Sunday, October 5, 2025
spot_img
Homeএডুকেশনটেক্সাসে নতুন আইন ঘিরে শিক্ষকদের নীরব প্রতিরোধ, শ্রেণিকক্ষে টানানো হচ্ছে ভিন্ন বার্তা

টেক্সাসে নতুন আইন ঘিরে শিক্ষকদের নীরব প্রতিরোধ, শ্রেণিকক্ষে টানানো হচ্ছে ভিন্ন বার্তা

টেক্সাসের সরকারি স্কুলগুলোতে শ্রেণিকক্ষে টানানো হচ্ছে ‘টেন কমান্ডমেন্টস’ বা দশটি ধর্মীয় নির্দেশনা সম্বলিত পোস্টার। তবে এ নিয়েই শুরু হয়েছে ভিন্নধর্মী প্রতিরোধ। অনেক শিক্ষকই নিজেদের মতো করে আইন এড়িয়ে বিকল্প পথ খুঁজছেন।

ডালাসের এক স্কুলশিক্ষক নিজের শ্রেণিকক্ষে টেন কমান্ডমেন্টসের পোস্টারকে ঘিরে রেখেছেন হিন্দু, বৌদ্ধ ও ইসলাম ধর্মের মূলনীতি লেখা উজ্জ্বল রঙের প্ল্যাকার্ড দিয়ে। অন্যদিকে, হিউস্টনের উত্তরে এক বিকল্প শিক্ষক তাঁর যমজ সন্তানদের স্কুলে পাঠাচ্ছেন ‘ফার্স্ট অ্যামেন্ডমেন্ট’ লেখা ব্যাজ পরে। তিনি প্রতিবেশী শিশুদেরও একই ব্যাজ ব্যবহার করতে উৎসাহিত করছেন।

দক্ষিণ-পূর্ব টেক্সাসের আরেক শিক্ষক সরাসরি জানিয়েছেন, তিনি শ্রেণিকক্ষে টেন কমান্ডমেন্টস টানাবেন না। প্রয়োজনে উল্টো করে টানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।

এইসব প্রতিরোধ শুরু হয়েছে নতুন রিপাবলিকান প্রণীত সেনেট বিল ১০ কার্যকর হওয়ার পর থেকে। আইনে বলা হয়েছে, প্রতিটি সরকারি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শ্রেণিকক্ষে টেন কমান্ডমেন্টসের পোস্টার থাকতে হবে। স্কুল চাইলে অনুদানে পাওয়া পোস্টার ব্যবহার করতে পারবে অথবা নিজেদের অর্থে কিনতেও পারবে।

তবে কতগুলো স্কুল এ আইন মানছে, তা এখনও পরিষ্কার নয়। এদিকে কিছু স্কুল জেলা মামলা করায় আপাতত তাদের ক্ষেত্রে আইন কার্যকর হয়নি। মামলার বাদীপক্ষের দাবি, শ্রেণিকক্ষে টেন কমান্ডমেন্টস বাধ্যতামূলক করা সংবিধানবিরোধী এবং চার্চ ও রাষ্ট্রের পৃথকীকরণ নীতির লঙ্ঘন।

টেক্সাসের অ্যাটর্নি জেনারেল পরিষ্কার জানিয়েছেন, যারা মামলা করেনি সেই সব জেলাকে অবশ্যই আইন মেনে চলতে হবে। যদিও আইন বাস্তবায়নের জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো শাস্তির বিধান রাখা হয়নি। ফলে শিক্ষকরা দ্বিধায় পড়েছেন—কীভাবে আইন মেনে চলবেন, আবার নিজের বিশ্বাসের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কিছু করবেন না।

শিক্ষকদের একাংশের মত, শ্রেণিকক্ষে এসব পোস্টার এক ধর্মকে প্রাধান্য দিচ্ছে এবং শিশুদের সামনে অস্বস্তিকর আলোচনা তৈরি করতে পারে। এক আর্ট শিক্ষক বলেন, “পোস্টারে লেখা আছে—‘তুমি তোমার প্রতিবেশীর স্ত্রীর প্রতি লোভ করো না’। আমার ছোট্ট শিক্ষার্থীদের কাছে এসবের কোনো মানে নেই। বরং যদি লেখা থাকত—‘ভাল ব্যবহার করো, চুরি করো না, মিথ্যা বলো না’—তা হলে শিক্ষার্থীদের শেখানো সহজ হতো।”

বিভিন্ন ধর্মের মূলনীতি টানিয়ে ভিন্নতা বজায় রাখার চেষ্টা করছেন ওই শিক্ষক। পোস্টারে এখন স্থান পেয়েছে ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভ, বৌদ্ধধর্মের চারটি মহাসত্য এবং হিন্দুধর্মের অহিংসা ও সত্যবাদিতার মতো নৈতিক নির্দেশনা। এখনও পর্যন্ত স্কুল প্রশাসন এসব নিয়ে কোনো আপত্তি জানায়নি।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments