নিউইয়র্কে স্থানীয় কমিউনিটি ও পুলিশ বিভাগের সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার উদ্যোগ হিসেবে অনুষ্ঠিত হলো ‘কফি উইথ এ কপ’ শীর্ষক মতবিনিময় সভা। গোল্ডেন এজ হোমকেয়ারের আয়োজনে গত ১২ নভেম্বর জ্যাকসন হাইটসের একটি রেস্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে অংশ নেন বাংলাদেশি কমিউনিটি সদস্যরা ও নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টের বিভিন্ন ইউনিটের কর্মকর্তারা।
সভায় বক্তারা বলেন, অভিবাসী হিসেবে যেই অবস্থানই হোক না কেন, নিরাপত্তা বা জরুরি কোনো পরিস্থিতিতে পুলিশকে নির্ভয়ে জানানোর সুযোগ সব নাগরিকের জন্য সমান। নিউইয়র্ক সিটিকে নিরাপদ রাখতে পুলিশ বিভাগের লক্ষ্য হলো কমিউনিটির সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করা, যাতে দ্রুত সেবা ও সহায়তা পৌঁছে দেওয়া যায়।
মতবিনিময় সভার সভাপতিত্ব করেন আয়োজক প্রতিষ্ঠানের প্রেসিডেন্ট ও সিইও, যিনি মূলধারার রাজনীতিতেও সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন। অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন এনওয়াইপিডির কমিউনিটি অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের একজন সার্জেন্ট, যিনি দীর্ঘদিন ধরেই অভিবাসী কমিউনিটির সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছেন।
অনুষ্ঠানে কুইন্সের বিভিন্ন প্রিসিঙ্কট, কমিউনিটি অ্যাফেয়ার্স, ইন্টেলিজেন্স ও পাবলিক সিকিউরিটি বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। পুলিশের ডেপুটি চিফ, সহকারী কমিশনার, ডেপুটি ইন্সপেক্টর, ক্যাপ্টেন, লিউটেন্যান্ট এবং বিভিন্ন ইউনিটের ডিটেকটিভরা কমিউনিটির সঙ্গে নিরাপত্তা-সংক্রান্ত অভিজ্ঞতা ও তথ্য বিনিময় করেন।
বাংলাদেশি কমিউনিটির পক্ষ থেকেও বিভিন্ন সংগঠনের নেতা, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা এবং সমাজসেবীরা অনুষ্ঠানে যোগ দেন। আয়োজক প্রতিষ্ঠানের ভাইস প্রেসিডেন্ট ছাড়াও বাংলাদেশি কমিউনিটির জনপ্রিয় সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিরা অংশ নেন। তারা কমিউনিটির বিভিন্ন সমস্যা, নিরাপত্তা উদ্বেগ এবং পুলিশের সঙ্গে সমন্বিত কাজের সম্ভাবনা নিয়ে মতামত তুলে ধরেন।
সভায় আয়োজক প্রতিষ্ঠানের প্রধান বলেন, স্থানীয় পুলিশ সদস্যরা সবসময়ই কমিউনিটির পাশে থেকেছেন এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিরলস পরিশ্রম করেছেন। অভিবাসী কমিউনিটির সঙ্গে পুলিশ বিভাগের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের, আর সেই সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করতেই এ আয়োজন করা হয়েছে। পারস্পরিক বোঝাপড়া বাড়ানো ও কমিউনিটির নিরাপত্তা জোরদার করার বিষয়ে আলোচনাই ছিল মূল উদ্দেশ্য।
অনুষ্ঠানে এনওয়াইপিডির পক্ষ থেকে উপস্থিতদের মাঝে বিভিন্ন সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করা হয়। এর মধ্যে ছিল চুরি প্রতিরোধ, বাসা-বাড়ির নিরাপত্তা ব্যবস্থা, লোটো স্ক্যাম ও অন্যান্য সাধারণ অপরাধ থেকে সতর্ক থাকার নির্দেশনা। উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তারা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে আইনের প্রয়োগ সবার জন্য সমান। ব্যক্তির অভিবাসন স্ট্যাটাস যাই হোক না কেন, রাষ্ট্রীয় সুবিধা পাওয়ার অধিকার রয়েছে এবং আইন মেনে চলা প্রত্যেক নাগরিকের দায়িত্ব।
পুলিশ কর্মকর্তারা আরও জানান, যে কোনো জরুরি পরিস্থিতিতে সঠিক ইউনিটে দ্রুত জানানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনেক ক্ষেত্রেই আগাম সতর্কতা বড় ধরনের সমস্যা ও অপরাধ প্রতিরোধ করতে পারে। এজন্য এনওয়াইপিডির বিভিন্ন বিশেষায়িত ইউনিট সার্বক্ষণিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
সভা শেষে উভয় পক্ষেই আশা ব্যক্ত করা হয়—কমিউনিটি ও পুলিশ যৌথভাবে কাজ করলে নিউইয়র্ক আরও নিরাপদ, সুবিধাজনক ও বাসযোগ্য শহর হিসেবে গড়ে উঠবে। নিয়মিত এ ধরনের মতবিনিময়ের মাধ্যমে সকল নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রচেষ্টা আরও শক্তিশালী হবে।



