নিউইয়র্কের গভর্নর আসন্ন মেয়র নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক সোশ্যালিস্ট প্রার্থী ঝোহারান মামদানির পাশে দাঁড়িয়েছেন। এ সমর্থনকে মামদানির প্রচারণায় বড় এক ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
গভর্নর এক মতামত কলামে লিখেছেন, দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই নিউইয়র্কের গভর্নর ও মেয়রের মধ্যে সহযোগিতার গুরুত্বকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছেন তিনি। আর তাই এই মুহূর্তে কে শহরের নেতৃত্ব দেবেন তা নিয়ে গভীরভাবে ভেবে তিনি মামদানিকেই সমর্থন দেওয়ার ঘোষণা দেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে তিনি উল্লেখ করেন, নিউইয়র্ক সিটি এমন একজন মেয়র প্রাপ্য, যিনি ডোনাল্ড ট্রাম্পের মোকাবিলা করবেন এবং সাধারণ মানুষের জীবনকে আরও সাশ্রয়ী করবেন।
অন্যদিকে মামদানি গভর্নরের সমর্থন পেয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, এই সমর্থন শুধু পার্টিকে ঐক্যবদ্ধ করবে না, বরং নিউইয়র্ককে আরও সাশ্রয়ী করার সংগ্রামে শক্তি যোগাবে।
এই সমর্থনের মধ্য দিয়ে ধারণা করা হচ্ছে, এতদিন যে মধ্যপন্থী ডেমোক্র্যাটরা মামদানির প্রতি শীতল ছিলেন, তারাও হয়তো এখন ৩৩ বছর বয়সী এই প্রার্থীকে সমর্থনে রাজি হবেন।
গত জুনে ডেমোক্র্যাটিক প্রাইমারিতে মামদানি প্রতিষ্ঠিত প্রার্থী অ্যান্ড্রু কুয়োমোকে হারিয়ে দেন। তার প্রচারণায় ছিল ভাড়া স্থগিত রাখা, ঘণ্টায় ৩০ ডলারের ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ এবং ধনী শ্রেণির জন্য বাড়তি ভাড়া আরোপের মতো অঙ্গীকার।
সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয় প্রচারণা এবং পরিবর্তনের বার্তা দিয়ে তিনি হাজার হাজার নতুন ভোটারকে মাঠে নামাতে সক্ষম হন। সাম্প্রতিক জরিপে দেখা যাচ্ছে, স্বাধীন প্রার্থী হিসেবে লড়াই করা কুয়োমো ও বর্তমান মেয়র এরিক অ্যাডামসের তুলনায় মামদানি যথেষ্ট এগিয়ে আছেন। রিপাবলিকান প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়ার বিরুদ্ধেও তার ব্যবধান অনেক বেশি।
তবে এতদিন গভর্নর নিরপেক্ষ ছিলেন। জুনে সাংবাদিকদের তিনি বলেছিলেন, কিছু নীতিগত পার্থক্যের কারণে তখনো সিদ্ধান্ত নেননি। সাম্প্রতিক বৈঠক ও নিজস্ব নির্বাচনী প্রচারণার প্রেক্ষাপটে তিনি অবশেষে মামদানির পাশে দাঁড়ালেন।
মামদানির জয়ে ইতোমধ্যেই ১০ হাজারের বেশি প্রগতিশীল সমর্থক নির্বাচনে অংশ নিতে উৎসাহিত হয়েছেন। এরইমধ্যে তিনি বার্নি স্যান্ডার্স ও আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও-কর্তেজসহ প্রভাবশালী প্রগতিশীল নেতাদের সমর্থনও পেয়েছেন।
তবে দলের কেন্দ্রপন্থী অনেক প্রভাবশালী নেতা এখনো সমর্থন জানাননি। তাদের মধ্যে রয়েছেন সিনেটর কিরস্টেন জিলিব্র্যান্ড, প্রতিনিধি পরিষদের সংখ্যালঘু নেতা হাকিম জেফ্রিজ এবং সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতা চাক শুমার। বিশেষ করে শুমারের ইসরায়েলপন্থী অবস্থান এবং মামদানির গাজার যুদ্ধকে গণহত্যা হিসেবে আখ্যায়িত করা—এই দ্বন্দ্বকে অনেকে গুরুত্বপূর্ণ কারণ হিসেবে দেখছেন।