Sunday, October 5, 2025
spot_img
Homeসম্পাদকীয়পোর্টল্যান্ডে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন নিয়ে ওরেগন অঙ্গরাজ্যের মামলা

পোর্টল্যান্ডে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন নিয়ে ওরেগন অঙ্গরাজ্যের মামলা

যুক্তরাষ্ট্রের ওরেগন অঙ্গরাজ্য এবং পোর্টল্যান্ড শহর যৌথভাবে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। তাদের দাবি, শহরে ন্যাশনাল গার্ড সদস্যদের মোতায়েন করা অবৈধ এবং এটি অবিলম্বে বন্ধ করা প্রয়োজন।

ফেডারেল আদালতে দাখিল করা এই মামলায় প্রেসিডেন্টসহ প্রতিরক্ষা দপ্তর এবং স্বরাষ্ট্র দপ্তরের শীর্ষ কর্মকর্তাদের আসামি করা হয়েছে। মামলার মূল বক্তব্য হলো, পোর্টল্যান্ডে শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি বিরাজ করছে এবং সাম্প্রতিক সময়ে কেবলমাত্র সীমিত কিছু বিক্ষোভ দেখা গেছে। তাই ন্যাশনাল গার্ড পাঠানোর কোনো যৌক্তিক কারণ নেই।

কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, প্রেসিডেন্টের হাতে এই পদক্ষেপ নেওয়ার বৈধ ক্ষমতা রয়েছে এবং এর উদ্দেশ্য হলো ফেডারেল স্থাপনা ও কর্মকর্তাদের সুরক্ষা দেওয়া। তাদের বক্তব্য, গত কয়েক মাস ধরে সহিংস বিক্ষোভকারীরা কর্মকর্তাদের আক্রমণ ও হয়রানির চেষ্টা করেছে, তাই এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।

অন্যদিকে, পেন্টাগনের পক্ষ থেকে চলমান মামলার কারণে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানানো হয়েছে। স্বরাষ্ট্র দপ্তরের পক্ষ থেকেও তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

রাজ্য প্রশাসনের বক্তব্য, প্রেসিডেন্ট সামরিক বাহিনী মোতায়েনের মাধ্যমে রাজ্যের জনগণের নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্যে ফেলছেন এবং এটি রাজ্যের সাংবিধানিক ক্ষমতার ওপর হস্তক্ষেপ। গভর্নরের ভাষায়, “আমাদের অঙ্গরাজ্যে এমন কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি যেখানে সেনা মোতায়েনের প্রয়োজন পড়বে। তবুও কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের স্বশাসন ও জনগণের নিরাপত্তা উপেক্ষা করছে।”

পোর্টল্যান্ড পুলিশের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি বছরে অপরাধের সংখ্যা গত বছরের প্রায় সমান। তবে হত্যাকাণ্ডের হার ৫০ শতাংশ কমেছে এবং গুরুতর হামলার ঘটনা ৪ শতাংশ কমেছে। অন্যদিকে, সাধারণ হামলার হার বেড়েছে ৮ শতাংশ।

মামলায় আরও বলা হয়েছে, প্রতিরক্ষা দপ্তরের পক্ষ থেকে এক নির্দেশনায় ২০০ ন্যাশনাল গার্ড সদস্যকে ফেডারেল দায়িত্বে নেওয়া হয়েছে। গভর্নর জানিয়েছেন, এই সিদ্ধান্তের ফলে তার নিয়ন্ত্রণ থেকে গার্ড বাহিনীকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, এবং কবে মোতায়েন করা হবে বা তারা অস্ত্রধারী থাকবে কিনা সে বিষয়ে কোনো তথ্য রাজ্যকে জানানো হয়নি।

আইনজীবীরা বলছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের ১০ম সংশোধনী লঙ্ঘন করেছে, কারণ রাজ্যের নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা রাজ্যের নিজস্ব ক্ষমতার মধ্যে পড়ে। এছাড়া, আদালতের আগের এক রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ‘পসি কমিটাটাস অ্যাক্ট’ অনুযায়ী সেনাবাহিনীকে দেশীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য ব্যবহার করা যায় না।

প্রেসিডেন্ট সম্প্রতি ঘোষণা দিয়েছেন, পোর্টল্যান্ডে ফেডারেল স্থাপনাগুলো নাকি সন্ত্রাসী আক্রমণের মুখে রয়েছে, তাই “প্রয়োজনীয় সংখ্যক বাহিনী” পাঠানো হবে। তিনি শহরটিকে “যুদ্ধ বিধ্বস্ত” হিসেবেও আখ্যা দিয়েছেন। তবে ওরেগনের গভর্নর এ দাবি প্রত্যাখ্যান করে জানিয়েছেন, শহরে এমন পরিস্থিতি নেই।

এদিকে, প্রেসিডেন্ট ইতোমধ্যেই একাধিক ডেমোক্র্যাট-নেতৃত্বাধীন শহরে ন্যাশনাল গার্ড পাঠানোর হুমকি দিয়েছেন। শিকাগো, বাল্টিমোর, নিউ অরলিন্স এবং ওয়াশিংটন ডিসিতে তিনি আগেও গার্ড মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন। সম্প্রতি টেনেসির মেমফিসে বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করেছেন, যা স্থানীয় রিপাবলিকান গভর্নরের সমর্থন পেয়েছে।

মোটের ওপর, এই মামলার মাধ্যমে ওরেগন অঙ্গরাজ্য ও পোর্টল্যান্ড শহর কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করেছে। এখন আদালতের রায়ের ওপর নির্ভর করছে, রাজ্যের সাংবিধানিক অধিকার এবং কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতার সীমারেখা কোথায় দাঁড়াবে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments