Thursday, November 20, 2025
spot_img
Homeইমিগ্রেশন তথ্যনতুন এজেন্টদের জন্য প্রতিশ্রুত অনুবাদ প্রযুক্তি এখনো পায়নি সংস্থা

নতুন এজেন্টদের জন্য প্রতিশ্রুত অনুবাদ প্রযুক্তি এখনো পায়নি সংস্থা

ইমিগ্রেশন প্রয়োগকারী একটি গুরুত্বপূর্ণ ফেডারেল সংস্থা নতুন কর্মকর্তাদের জন্য যে অনুবাদ প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, সেই প্রযুক্তি এখনো কেনা হয়নি। প্রায় চার মাস আগে এই উদ্যোগের ঘোষণা এলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় অভ্যন্তরীণ পর্যায়ে নিরাপত্তা ও যোগাযোগ–সংক্রান্ত উদ্বেগ বাড়ছে বলে জানিয়েছেন নিরাপত্তা–বিভাগের দুটি সিনিয়র কর্মকর্তা।

উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো—ব্যবস্থা দ্রুত গতিতে চালু করার লক্ষ্যে সংস্থাটি জুলাই মাসে নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের জন্য বাধ্যতামূলক পাঁচ সপ্তাহের স্প্যানিশ ভাষা প্রশিক্ষণ বাদ দেয়। তখন দায়িত্বে থাকা প্রশিক্ষণপ্রধান পদধারী কর্মকর্তা সাংবাদিকদের জানান, নতুন অনুবাদ প্রযুক্তিগুলো নাকি আগের প্রশিক্ষণের তুলনায় বেশি কার্যকর হবে। বিশেষ করে মাঠপর্যায়ে গ্রেপ্তার–সংক্রান্ত পরিস্থিতিতে এই প্রযুক্তি কর্মকর্তাদের কাজে লাগবে বলে জানানো হয়েছিল।

তবে নিরাপত্তা–বিভাগের দুই কর্মকর্তার মতে, সংস্থাটি এখনো পর্যন্ত কোনো ধরনের শরীরে পরিধানযোগ্য অনুবাদ ডিভাইস বা অন্যান্য আধুনিক প্রযুক্তি কেনেনি। বিশেষভাবে বিবেচনায় ছিল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক এমন যন্ত্র, যা কর্মকর্তাদের বডি ক্যামেরার সঙ্গে সমন্বয়ে কাজ করে শোনা ভাষা স্বয়ংক্রিয়ভাবে অনুবাদ করে দিতে পারবে। কিন্তু সেই উদ্যোগ কাগজেই রয়ে গেছে।

নতুন কর্মকর্তাদের ভাষা–জ্ঞানহীন অবস্থায় মাঠে পাঠানোর বিষয়টি বিশেষজ্ঞদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করেছে। কারণ যোগাযোগে ভুল বোঝাবুঝি হলে তা কর্মকর্তাদের নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকি বাড়ানোর পাশাপাশি আটক হওয়া ব্যক্তিদেরও বিপদে ফেলতে পারে। একাধিক অভিজ্ঞ কর্মকর্তা জানিয়েছেন—মাঠপর্যায়ে ভাষাগত অসঙ্গতি অনেক সময় ভুল সিদ্ধান্ত ও অপ্রত্যাশিত সংঘর্ষের কারণ হতে পারে।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে দ্রুত নিয়োগ সম্পন্ন করার লক্ষ্য ছিল বছরের শেষ নাগাদ দশ হাজার নতুন কর্মকর্তা নিয়োগ। সেই প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে ভাষা প্রশিক্ষণ বাদ দেওয়া হলেও বাস্তবে তার বিকল্প হিসেবে কোনো প্রযুক্তি এখনো হাতে পৌঁছেনি। সংস্থার মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বলেছে, আগের স্প্যানিশ প্রশিক্ষণের পরিবর্তে এখন “আরও বিস্তৃত অনুবাদ সেবা” চালু করা হয়েছে। তবে কী ধরনের সেবা বা প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে—তা প্রকাশ করতে অস্বীকৃতি জানানো হয়।

জানা গেছে, কর্মকর্তারা এখনো প্রায় পুরোনো পদ্ধতিতেই অফিসে অবস্থান করে একটি অনুবাদ–হটলাইন ব্যবহার করছেন। মাঠে তা যথেষ্ট কার্যকর নয় বলে অভ্যন্তরীণ কর্মকর্তারাই মনে করেন। মুখপাত্রের দাবি, বহুভাষিক পরিস্থিতি সামলাতে প্রযুক্তিনির্ভর সেবা এখন বেশি উপযোগী, কারণ অনেক অভিবাসীই ভিন্নভিন্ন ভাষাভাষী।

অন্যদিকে সীমান্ত–প্রহরী সংস্থা এখনো নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের জন্য বাধ্যতামূলক স্প্যানিশ প্রশিক্ষণ চালু রেখেছে।

উল্লেখযোগ্য যে, দেশের বিভিন্ন পুলিশ বিভাগ ইতোমধ্যেই উন্নত এআই–অনুবাদ ডিভাইস ব্যবহার শুরু করেছে। কিছু শহরে এগুলো বডি ক্যামেরার সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে ভাষা শনাক্ত করে ৫০টিরও বেশি ভাষা অনুবাদ করতে সক্ষম। একাধিক বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এসব ডিভাইস মাঠে মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ নিশ্চিত করতে সাহায্য করছে এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের আস্থা বাড়াচ্ছে।

এদিকে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বড় শহরগুলোতে অভিবাসন–সংশ্লিষ্ট অভিযানে বেশ কয়েকটি সহিংস ঘটনার খবর পাওয়া গেছে, যদিও ভাষাগত সমস্যার কারণে এসব ঘটনা ঘটেছে কিনা তা নিশ্চিত নয়। অভিবাসন–সংক্রান্ত আইনি পরামর্শদাতারা মনে করেন, ভাষাগত দুর্বলতা দূর হলে পরিস্থিতি আরও স্বচ্ছ ও নিরাপদ হয়।

অভিবাসীদের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যর্থ হওয়ার উদাহরণও সামনে এসেছে। রাজধানী ঘিরে এক দম্পতি জানান, কর্মকর্তারা তাদের থামিয়ে ইংরেজিতে জিজ্ঞেস করলেও তারা উত্তর দিতে পারেননি, কারণ কেউই অপরের ভাষা বুঝতে পারেনি। এতে ভুল বোঝাবুঝি আরও বাড়ে এবং পরে তাদের আটক করে দূরবর্তী একটি প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়।

আইন–শৃঙ্খলা প্রশিক্ষণ–বিশেষজ্ঞদের মতে, এআই–ভিত্তিক যন্ত্র সাহায্য করতে পারে ঠিকই, তবে তা কখনোই ভাষাজ্ঞানকে পুরোপুরি প্রতিস্থাপন করতে পারে না। যন্ত্র অচল হলে বা সমস্যা তৈরি করলে মৌলিক যোগাযোগ দক্ষতা অপরিহার্য। ভাষা জানা কর্মকর্তাদের সঙ্গে জনগণের সম্পর্কও তুলনামূলকভাবে সহনশীল ও নিরাপদ থাকে বলে বিশেষজ্ঞরা মত দেন।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments