ শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানো হয়েছে। তাদের মতে, আবারও সেই উদ্যোগকে জোরদার করা জরুরি।
এদিকে, বর্তমান শিক্ষার্থীদের মধ্যেও দেখা দিয়েছে উদ্বেগ ও ক্ষোভ। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা মনে করছেন, DEI বাতিল হওয়ায় নতুন শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা তৈরি হবে। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, অন্তর্ভুক্তিমূলক পরিবেশ হারালে ভবিষ্যতে ভর্তি নেয়ার সিদ্ধান্তে প্রভাব পড়তে পারে।
এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে এখনো বিতর্ক চলছেই। কেউ মনে করছেন বিশ্ববিদ্যালয়টি পরিস্থিতির শিকার, আবার অনেকে মনে করছেন তারা সুযোগ থাকা সত্ত্বেও লড়াই থেকে সরে দাঁড়িয়েছে। তবে এতকিছুর মধ্যেও প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে—এই সিদ্ধান্ত প্রতিষ্ঠানটির প্রগতিশীল ভাবমূর্তি ও বহুসাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সঙ্গে কতটা সামঞ্জস্যপূর্ণ?