সাম্প্রতিক সময়ে তরুণদের মধ্যে কোলন ক্যানসারের হার উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে চলেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ১৯৮১ থেকে ১৯৯৬ সালের মধ্যে জন্ম নেওয়া মিলেনিয়ালরা এখন সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন। কোলন ক্যানসার মূলত বৃহদন্ত্র বা রেকটামে শুরু হয় এবং চিকিৎসা দ্রুত শুরু করলে সম্পূর্ণরূপে সেরে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
এক সময় কেবল বয়োজ্যেষ্ঠদেরই প্রভাবিত করলেও এখন কম বয়সেও এই মারাত্মক রোগ দেখা দিচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার পরিপাকতন্ত্র বিশেষজ্ঞ জোসেফ সালহাব জানাচ্ছেন, কিছু উপসর্গকে কখনোই হালকাভাবে নেওয়া ঠিক নয়।
প্রধান উপসর্গসমূহ:
-
পায়ুপথে রক্তপাত: মলের সঙ্গে রক্ত বা টয়লেট পেপারে রক্ত দেখা গেলে তা গুরুত্ব দিন। রঙ উজ্জ্বল লাল বা গাঢ় লাল হতে পারে। তবে পাইলস বা অন্যান্য সমস্যার কারণে এমন উপসর্গও দেখা দিতে পারে। ক্রমাগত রক্তপাত হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
-
কারণ ছাড়া পেটব্যথা: অন্য কারণ ছাড়া দীর্ঘস্থায়ী পেটব্যথা ঝুঁকির দিক নির্দেশ করতে পারে। এটি পেট কামড়ে ধরার মতো বা অস্বস্তিকর ব্যথা হিসেবে প্রকাশ পেতে পারে।
-
দুর্বলতা বা অবসাদ: নিয়মিত বিশ্রাম নেওয়ার পরও যদি ক্লান্তি বা অবসাদ থাকে, তাহলে এটি অন্য কোনো রোগের উপসর্গ হতে পারে। দীর্ঘমেয়াদি ক্লান্তিকে কখনোই অবহেলা করবেন না।
-
মলত্যাগের ধরনে পরিবর্তন: হঠাৎ কোষ্টকাঠিন্য, ডায়রিয়া বা মলত্যাগের ধরণ পরিবর্তন কয়েক সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হলে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
-
অন্যান্য লক্ষণ: অস্বাভাবিক ওজন কমা, ক্ষুধামান্দ্য, রাতে ঘাম হওয়া, গায়ে জ্বর লাগা ইত্যাদিও ক্যানসারের প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে।
গবেষণায় দেখা গেছে, পঞ্চাশের দশকে জন্ম নেওয়া ব্যক্তিদের তুলনায় নব্বইয়ের দশকের মিলেনিয়ালদের মধ্যে কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি দ্বিগুণ। খাদ্যাভ্যাস, অল্প শারীরিক কার্যকলাপ, স্থূলতা এবং জিনগত কারণ এই ঝুঁকিকে বাড়িয়ে দেয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ৪০ বছরের কম বয়সী হলেও উপসর্গ দেখা দিলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। দ্রুত রোগ শনাক্ত করলে চিকিৎসা কার্যকর হয় এবং সম্পূর্ণ সেরে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
সচেতনতা ও পদক্ষেপ:
-
উপসর্গের প্রতি সতর্ক থাকুন।
-
খাদ্যাভ্যাস ও জীবনধারা স্বাস্থ্যকর রাখুন।
-
পরিবারে কোলোরেক্টাল ক্যানসারের ইতিহাস থাকলে বিশেষভাবে নজর রাখুন।
-
নিয়মিত স্ক্রিনিং এবং চিকিৎসা নিশ্চিত করুন।
কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি কমানোর প্রথম ধাপ হলো সচেতনতা। ছোটখাটো উপসর্গও উপেক্ষা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। দ্রুত শনাক্তকরণ রোগকে পরাস্ত করতে সহায়তা করে।