নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের জুইশ সেন্টারে ২৬ অক্টোবর রোববার অনুষ্ঠিত হলো প্রবাসী সাংবাদিক আহমেদের দুটি গ্রন্থ— ‘আমার সেই সময়’ এবং ‘আমার এই সময়’—এর মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে প্রবাসী সাংবাদিক, সাহিত্যপ্রেমী ও সংস্কৃতিকর্মীদের উপস্থিতিতে জমজমাট হয়ে ওঠে পরিবেশটি।
গ্রন্থ দুটি প্রকাশ করেছে বাংলাদেশের অন্যতম পরিচিত প্রকাশনা সংস্থা ‘আগামী প্রকাশনী’। পুরো আয়োজনটি সমন্বয় করেন টাইম টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী তাহের এবং সাংবাদিক সাকি।
অনুষ্ঠানে আলোচনা পর্বে অংশ নেন মাযহার, ইসলাম, কাদের, ফেরদৌস, রহমান, তারেক, নাজমী, রাণু ফেরদৌস, মুমিন, চৌধুরী, আতিক, বিন হক, সাহা, হোসেন ও শহীদসহ আরও অনেকে। তারা প্রত্যেকেই লেখকের কাজ ও সাহিত্য ভাবনাকে গভীরভাবে বিশ্লেষণ করেন এবং সময়নিষ্ঠ সাংবাদিকতার এক অনন্য উদাহরণ হিসেবে তাঁর লেখাকে তুলে ধরেন।
বক্তাদের মতে, আহমেদের লেখনী শুধু ঘটনাকে বর্ণনা করে না, বরং সময়ের ভেতরে থাকা বাস্তবতাকে উপলব্ধি করায়। তাঁর লেখার ভঙ্গি নির্মোহ, ভাষা প্রাঞ্জল এবং বিশ্লেষণ যুক্তিনির্ভর। সমাজ, রাজনীতি, সংস্কৃতি ও প্রবাসজীবনের অভিজ্ঞতা তাঁর লেখার পরতে পরতে প্রকাশ পেয়েছে।
অনুষ্ঠানে তাহের বলেন, “আহমেদ এমন একজন লেখক, যিনি সময়কে কেবল ইতিহাসে বন্দী রাখেন না, বরং পাঠককে সময়ের অনুধাবনের পথে নিয়ে যান। তাঁর লেখায় থাকে বাস্তবতার নির্মোহ ব্যাখ্যা ও গভীর মানবিকতা।”
অন্যদিকে মাযহার মন্তব্য করেন, “তিনি যা দেখেছেন, তা কেবল চোখে নয়, অভিজ্ঞতার দৃষ্টিতে দেখেছেন। তাঁর প্রতিটি লেখা একজন দায়িত্বশীল সাংবাদিকের আন্তরিকতা বহন করে।”
ফেরদৌস বলেন, “এই দুটি বই কেবল স্মৃতিচারণ নয়, বরং সময়ের দলিল। পাঠক এতে পাবেন দেশের সাংবাদিকতা, সমাজ ও প্রবাস জীবনের পরিবর্তনের প্রতিচ্ছবি।”
‘আমার সেই সময়’ বইটিতে লেখক তুলে ধরেছেন বাংলাদেশের সাংবাদিকতা অঙ্গনের শুরুর দিনগুলোর অভিজ্ঞতা, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং সংবাদ জগতের নেপথ্যের বহু অনুচ্চারিত কাহিনি। সেই সময়ের সংবাদকর্মীদের সংগ্রাম, সাহস ও পেশার প্রতি ভালোবাসা বইটিতে জীবন্ত হয়ে উঠেছে।
অন্যদিকে ‘আমার এই সময়’ গ্রন্থে লেখক স্থান দিয়েছেন প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা, সামাজিক পরিবর্তন, সাংস্কৃতিক রূপান্তর এবং বিশ্বায়নের প্রভাবের আলোচনাকে। বিশেষ করে প্রবাসে বসবাসের সময় যেভাবে মানুষ তার শিকড়ের টান অনুভব করে, তা বইটিতে সূক্ষ্মভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন লেখক।
অনুষ্ঠানটি শুধু একটি গ্রন্থ উন্মোচন নয়, বরং সময়ের সঙ্গী এক সাংবাদিকের জীবনযাত্রা, চিন্তা ও অনুভবের এক পূর্ণাঙ্গ প্রতিফলন ছিল। সাহিত্য ও সাংবাদিকতার এই মেলবন্ধন প্রবাসী বাংলা সমাজে নতুন অনুপ্রেরণা ছড়িয়েছে।



