শারদীয় দুর্গাপূজা এখন একেবারে দ্বারপ্রান্তে। আগামী রোববার মহাষষ্ঠী দিয়ে শুরু হবে পূজার আনুষ্ঠানিকতা, আর ২ অক্টোবর বিজয়া দশমীর প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে সমাপ্ত হবে বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় এই ধর্মীয় উৎসব। দেবীপক্ষ শুরু হয়ে যাওয়ায় ইতিমধ্যেই পূজার আবহ তৈরি হয়েছে সর্বত্র। পূজার এই আনন্দঘন সময়কে ঘিরে আবহাওয়া কেমন থাকবে, তা নিয়ে চলছে ব্যাপক কৌতূহল।
এদিকে সাগরে সৃষ্ট একটি লঘুচাপ নিম্নচাপে রূপ নিতে চলেছে। সাধারণত এ ধরনের অবস্থায় বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। শুক্রবার আবহাওয়া অফিস দেশের চারটি সমুদ্রবন্দরে সতর্ক সংকেত জারি করেছে। লঘুচাপটি ভারতের ওডিশা উপকূলে অবস্থান করছে। এটি নিম্নচাপে পরিণত হলে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলেও এর কিছুটা প্রভাব পড়তে পারে। তবে দেশের সব অঞ্চলে প্রভাব ততটা বেশি নাও হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন।
ওডিশা উপকূলে এ মাস ও গত আগস্টে একাধিকবার লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছিল। তবে সেগুলোর প্রভাব বাংলাদেশের ভেতরে তেমনভাবে পড়েনি। এবারের লঘুচাপ বিশেষ করে খুলনা ও বরিশাল অঞ্চলে প্রভাব ফেলতে পারে। সেখানে ঝোড়ো হাওয়া ও সামান্য বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া শনিবার থেকেই দেশে বৃষ্টির মাত্রা কিছুটা বাড়তে পারে।
পূজার মূল দিনগুলোতে আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, ষষ্ঠী এবং সপ্তমীর দিন আবহাওয়া তুলনামূলক শুষ্ক থাকতে পারে। তবে মৌসুমি বায়ুর সক্রিয় প্রভাবে দেশের কিছু অঞ্চলে হালকা বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা থাকছে। পূজার অষ্টমী অর্থাৎ ১ অক্টোবর থেকে বৃষ্টির পরিমাণ কিছুটা বেড়ে যেতে পারে।
বিজয়া দশমীর দিন তথা ২ অক্টোবর এবং পরদিন ৩ অক্টোবর বৃষ্টির মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়তে পারে। বিশেষ করে ২ অক্টোবর থেকে নতুন করে আরেকটি লঘুচাপ সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যা বাংলাদেশের সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকায় হতে পারে। এর ফলে সেদিন রাজশাহী বিভাগ ছাড়া প্রায় সব বিভাগেই কমবেশি বৃষ্টি হতে পারে।
প্রাক্কলন অনুযায়ী, রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট অঞ্চলে ২ অক্টোবর অপেক্ষাকৃত বেশি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এর ফলে বিজয়া দশমীর প্রতিমা বিসর্জনেও ভোগান্তির আশঙ্কা দেখা দিতে পারে।
সব মিলিয়ে এবারের দুর্গাপূজায় প্রথম দিকের দিনগুলোতে আবহাওয়া শুষ্ক ও মনোরম থাকলেও, শেষের দিকে বিশেষ করে অষ্টমী থেকে দশমীর মধ্যে বৃষ্টি বেড়ে যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। তাই পূজার আনন্দের পাশাপাশি আবহাওয়ার পরিস্থিতির দিকেও সতর্ক দৃষ্টি রাখা জরুরি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।