Sunday, October 5, 2025
spot_img
Homeআন্তর্জাতিকপশ্চিমা বিশ্বকে কঠোর জবাবের হুঁশিয়ারি দিল রাশিয়া

পশ্চিমা বিশ্বকে কঠোর জবাবের হুঁশিয়ারি দিল রাশিয়া

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে দেওয়া এক ভাষণে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পশ্চিমা বিশ্বকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি স্পষ্ট করে জানান, মস্কোর বিরুদ্ধে কোনো ধরনের আগ্রাসন চালানো হলে এর জবাব কঠোরভাবে দেওয়া হবে।

ভাষণে তিনি সতর্ক করে বলেন, রাশিয়ার আকাশসীমায় কোনো উড়োজাহাজ ভূপাতিত করার চেষ্টা হলে এর পরিণতি ভয়াবহ হবে। তিনি অভিযোগ করেন, ইউরোপের একটি প্রভাবশালী দেশ যুদ্ধের ভঙ্গিমায় বক্তব্য দিচ্ছে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।

সাম্প্রতিক সময়ে ইউক্রেন যুদ্ধ চলমান থাকার পাশাপাশি ন্যাটোর পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্তে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। এস্তোনিয়ার দাবি, রাশিয়া তাদের আকাশসীমায় তিনটি যুদ্ধবিমান পাঠিয়েছে। অন্যদিকে পোল্যান্ডের আকাশে ন্যাটোর যুদ্ধবিমান একটি রুশ ড্রোন ভূপাতিত করেছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আমাদের দেশের বিরুদ্ধে যেকোনো আগ্রাসনের জবাব হবে কঠোর। বিশেষ করে ন্যাটো ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের কিছু রাজনৈতিক নেতা যেভাবে তাঁদের জনগণকে বলছেন যে রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ অনিবার্য—তারা নিশ্চিতভাবে জেনে রাখুক, এর ফল ভালো হবে না।”

পূর্ব ইউরোপের দেশগুলোতে সম্প্রতি উদ্বেগ বেড়েছে, কারণ তাদের আকাশসীমায় মাঝেমধ্যে রুশ ড্রোন ও যুদ্ধবিমান দেখা যাচ্ছে। এসব দেশ রাশিয়াকে শীতল যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ের সবচেয়ে বড় হুমকি হিসেবে দেখছে। এরই মধ্যে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের সম্ভাবনাও ক্রমশ ক্ষীণ হয়ে পড়ছে।

অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট সম্প্রতি বলেছেন, ন্যাটোর আকাশসীমা লঙ্ঘনকারী রুশ বিমান ভূপাতিত করার পদক্ষেপকে তিনি সমর্থন করেন। তিনি এমনকি রাশিয়ার সামরিক সক্ষমতাকে বিদ্রূপ করে ‘কাগজের বাঘ’ বলেও মন্তব্য করেছেন।

ভাষণের পর আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী পুনরায় সতর্ক করে বলেন, রাশিয়ার আকাশসীমায় কোনো উড়ন্ত বস্তু ভূপাতিত করার চেষ্টা করা হলে সেটি হবে দেশটির সার্বভৌমত্ব ও ভূখণ্ডের অখণ্ডতার বড় লঙ্ঘন। তিনি আরও যোগ করেন, যারা এমন প্রচেষ্টা চালাবে, তারা এর পরিণতি ভোগ করতেই বাধ্য হবে।

তিনি স্পষ্ট করে জানান, রাশিয়া কখনো ন্যাটো বা ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোনো দেশে ড্রোন বা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়নি এবং ভবিষ্যতেও এমন পরিকল্পনা নেই। তবে তিনি উল্লেখ করেন, ইউক্রেন যুদ্ধের আগে যে সীমান্ত ছিল, তা পুনরুদ্ধারের আশা করাটা ‘রাজনৈতিক অন্ধত্ব’ ছাড়া আর কিছু নয়।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট কিয়েভের দখলকৃত এলাকা পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনার কথা বলেছিলেন। সেই বক্তব্যেরই জবাবে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী কঠোর অবস্থান তুলে ধরেন। একই সঙ্গে তিনি বিশেষভাবে জার্মান নেতৃত্বের বক্তব্যকে যুদ্ধ উসকানিমূলক বলে সমালোচনা করেন। তাঁর দাবি, ন্যাটো ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের কিছু রাজনৈতিক নেতা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ আসন্ন বলে মন্তব্য করে পরিস্থিতিকে আরও ঘোলাটে করছেন।

যদিও আক্রমণাত্মক মন্তব্য করা হয়েছে, রাশিয়া আবারও জানায় যে তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় আশাবাদী। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ভাষায়, “আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই দুই দেশের মধ্যে তৃতীয় দফার আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। এ আলোচনার লক্ষ্য দুই দেশের দূতাবাসের কার্যক্রম উন্নত করা।”

প্রসঙ্গত, গত এক দশক ধরে পাল্টাপাল্টি কূটনৈতিক নিষেধাজ্ঞা এবং বিধিনিষেধের কারণে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার কূটনৈতিক কার্যক্রম ব্যাপকভাবে সীমিত হয়ে পড়েছে। তবে সম্প্রতি জাতিসংঘ অধিবেশনের ফাঁকে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়েছে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments