যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃপক্ষ কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্টের ভিসা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গেছে। অভিযোগ করা হয়েছে, তিনি নিউইয়র্কে ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করে মার্কিন সেনাদের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন এবং সহিংসতার আহ্বান জানিয়েছেন।
শনিবার মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত এক পোস্টে এ তথ্য জানানো হয়। সেখানে বলা হয়, কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট নিউইয়র্কের রাস্তায় অবস্থান নিয়ে প্রকাশ্যে সেনাদের নির্দেশ অমান্য করতে উৎসাহিত করেছেন।
যদিও মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট কোনো বিবরণ প্রকাশ করা হয়নি, তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, শুক্রবার জাতিসংঘ সদর দপ্তরের বাইরে অনুষ্ঠিত ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভে তিনি উপস্থিত ছিলেন। সেখানে হাজারো মানুষ গাজায় ইসরায়েলি হামলার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে সমবেত হয়।
বিক্ষোভটি অনুষ্ঠিত হয় জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের চতুর্থ দিনে। ওইদিন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বিশ্বনেতাদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন। তিনি দাবি করেন, গাজায় চলমান সামরিক অভিযান শেষ না হওয়া পর্যন্ত ইসরায়েলকে সুযোগ দিতে হবে। তাঁর ভাষণে হামাসকে ‘নির্মূল’ করার ঘোষণা দেওয়া হয়। এছাড়া, যেসব পশ্চিমা দেশ ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে, তাদের সমালোচনা করেন এবং এই সিদ্ধান্তকে ‘লজ্জাজনক’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
এই প্রেক্ষাপটে কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে যোগ দিয়ে ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন জানান। তাঁর উপস্থিতি শুধু কূটনৈতিক মহলেই নয়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি করেছে। যুক্তরাষ্ট্র মনে করছে, একজন রাষ্ট্রপ্রধানের এ ধরনের কর্মকাণ্ড সরাসরি কূটনৈতিক শিষ্টাচার লঙ্ঘন এবং দেশটির নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
এই ঘটনার ফলে কলম্বিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক নতুন করে সংকটে পড়তে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে উভয় দেশের মধ্যে কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ থাকলেও প্রেসিডেন্টের এমন অবস্থান যুক্তরাষ্ট্রের নীতি নির্ধারকদের জন্য উদ্বেগ তৈরি করেছে।
ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাত দীর্ঘদিন ধরেই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উত্তেজনার কারণ। এর মধ্যেই জাতিসংঘের অধিবেশনের সময় নিউইয়র্কে ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভে একজন রাষ্ট্রপ্রধানের যোগদান পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।