জাতিসংঘের সদর দপ্তরে একটি অস্বাভাবিক ঘটনার মুখোমুখি হয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। নিউইয়র্কে জাতিসংঘে প্রবেশের সময় চলন্ত সিঁড়িতে পা রাখামাত্রই সেটি হঠাৎ থেমে যায়। এ ঘটনায় তিনি মঞ্চে বক্তব্য দেওয়ার সময় রসিকতা করে বিষয়টি উল্লেখ করেন, যা উপস্থিত বিশ্বনেতাদের হাস্যরসে ভরিয়ে তোলে।
ঘটনাটিকে হালকাভাবে নিলেও জাতিসংঘ কর্তৃপক্ষ জানায়, তাদের তদন্তে সিঁড়ি থেমে যাওয়ার কারণ হিসেবে নিরাপত্তা ব্যবস্থার সক্রিয় হয়ে ওঠাকে দায়ী করা হয়েছে। তাদের ধারণা, প্রেসিডেন্টের সঙ্গে থাকা ভিডিওগ্রাফার ভুলবশত উল্টো দিকে গিয়ে সিঁড়ির নিরাপত্তা ফাংশন চালু করে ফেলেছিলেন। ফলে সিঁড়িটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যায়, যাতে কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে।
ঘটনার পর জাতিসংঘের মুখপাত্র জানান, এই নিরাপত্তা ব্যবস্থা বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে যেন কোনো ব্যক্তি বা বস্তু চলন্ত সিঁড়ির যন্ত্রাংশে আটকা না পড়ে। ভিডিওগ্রাফারের আচরণই এর কারণ হয়ে থাকতে পারে বলেই তাদের ধারণা।
তবে হোয়াইট হাউস এ ঘটনায় ভিন্ন প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। প্রেস সেক্রেটারি এক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পোস্টে মন্তব্য করেন, যদি এটি ইচ্ছাকৃতভাবে করা হয়ে থাকে, তবে দায়ীদের তাৎক্ষণিক বরখাস্ত করে তদন্ত করা উচিত।
শুধু চলন্ত সিঁড়িই নয়, জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে প্রেসিডেন্টের বক্তব্য দেওয়ার সময়ও আরেকটি সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। ব্যবহৃত টেলিপ্রম্পটারটি সঠিকভাবে কাজ করছিল না। প্রেসিডেন্ট এ বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেন, “জাতিসংঘ থেকে আমি দুটি জিনিস পেয়েছি—একটি খারাপ চলন্ত সিঁড়ি আর একটি খারাপ টেলিপ্রম্পটার।” তার এই মন্তব্যে হলঘরে উপস্থিত অনেকেই হেসে ওঠেন।
জাতিসংঘের পক্ষ থেকে অবশ্য বিষয়টি ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করা হয়। তাদের একজন কর্মকর্তা জানান, প্রেসিডেন্ট নিজের দলের আনা টেলিপ্রম্পটার ব্যবহার করেছিলেন। ফলে ত্রুটির জন্য জাতিসংঘের প্রযুক্তিগত ব্যবস্থা দায়ী নয়। এমনকি বক্তৃতা শেষে সাধারণ পরিষদের সভাপতি ঘোষণা দেন, জাতিসংঘের টেলিপ্রম্পটার ঠিকভাবেই কাজ করছে।
অন্যদিকে, প্রেসিডেন্টের মন্তব্যে বিষয়টি রসিকতা হিসেবে দেখা হলেও হোয়াইট হাউস তা অতটা হালকাভাবে নেয়নি। চলন্ত সিঁড়ির ঘটনা নিয়ে তাদের অবস্থান বেশ কঠোর, এবং তারা সম্ভাব্য তদন্তের দিকেও ইঙ্গিত দিয়েছে।
সব মিলিয়ে, জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে একটি গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতার দিনটি কিছু প্রযুক্তিগত বিভ্রাট ও অপ্রত্যাশিত ঘটনার কারণে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসে। উপস্থিত বিশ্বনেতাদের হাসির ফোয়ারা, জাতিসংঘের ব্যাখ্যা এবং হোয়াইট হাউসের প্রতিক্রিয়া—সবকিছু মিলে ঘটনাটি এখনো বহুল আলোচিত হয়ে আছে।