যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় সম্প্রতি এক সাইবার হামলার ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছে, কিছু আক্রমণাত্মক ইমেইল আলামনিদের কাছে প্রেরিত হওয়ায় তারা ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (FBI)-কে বিষয়টি জানিয়েছে। এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের “নির্বাচিত তথ্য ব্যবস্থা” প্রভাবিত হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তারা আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং অন্যান্য প্রযুক্তিগত সংস্থা ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কাজ করছে যাতে সমস্যা দ্রুত সমাধান করা যায়। FBI এখনও এই বিষয়ে মন্তব্য দেয়নি।
গত শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজিত ইমেইল একত্রিত করে পাঠানো হয়েছিল, যা রিভিউ করা হয়েছে। ইমেইলগুলোতে দেখা যায়, কেউ বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘এলিটিস্ট’, ‘ওয়েক’, এবং ‘সম্পূর্ণ অমেধাবী’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে এবং আরও কড়া ও নেতিবাচক ভাষায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টাফ এবং শিক্ষার্থীদের বর্ণনা করেছে।
সাইবার নিরাপত্তা কেন্দ্রিক ওয়েবসাইট Bleeping Computer জানিয়েছে, এক অজ্ঞাত ব্যক্তি বা গ্রুপ যাকে তারা হ্যাকার হিসেবে চিহ্নিত করেছে, তিনি দাবি করেছেন যে এই হ্যাকিংয়ে প্রায় ১.২ মিলিয়ন পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের দাতাদের তথ্য ফাঁস হয়েছে। তবে স্বাধীনভাবে এই দাবি যাচাই করা যায়নি এবং হ্যাকার বা হ্যাকারদের সঠিক পরিচয় পাওয়া যায়নি।
উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো প্রায়ই গুপ্তচর ও সাইবার অপরাধীদের জন্য টার্গেট হিসেবে দেখা যায়। সম্প্রতি একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় হিটলারের সমর্থক এক হ্যাকার দ্বারা আক্রমণের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনা উল্লেখযোগ্য, যেখানে আক্রমণের ফলে নিউ ইয়র্কের মেয়র প্রার্থী এক ব্যক্তির কলেজের আবেদন সংক্রান্ত তথ্য ফাঁস হয়ে গিয়েছিল।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, তারা ডেটা সুরক্ষার জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে এবং প্রভাবিত ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। আক্রমণাত্মক ইমেইলের প্রেক্ষাপটে তারা ইতিমধ্যেই FBI এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় শুরু করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারা আরও বলেছেন যে, এই ধরনের সাইবার আক্রমণ শুধু তথ্য ফাঁস করার বিষয় নয়, বরং প্রতিষ্ঠান এবং এর শিক্ষার্থীদের সুনাম ও নিরাপত্তার জন্যও হুমকি তৈরি করে। তারা সকল শিক্ষার্থী এবং দাতাদের সতর্ক থাকার জন্য অনুরোধ করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইবার নিরাপত্তা টিম বলেছে, তারা তৎপর হয়ে ঘটনার উৎস খুঁজছে এবং ভবিষ্যতে এমন ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করতে সব প্রযুক্তিগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। পাশাপাশি, আক্রমণের প্রভাবিত ব্যক্তিদের জন্য নির্দিষ্ট সমাধানমূলক পরামর্শও প্রদান করা হচ্ছে।
এই ঘটনা প্রমাণ করে যে, আধুনিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো কেবল শিক্ষার জন্যই নয়, বরং সাইবার নিরাপত্তার ঝুঁকির সম্মুখীনও। প্রতিনিয়ত বাড়তে থাকা সাইবার হুমকি এবং হ্যাকারদের উৎকৃষ্ট প্রযুক্তিগত কৌশল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য এক বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।



