সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক রায়ে দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার অভিবাসী সমাজে চরম উদ্বেগ ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। আদালতের এই সিদ্ধান্তের ফলে অভিবাসন অভিযানে রোভার টহল ও বর্ণভিত্তিক প্রোফাইলিং বা জাতিগত বৈষম্যমূলক পদক্ষেপের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে। এর ফলে আশঙ্কা করা হচ্ছে যে, অভিযান আরও তীব্র আকারে পরিচালিত হবে।
লস অ্যাঞ্জেলেসের ম্যাকআর্থার পার্ক সংলগ্ন একটি দোকানের সামনে আয়োজিত সমাবেশে বিভিন্ন অধিকারকর্মী, আইনজীবী ও সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি জানান, এই রায় অভিবাসীদের ভয় দেখাতে পারবে না। তারা বলেন, সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন, তারা ঐক্যবদ্ধভাবে দৃঢ় অবস্থান নেবেন।
গত জুন থেকে শুরু হওয়া ব্যাপক অভিযানে ইতোমধ্যে ৮১টি কারওয়াশ কেন্দ্রে অভিযান চালানো হয়েছে, যার মধ্যে কয়েকটিতে একাধিকবার হানা দেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত প্রায় ২৫০ জন কর্মীকে আটক করা হয়েছে। আটক হওয়াদের মধ্যে শ্রমিক নেতাও রয়েছেন, যিনি কর্মস্থলে দায়িত্ব পালনের সময় গ্রেপ্তার হন। এ ধরনের পদক্ষেপকে ‘সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য’ বলে অভিহিত করা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের মাধ্যমে আগের একটি জেলা আদালতের নির্দেশ স্থগিত করা হয়েছে। সেই নির্দেশে কেবলমাত্র জাতিগত পরিচয় বা ভাষার ভিত্তিতে কাউকে থামানো ও তল্লাশি চালানো নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। নাগরিক অধিকার রক্ষাকারী সংগঠনগুলোর দায়ের করা মামলার প্রেক্ষিতেই সেই নির্দেশ জারি হয়েছিল।
এদিকে, জুনের শুরু থেকে অভিযানের কারণে দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার অভিবাসী সমাজে তীব্র ভয় ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় কর্তৃপক্ষ শহরে বিপুল সংখ্যক সেনা ও ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করে। তবে স্থানীয় আদালত এটিকে আইনবিরোধী ঘোষণা করেছে।
অভিবাসন অধিকারকর্মীরা বলছেন, এই রায় কার্যত বর্ণবৈষম্যকে বৈধতা দিচ্ছে। তারা অভিযোগ করেন, এখন কেবল ত্বকের রঙ, ভাষা কিংবা কাজের ধরন দেখে মানুষকে থামানো, তল্লাশি ও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।
প্রতিক্রিয়ায় অধিকার সংগঠনগুলো দ্রুত জোট গঠন করেছে। বিভিন্ন স্থানে স্বেচ্ছাসেবীরা সক্রিয় রয়েছেন—কোথাও অভিযানের খবর পেলে তারা তাৎক্ষণিকভাবে সামাজিক মাধ্যমে জানাচ্ছেন, কর্মীদের সতর্ক করছেন এবং নাগরিক ও অনথিভুক্তদের জন্য ‘নিজের অধিকার জানুন’ কর্মশালা আয়োজন করছেন।
সোমবারের রায় ঘোষণার পর অধিকারকর্মীরা জানিয়েছেন, তারা তাদের কার্যক্রম আরও বিস্তৃত করবেন। সামাজিক মাধ্যমে বিশেষ সতর্কবার্তা ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এবং নাগরিকদের নিরাপদ যোগাযোগ প্ল্যাটফর্মে যুক্ত হতে আহ্বান জানানো হয়েছে।
অভিযান ঘন ঘন হতে পারে এমন সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, বিশেষ করে হোম ডিপো ও কারওয়াশের মতো কর্মস্থলগুলোতে আইসিই কার্যক্রম বাড়তে পারে। সংগঠনগুলো মানুষকে সাহসী, সংগঠিত ও সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে।