Sunday, October 5, 2025
spot_img
Homeএডুকেশননর্থওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসা ও রেজিস্ট্রেশন ঝুঁকিতে, বিতর্কিত অ্যান্টিসেমিটিজম ট্রেনিং প্রত্যাখ্যানের কারণে শিক্ষার্থীদের...

নর্থওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসা ও রেজিস্ট্রেশন ঝুঁকিতে, বিতর্কিত অ্যান্টিসেমিটিজম ট্রেনিং প্রত্যাখ্যানের কারণে শিক্ষার্থীদের বাধা

নর্থওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ৩০০ শিক্ষার্থী তাদের ক্লাস রেজিস্ট্রেশন করতে পারছেন না। কারণ, তারা বিতর্কিত একটি অ্যান্টিসেমিটিজম ট্রেনিং ভিডিও দেখার প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। শিক্ষার্থীরা বলেন, এই ভিডিওটি ইসরায়েলের পক্ষে পক্ষপাতিত্বপূর্ণ, তথ্যগতভাবে ভুল এবং গাজার পরিস্থিতি নিয়ে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে।

এক প্রেস কনফারেন্সে শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সিদ্ধান্ত তাদের চাকরি, ভিসা, স্টাইপেন্ড এবং স্বাস্থ্যবিমার মতো সুবিধাগুলোর উপর প্রভাব ফেলছে। তবুও, তারা বলছেন যে তারা ভিডিওটি দেখার জন্য অনিচ্ছুক।

একজন পিএইচডি শিক্ষার্থী বলেন, “এই ট্রেনিং শুধুমাত্র বক্তব্য দমন নয়, এটি চায় যেন আমরা মেনে নেই এবং এতে আমরা অংশীদার হয়ে যাই। নর্থওয়েস্টার্ন চায় যেন শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকরা ঘটনা অস্বীকার করে শুধু এমন প্রোপাগান্ডা গ্রহণ করে যা ইসরায়েলি জায়োনিস্ট অবকুপেশনকে ন্যায্যতা দেয়।”

নর্থওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মধ‍্য-সেপ্টেম্বরের মধ্যে ট্রেনিং সম্পন্ন করতে বলেছিল যাতে তারা রেজিস্ট্রেশন করতে পারেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখপাত্র জানিয়েছেন, এই ধরনের ট্রেনিং অন্যান্য বাধ্যতামূলক ট্রেনিংয়ের মতোই। “যেমন অন্যান্য বাধ্যতামূলক শিক্ষার্থী ট্রেনিং, এই ট্রেনিং সম্পন্ন না করলে বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রেশন হোল্ডসহ পদক্ষেপ নিতে পারে,” তিনি বলেন।

মুখপাত্র আরও যোগ করেন, “শিক্ষার্থীদের ট্রেনিংয়ের বিষয়বস্তুর সঙ্গে একমত হতে হবে না, তবে তাদের অবশ্যই শিক্ষার্থী আচরণবিধি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্য, হয়রানি এবং যৌন হয়রানি নীতি মেনে চলার জন্য নিশ্চিত হতে হবে।”

যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এখন শিক্ষার্থীদের এই ধরনের অ্যান্টিসেমিটিজম ট্রেনিংয়ে অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক করছে। এর পেছনে প্রেক্ষাপট হলো, ট্রাম্প প্রশাসন তাদের মতে যে প্রতিষ্ঠানগুলো ক্যাম্পাসে অ্যান্টিসেমিটিজম যথাযথভাবে মোকাবিলা করছে না, তাদের ফান্ডিং কেটে দেবে বলে হুমকি দিয়েছিল।

নর্থওয়েস্টার্নের ট্রেনিংয়ে দুটি ভিডিও অন্তর্ভুক্ত ছিল—একটি অ্যান্টিসেমিটিজম এবং অন্যটি অ্যান্টি-আরব পক্ষপাত নিয়ে। ভিডিওটির সমালোচনা করে শিক্ষার্থীরা বলছেন, এটি ইসরায়েলের সমালোচনাকে অ্যান্টিসেমিটিজমের সমতুল্য করছে। এক পর্যায়ে ন্যারেটর ইসরায়েলের সমালোচকদের তুলনা করেছিলেন প্রাক্তন কু ক্লুক্স ক্ল্যান গ্র্যান্ড উইজার্ড ডেভিড ডিউকের সঙ্গে, এবং বিতর্কিত অ্যান্টিসেমিটিজম সংজ্ঞা ব্যবহার করা হয়েছে।

ভিডিওতে আরও বলা হয়েছে যে, ইসরায়েল “ব্রিটিশ জমিতে” প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং পশ্চিম তটকে “যিহুদিয়া ও সামারিয়া” নামে উল্লেখ করা হয়েছে, যা ইসরায়েলি সরকার দ্বারা ব্যবহারকৃত বাইবেলিক নাম।

নর্থওয়েস্টার্নের ট্রেনিংয়ের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীরা, যারা অনেকেই ইহুদী, বলছেন যে এই ট্রেনিং ইহুদীদের সুরক্ষা দেয় না। বরং এটি “সম্প্রদায়ে বৈষম্যমূলক পক্ষপাতকে আরও শক্তিশালী করছে।”

এই ট্রেনিং তৈরি করেছে একটি প্রো-ইসরায়েল সংস্থা। সংস্থার মুখপাত্র জানিয়েছেন, “ইসরায়েল রাষ্ট্রের নীতি সমালোচনা করা এবং ইসরায়েলের অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলা বা ইহুদী শিক্ষার্থীদের তাদের ইসরায়েলের সঙ্গে সংযোগের জন্য দোষারোপ করার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য রয়েছে।”

মার্চে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ইমেইল করেছে যে, ট্রেনিং কার্যকর করার সময় ফেডারেল নীতি মেনে চলা হবে, যার মধ্যে রয়েছে ট্রাম্প প্রশাসনের ২৯ জানুয়ারির নির্বাহী আদেশ, ‘অতিরিক্ত পদক্ষেপ অ্যান্টি-সেমিটিজমের বিরুদ্ধে’।

তবে, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের এই ট্রেনিং বাধ্যতামূলক করলেও, ট্রাম্প প্রশাসন এরপরও ৭৯০ মিলিয়ন ডলার গবেষণা তহবিল কেটে দেয়।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments