গাজীপুর মহানগরের জয়দেবপুর রেলক্রসিং এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে চলা দখল ও বিশৃঙ্খলা দূর করতে প্রশাসনের সমন্বিত পদক্ষেপে পরিচালিত হয়েছে একটি বড় উচ্ছেদ অভিযান। সিটি করপোরেশন, জেলা প্রশাসন, মহানগর পুলিশ ও রেলওয়ে বিভাগের যৌথ উদ্যোগে এই অভিযান পরিচালিত হয়। এতে রেলক্রসিং ঘিরে গড়ে ওঠা শতাধিক অবৈধ দোকান, অস্থায়ী স্থাপনা ও হকারদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ পদক্ষেপে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
অভিযানটি পরিচালনার সময় উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, রেল জংশনের স্টেশনমাস্টার এবং রেলওয়ে নিরাপত্তা বিভাগের কর্মকর্তারা। পাশাপাশি মহানগর পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট, ট্রাফিক বিভাগ এবং সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট শাখার কর্মকর্তারাও এতে অংশ নেন।
সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, “জয়দেবপুর রেলক্রসিং গাজীপুরের প্রাণকেন্দ্র। প্রতিদিন লাখো মানুষ এই পথ দিয়ে চলাচল করেন। দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ দখল ও বিশৃঙ্খলার কারণে সাধারণ মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছিল। এই দুরবস্থা দূর করতেই আমরা কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছি।” তিনি আরও জানান, উচ্ছেদের পর এলাকায় নিয়মিত নজরদারি থাকবে, যাতে নতুন করে কেউ অবৈধভাবে স্থাপনা গড়ে তুলতে না পারে। কেউ চেষ্টা করলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযান শেষে এলাকায় দৃশ্যমান পরিবর্তন এসেছে। রেলক্রসিং ঘিরে পথ এখন অনেকটা খোলা, যানবাহন চলাচলে এসেছে স্বাচ্ছন্দ্য। স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিনের দখলমুক্তির এই উদ্যোগ শহরের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ফিরিয়ে এনেছে। তাদের মতে, প্রশাসনের এই কার্যক্রম গাজীপুর নগরবাসীর জন্য এক প্রশান্তির বার্তা।
অন্যদিকে, উচ্ছেদ অভিযানের পর জীবিকা হারানো ভাসমান ফল ব্যবসায়ী ও হকাররা মানবিক বিবেচনায় পুনর্বাসনের দাবি জানিয়েছেন। তারা জানিয়েছেন, তারা যেন সিটি করপোরেশনের আওতায় কোথাও স্থায়ীভাবে ব্যবসা করার সুযোগ পান, যাতে জীবিকা নির্বাহ চালিয়ে যেতে পারেন।
সিটি করপোরেশনের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, নাগরিকদের চলাচল ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যেমন দখলমুক্ত অভিযান চলছে, তেমনি ভাসমান ব্যবসায়ীদের বিষয়টিও মানবিকভাবে দেখা হচ্ছে। তিনি বলেন, “আমরা আইন অনুযায়ী তাদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিচ্ছি, যাতে তারা সুশৃঙ্খলভাবে ব্যবসা করতে পারেন এবং শহরের সৌন্দর্যও অক্ষুণ্ণ থাকে।”
এই সমন্বিত অভিযানের মাধ্যমে জয়দেবপুর রেলক্রসিং এলাকায় তৈরি হয়েছে একটি নতুন দৃষ্টান্ত। শহরজুড়ে এখন আলোচনার বিষয় — অবৈধ দখলমুক্ত পরিচ্ছন্ন শহরের পথে প্রশাসনের এই কার্যকর পদক্ষেপ। অনেকের প্রত্যাশা, এ ধরনের উদ্যোগ অব্যাহত থাকলে গাজীপুর ধীরে ধীরে ফিরে পাবে তার স্বাভাবিক চলাচল ও সৌন্দর্য।



