নিউজার্সির আটলান্টিক কাউন্টিতে ধর্মীয় ভক্তি ও আনন্দে উদযাপিত হয়েছে সনাতনী হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান উৎসব—শ্যামা পূজা ও দীপাবলী। গত ২০ অক্টোবর সোমবার রাতে, উওর ফ্লোরিডা এভিনিউয়ের শ্রী শ্রী গীতা সংঘের প্রার্থনা হলে এবং এবসিকন শহরের রাধাকৃষ্ণ মন্দিরে সম্পূর্ণ শাস্ত্রমতে সম্পন্ন হয় এই পূজা ও উৎসবের আয়োজন।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই ধর্মীয় উৎসবকে কেন্দ্র করে মন্দিরে জমে ওঠে ভক্তিমুখর পরিবেশ। সনাতন ধর্মগ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে, কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশী তিথিতে দীপান্বিতা পার্বণ ও শ্যামা পূজা অনুষ্ঠিত হয়। ‘ঘরে ঘরে ডাক পাঠালো, দীপালিকায় জ্বালাও আলো’—এই আহ্বানেই আলোকিত হয় প্রবাসী সনাতনী হিন্দুদের ঘর-বাড়ি।
দুর্গাপূজার আনন্দমুখর দিনগুলো শেষ হতেই শুরু হয় দীপাবলির প্রস্তুতি। বিজয়ার বেদনায় মন কিছুটা ভারাক্রান্ত হলেও, দীপাবলির আলোয় সেই মন আবার উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। দেবী শ্যামা শান্তি, সংহতি ও সম্প্রীতির প্রতীক হিসেবে আবির্ভূত হন। তিনি দুষ্টের দমন ও শিষ্টের লালনের মাধ্যমে ভক্তদের জীবনে শুভ শক্তির বার্তা নিয়ে আসেন।
অধিবাসের মধ্য দিয়ে শুরু হয় শ্যামা পূজার আনুষ্ঠানিকতা। সন্ধ্যা নামতেই ভক্তরা সমবেত হন মন্দিরে। পুস্পাঞ্জলি ও ষোড়শ উপচারে দেবী কালির আরাধনার মধ্য দিয়ে অশুভ শক্তিকে বিনাশ ও কল্যাণের শক্তি লাভের প্রার্থনা করেন সবাই। ঢাকের বোল, কাঁসরের ধ্বনি, আর উলুধ্বনিতে মুখরিত হয় মন্দির প্রাঙ্গণ। আলো ও ভক্তির এই মিলনমেলায় ছিল চোখে পড়ার মতো উচ্ছ্বাস।
শ্যামা পূজা ও দীপাবলিকে কেন্দ্র করে প্রবাসী সনাতনী সম্প্রদায়ের ঘরে ঘরে জ্বলে ওঠে মঙ্গল প্রদীপ। শিশু-কিশোররাও এই উৎসবে অংশ নিয়ে নিজেদের ধর্মীয় ঐতিহ্যের সঙ্গে একাত্ম হয়। রাতভর চলা এই পূজা ও দীপাবলির আয়োজনে ভক্তরা মহাপ্রসাদ গ্রহণের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শেষ করেন।
প্রবাসে থেকেও নিজেদের সংস্কৃতি ও ধর্মীয় ঐতিহ্য ধরে রাখার এই প্রয়াস ছিল সত্যিই প্রশংসনীয়। আটলান্টিক কাউন্টির সনাতনী সম্প্রদায় শুধু ধর্মীয় আচারই নয়, ঐক্য ও সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল উদাহরণও উপস্থাপন করেছেন এই আয়োজনের মাধ্যমে।



