জাপানের প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে $৫৫০ বিলিয়নের বিনিয়োগ চুক্তি পুনরায় আলোচনা করার কোনও পরিকল্পনা নেই। সাম্প্রতিক একটি কূটনৈতিক সফরের শেষে তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, “যদিও প্রধানমন্ত্রী পরিবর্তিত হোক, সরকারগুলোর মধ্যে করা প্রতিশ্রুতি পরিবর্তন করা উচিত নয়।”
এই ঘোষণা এসেছে দক্ষিণ কোরিয়ার গিয়ংজুতে অনুষ্ঠিত একাধিক কূটনৈতিক কর্মকাণ্ড ও আঞ্চলিক শীর্ষ সম্মেলনের শেষে। সেখানে তিনি অন্যান্য এশিয়া-প্যাসিফিক নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং চীনের রাষ্ট্রপতি ও দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রপতির সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন।
প্রধানমন্ত্রী সফরের সময় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জাপানের অর্থনৈতিক সম্পর্কের ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি বলেন, চুক্তি পুনর্বিবেচনার কোনও পরিকল্পনা নেই, তবে তিনি পূর্বে জানিয়েছিলেন যে, যদি কোনও বিষয় দেশের স্বার্থে অন্যায়মূলক বা ক্ষতিকারক মনে হয়, তবে এমন পরিস্থিতিতে পুনঃবিবেচনা করা যেতে পারে।
নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার আগে তিনি সতর্ক করেছিলেন যে, আমেরিকার সঙ্গে শুল্ক বা বাণিজ্য সম্পর্কিত যে কোনও অমিল জাপানের জাতীয় স্বার্থে ক্ষতিকর হলে তা সমাধানের উপায় খোলা থাকবে। যদিও বর্তমানে তিনি জানান, বর্তমান বিনিয়োগ চুক্তি যথাযথ এবং তা বজায় রাখা উচিত।
প্রধানমন্ত্রী একজন কঠোর সংরক্ষণবাদী রাজনীতিবিদ এবং জাপানের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হয়ে দেশটির রাজনৈতিক ইতিহাসে নতুন দিগন্ত খুলেছেন। তার নেতৃত্বের সঙ্গে দেশটি একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক পরিবর্তনের দিকে এগোচ্ছে, যেখানে দেশের কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক নীতি শক্তিশালীভাবে সংরক্ষিত হচ্ছে।
গিয়ংজু সফরে তিনি চীনের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে এক সুসংগঠিত ও স্থিতিশীল দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক গড়ে তোলার বিষয়ে একমত হয়েছেন। চীনা রাষ্ট্রসংবাদ জানিয়েছে, চীনের রাষ্ট্রপতি উল্লেখ করেছেন যে, দুই দেশ একে অপরের জন্য কোনো হুমকি হতে পারবে না।
এর আগে জাপানের রাজধানী টোকিওতে তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে প্রথম দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেছিলেন। তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, এই বৈঠকে তারা সরাসরি এবং খোলাখুলি আলোচনা করেছেন এবং ব্যক্তিগত সম্পর্কও গড়ে তুলেছেন। এই বৈঠক দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ককে আরও মজবুত করার লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
এই ঘোষণার মাধ্যমে জাপান স্পষ্ট করেছে যে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পন্ন হওয়া বিশাল বিনিয়োগ চুক্তি পুনঃবিবেচনার বিষয়টি এখন তাদের নীতি নয়। এটি জাপানের জন্য একটি স্থিতিশীল অর্থনৈতিক পরিবেশ এবং আন্তর্জাতিক বিনিয়োগে দৃঢ় অবস্থান নিশ্চিত করবে।
উল্লেখযোগ্য যে, প্রধানমন্ত্রী তার সফরের সময় দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে মন্তব্য করতে অনিচ্ছুক ছিলেন, কারণ চুক্তির বিস্তারিত তথ্য এখনও প্রকাশিত হয়নি।
নতুন প্রশাসন ও নেত্রী হিসেবে জাপান এমন পদক্ষেপ নিচ্ছে যা আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ ও বাণিজ্যিক সম্পর্ককে স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ। এই ঘোষণার মাধ্যমে দেশটি একটি স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে যে, জাপানের জাতীয় স্বার্থের প্রতিটি চুক্তি রক্ষা করা হবে এবং পুনঃবিবেচনা শুধুমাত্র জরুরি ক্ষেত্রে সীমিত থাকবে।



