Thursday, November 20, 2025
spot_img
Homeপ্রযুক্তি জগৎপৃথিবীর দিকে আসছে রহস্যময় মহাজাগতিক বস্তু, ইলন মাস্কের দ্বিধাদ্বন্দ্ব

পৃথিবীর দিকে আসছে রহস্যময় মহাজাগতিক বস্তু, ইলন মাস্কের দ্বিধাদ্বন্দ্ব

গত জুলাই মাসে মহাকাশ বিজ্ঞানীদের মধ্যে নতুন এক রহস্যময় ঘটনা সৃষ্টি হয়েছে। সৌরজগতের মধ্য দিয়ে ধেয়ে আসা ‘৩আই/অ্যাটলাস’ নামের একটি আন্তনাক্ষত্রিক বস্তু সম্প্রতি শনাক্ত করা হয়েছে। এটি এমন আচরণ করছে যা বিজ্ঞানীরা আগে কখনো লক্ষ্য করেননি। কিছু বিজ্ঞানী মনে করছেন এটি একটি ধূমকেতু, আবার অনেকে ধারণা করছেন এটি ভিনগ্রহ থেকে আসা কোনো মহাকাশযান।

যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা এই বস্তুটির উৎস বা প্রকৃতি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করতে পারেনি, তবে তারা বলেছে, এটি পৃথিবীর জন্য কোনো সরাসরি হুমকি নয়। তবু এই বিশাল আকারের অতিদ্রুতগামী মহাজাগতিক বস্তুটির অস্বাভাবিক রাসায়নিক নিঃসরণ বিজ্ঞানীদের মধ্যে নানা প্রশ্ন উত্থাপন করেছে। বিশেষত এর নিঃসৃত উপাদানগুলি প্রচলিত বৈজ্ঞানিক ধারণার সঙ্গে মেলে না। অনেক বিজ্ঞানী মনে করছেন, ৩আই/অ্যাটলাস কৃত্রিম কোনো উৎস থেকে তৈরি হতে পারে।

এই বিতর্কের মাঝে সম্প্রতি নাম লেখিয়েছেন মহাকাশ সংস্থা স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইলন মাস্ক। জনপ্রিয় পডকাস্ট শো ‘দ্য জো রোগান এক্সপেরিয়েন্স’-এ ইলন মাস্ক এই রহস্যময় বস্তু সম্পর্কে নিজের মতামত প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “যদি এটি সম্পূর্ণ নিকেল দিয়ে তৈরি হয়, তবে এটি একটি অত্যন্ত ভারী মহাকাশযান হবে। এমন একটি যান যা একটি পুরো মহাদেশকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে সক্ষম। এর চেয়েও বড় ধরণের ক্ষতি ঘটানো সম্ভব।” তিনি আরও বলেন, “ভিনগ্রহ থেকে কোনো প্রমাণ হাতে এলে আমি সরাসরি তা প্রকাশ করব।”

অভি লোব নামের একজন খ্যাতনামা জ্যোতির্বিজ্ঞানী যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দাবি করেছেন, এই বস্তুটি পৃথিবীর ওপর নজরদারি চালানোর উদ্দেশ্যে পাঠানো হতে পারে। বস্তুটির লেজের অংশ প্রতি সেকেন্ডে প্রায় চার গ্রাম নিকেল নিঃসরণ করছে, যদিও এর মধ্যে কোনো লোহার উপস্থিতি নেই। ধূমকেতুর ক্ষেত্রে এমন আচরণ আগে কখনো দেখা যায়নি।

পডকাস্টে জো রোগান আলোচনায় জোর দেন, ধূমকেতুর রহস্যময় বৈশিষ্ট্যগুলির ওপর। তিনি বলেন, ধূমকেতুর গ্যাসের মেঘে সাধারণত নিকেলের উপস্থিতি থাকে। নিকেল পৃথিবীর শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহৃত সংকর ধাতুর একটি প্রধান উপাদান। অন্যদিকে ইলন মাস্ক নিকেলের উপস্থিতিকে পার্থিব ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি জানান, অনেক ধূমকেতু ও গ্রহাণু প্রাথমিকভাবে নিকেল দিয়ে তৈরি। পৃথিবীতে যেখানে নিকেলখনি পাওয়া যায়, সেগুলোতে অতীতে নিকেলসমৃদ্ধ কোনো গ্রহাণু বা ধূমকেতু আঘাত করেছিল।

বিজ্ঞানীরা এই রহস্যময় বস্তুটির আচরণ বিশ্লেষণ করছেন এবং এর উৎস ও প্রকৃতি বোঝার চেষ্টা করছেন। যদিও এটি সরাসরি কোনো হুমকি নয়, তবে মহাকাশ গবেষণার জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বস্তুটির বৈশিষ্ট্য নতুন প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে, বিশেষ করে মহাজাগতিক উপাদানের সংমিশ্রণ ও কৃত্রিম উৎসের সম্ভাবনা নিয়ে।

বিশ্বজুড়ে বিজ্ঞানীদের নজর এখন এই ‘৩আই/অ্যাটলাস’-এর দিকে, এবং মহাকাশ গবেষণার আগ্রহী ব্যক্তিরা অপেক্ষা করছেন পরবর্তী তথ্যের জন্য। এই বস্তুটি আমাদের সৌরজগতের রহস্যকে আরও গভীরভাবে বোঝার একটি নতুন দিক খুলে দিয়েছে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments