ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট গতকাল মঙ্গলবার এক সাক্ষাৎকারে স্পষ্ট করে বলেছেন, যদি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট সত্যিই নোবেল শান্তি পুরস্কার অর্জন করতে চান, তবে তাঁকে গাজায় চলমান যুদ্ধ বন্ধ করতে উদ্যোগ নিতে হবে।
নিউইয়র্ক থেকে ফরাসি একটি টেলিভিশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি উল্লেখ করেন, ইসরায়েলকে যুদ্ধ বন্ধ করতে চাপ দেওয়ার মতো ক্ষমতা কেবল যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের হাতেই আছে। তাঁর ভাষায়, “এ বিষয়ে কিছু করার ক্ষমতা একজনের আছে, আর তিনি হচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।”
ফরাসি প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, তাঁদের দেশ এমন কোনো অস্ত্র বা সরঞ্জাম সরবরাহ করে না যা গাজার যুদ্ধে ব্যবহৃত হতে পারে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে এসব সরঞ্জাম সরবরাহ করছে। ফলে এই সংঘাত থামানোর ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এদিন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জোরালো ভাষায় বক্তৃতা দেন। তিনি পশ্চিমা দেশগুলোর ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রস্তাবকে প্রত্যাখ্যান করেন এবং এটিকে হামাসের জন্য পুরস্কার বলে মন্তব্য করেন। পাশাপাশি তিনি ঘোষণা দেন, গাজার যুদ্ধ অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে এবং শান্তি আলোচনায় এগিয়ে আসতে হবে।
এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে ফরাসি প্রেসিডেন্ট বলেন, তিনি দেখছেন যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট সক্রিয়ভাবে এই ইস্যুতে জড়িত হয়েছেন। পডিয়ামে দাঁড়িয়ে তিনি দাবি করেছেন, “আমি শান্তি চাই। আমি সাতটি সংঘাতের সমাধান করেছি।” ফরাসি প্রেসিডেন্টের মতে, নোবেল শান্তি পুরস্কার কেবল তখনই সম্ভব, যদি গাজা যুদ্ধ থামানো যায়।
এদিকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কয়েকটি দেশ—যেমন কাম্বোডিয়া, ইসরায়েল, পাকিস্তানসহ আরও কয়েকটি রাষ্ট্র—যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে এ বছরের নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত করেছে। তিনি নিজেও দাবি করেছেন, এই সম্মান পাওয়ার যোগ্য তিনি। কারণ, এর আগে চারজন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নোবেল শান্তি পুরস্কার অর্জন করেছিলেন।
অন্যদিকে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জানিয়েছেন, জাতিসংঘ অধিবেশনে উপস্থিত সবাই প্রত্যক্ষ করেছেন যে প্রেসিডেন্ট শান্তির জন্য সবচেয়ে বেশি কাজ করেছেন। তাঁর ভাষায়, “শুধুমাত্র এই প্রেসিডেন্টই বিশ্বে স্থিতিশীলতার জন্য এত সাফল্য অর্জন করতে পেরেছেন। কারণ, তিনি কার্যত যুক্তরাষ্ট্রকে আবার শক্তিশালী করেছেন।”
ফরাসি প্রেসিডেন্টের এই মন্তব্যের পর আন্তর্জাতিক মহলে নতুন করে আলোচনার জন্ম নিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, নোবেল শান্তি পুরস্কারের মতো সম্মান পেতে হলে গাজা যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটানো হবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের জন্য সবচেয়ে বড় পরীক্ষা।