নরসিংদীর মাধবদীতে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন তিনজন। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের রাইনাদী এলাকায় ঘটে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। স্থানীয় সূত্র ও পুলিশ জানিয়েছে, অতিরিক্ত গতিতে ছুটে আসা একটি বাস অটোরিকশাটিকে পেছন থেকে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই একজন নিহত হন, আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান আরও দুজন।
নিহতদের মধ্যে ছিলেন স্থানীয় তিন যুবক—রাইনাদী গ্রামের আজিজুল ইসলামের ছেলে সিয়াম মিয়া (২২), আলতাফ হোসেনের ছেলে সাব্বির হোসেন (২৮) এবং রবিউল ইসলামের ছেলে অটোরিকশাচালক ফাহিম মিয়া (৩০)। প্রত্যেকেই নরসিংদী সদর উপজেলার নুরালাপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা।
হাইওয়ে পুলিশ জানায়, দুর্ঘটনার সময় সিয়াম ও সাব্বির মাধবদী থেকে ফাহিমের অটোরিকশায় করে নিজ এলাকায় ফিরছিলেন। মহাসড়ক থেকে গলিতে ঢোকার মুহূর্তে সিলেটগামী একটি দ্রুতগামী বাস তাদের অটোরিকশাটিকে সজোরে ধাক্কা দেয়। ধাক্কার তীব্রতায় অটোরিকশাটি দুমড়েমুচড়ে যায় এবং ঘটনাস্থলেই একজন নিহত হন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় দুজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন।
দুর্ঘটনার পর স্থানীয়দের সহযোগিতায় হাইওয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতদের লাশ উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। তবে বাসের চালক ও সহকারী দুর্ঘটনার পরপরই পালিয়ে যায়। পুলিশ বাসটি জব্দ করেছে এবং পলাতকদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট থানার কর্মকর্তারা।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের মতে, সড়ক দুর্ঘটনার বেশিরভাগই ঘটছে বেপরোয়া গতির কারণে। মহাসড়কে ভারী যানবাহনের অনিয়ন্ত্রিত চলাচল এবং ছোট যানবাহনের অরক্ষিত অবস্থান দুর্ঘটনার ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে তুলছে। স্থানীয়রা দুর্ঘটনাপ্রবণ এই এলাকায় অতিরিক্ত গতির যানবাহন নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
দুর্ঘটনার পর এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। নিহতদের পরিবারের সদস্যরা অকাল এই মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না। তাঁরা দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
প্রতিদিনের মতো ব্যস্ত রাতের সড়ক তখনও আলোকিত ছিল, কিন্তু এক মুহূর্তের অসাবধানতায় নিভে যায় তিনটি প্রাণ। এই ঘটনা আবারও মনে করিয়ে দিল—অতিরিক্ত গতি ও অসচেতনতা কতটা প্রাণঘাতী হতে পারে।



