যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী বসবাসের জন্য সবচেয়ে পরিচিত অনুমোদন হলো গ্রিন কার্ড। তবে এর বিকল্প হিসেবে এবার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন এক নতুন পরিকল্পনার—‘গোল্ড কার্ড’। তবে এই সুযোগ পেতে খরচ করতে হবে বিপুল অর্থ—৫০ লাখ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৬০ কোটির বেশি।
গ্রিন কার্ডের বর্তমান ধরণ
গ্রিন কার্ড সাধারণত তিনটি প্রধান উপায়ে পাওয়া যায়—চাকরির সুযোগ, পরিবারভিত্তিক স্পন্সরশিপ এবং বিনিয়োগ। বিনিয়োগভিত্তিক যে ভিসাটি রয়েছে সেটি হলো ইবি-৫ ইমিগ্রেশন ইনভেস্টর প্রোগ্রাম। বর্তমানে বিদেশি কেউ যুক্তরাষ্ট্রে ১০ লাখ ৫০ হাজার ডলার বিনিয়োগ করে নতুন চাকরি সৃষ্টি করতে পারলে এই ভিসার আওতায় গ্রিন কার্ড পান।
ট্রাম্পের নতুন প্রস্তাব
ট্রাম্পের দাবি, ইবি-৫ প্রোগ্রামকে সরিয়ে এনে আরও বেশি অর্থ আদায়ের পথ তৈরি করা জরুরি। তাই তিনি চালু করতে চাইছেন গোল্ড কার্ড—যার জন্য একজন বিদেশিকে সরাসরি ৫০ লাখ ডলার ব্যয় করতে হবে। এই কার্ডের মাধ্যমে ধনী বিদেশিরা দ্রুত ও সহজ প্রক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী বসবাসের অনুমতি পাবেন। পাশাপাশি নাগরিকত্বের দিকেও অগ্রসর হওয়ার সুযোগ তৈরি হবে।
গ্রিন কার্ড বনাম গোল্ড কার্ড
- গ্রিন কার্ড: স্থায়ী আবাসনের অনুমতি, যা চাকরি, পরিবার বা বিনিয়োগের ভিত্তিতে প্রদান করা হয়। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বর্তমানে ন্যূনতম পরিমাণ ১০ লাখ ৫০ হাজার ডলার।
- গোল্ড কার্ড: একই ধরনের স্থায়ী আবাসনের সুবিধা দিলেও এর শর্ত হচ্ছে ৫০ লাখ ডলার পরিশোধ করতে হবে। অর্থাৎ কেবলমাত্র অত্যন্ত ধনী ব্যক্তিদের জন্য এটি কার্যকর।
ট্রাম্পের লক্ষ্য
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানিয়েছেন, গোল্ড কার্ড বিক্রি থেকে সরকারের জন্য বিপুল রাজস্ব সংগ্রহ সম্ভব হবে। তার পরিকল্পনা হলো ১০ লাখ গোল্ড কার্ড প্রদান করা, যা দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় ঋণ শোধে সহায়তা করা যাবে। তিনি মনে করেন, বিশ্বের ধনী ব্যক্তিরা—রাশিয়ান ধনকুবের থেকে শুরু করে অন্যান্য প্রভাবশালী বিনিয়োগকারীরা—এ সুযোগে আগ্রহ দেখাবেন।
কেন নতুন কার্ড আনার উদ্যোগ?
ইবি-৫ ভিসা প্রোগ্রামটি ১৯৯২ সালে চালু হয়েছিল মূলত বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করার উদ্দেশ্যে। তখন শর্ত ছিল ১০ লাখ ডলার বিনিয়োগ, তবে অর্থনৈতিকভাবে অনুন্নত এলাকায় বিনিয়োগ করলে শর্ত কমে ৮ লাখ ডলার করা হয়েছিল। এর মাধ্যমে বিভিন্ন অঞ্চলে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটলেও সময়ের সাথে অপব্যবহারের অভিযোগও ওঠে। ট্রাম্প প্রথমবার প্রেসিডেন্ট থাকার সময় শর্ত বাড়িয়ে ১৮ লাখ ডলার করতে চেয়েছিলেন, যদিও আদালত তা বাতিল করে দেয়। পরে বাইডেন প্রশাসন এর পরিমাণ ১০ লাখ ৫০ হাজার ডলারে স্থির করে।
সবার জন্য উন্মুক্ত?
ট্রাম্প স্পষ্ট করে বলেছেন, যে কেউ যদি অর্থ পরিশোধ করতে প্রস্তুত থাকেন তবে গোল্ড কার্ড পাওয়া যাবে। এমনকি বিতর্কিত দেশগুলোর ধনী ব্যক্তিরাও এ প্রক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের অনুমতি কিনতে পারবেন।