ছয় দিন বন্ধ থাকার পর আজ মঙ্গলবার থেকে আবার সম্প্রচারে ফিরছে যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় রাতের কৌতুক অনুষ্ঠান ‘জিমি কিমেল লাইভ’। সম্প্রচার সাময়িকভাবে বন্ধ করার পেছনে ছিল সম্প্রচারের সময় কৌতুক উপস্থাপক জিমি কিমেলের একটি মন্তব্য, যা দেশীয় রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে বিতর্ক সৃষ্টি করেছিল।
এক মাস আগে এক পর্বে কিমেল মন্তব্য করেছিলেন, ‘কিছু রাজনৈতিক গোষ্ঠী সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ডকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করতে চাচ্ছে।’ এই মন্তব্যের পর শোটি ডিজনি মালিকানাধীন এবিসি নেটওয়ার্কের পক্ষ থেকে ‘অনির্দিষ্টকালের জন্য’ বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
উল্লেখযোগ্যভাবে, বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর প্রেসিডেন্টের পক্ষ থেকে এই উদ্যোগের প্রশংসা করা হয় এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তারা সিদ্ধান্তের পক্ষে মন্তব্য করেন। তবে এবার শোটি পুনরায় সম্প্রচারে ফিরায় সেই আশাবাদ কিছুটা ভেঙে গেছে।
শো বন্ধ থাকার সময় জিমি কিমেল ও এবিসি নেটওয়ার্কের মধ্যে দীর্ঘ আলোচনার খবর পাওয়া গেছে। ডিজনির শীর্ষ কর্মকর্তারা কিমেলের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে আলোচনা করেছেন এবং সম্প্রচার পুনরায় শুরু করার সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন। নেটওয়ার্ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সম্প্রচারের সাময়িক বিরতি নেওয়ার উদ্দেশ্য ছিল দেশের উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিতে অবাঞ্ছিত উত্তেজনা সৃষ্টি হওয়া থেকে বিরত রাখা।
ফেডারেল কমিউনিকেশনস কমিশনের চেয়ারম্যানও কিমেলের মন্তব্যকে তীব্র সমালোচনার মুখে ফেলেছিলেন। তিনি বলেন, এই ধরনের মন্তব্য সম্ভবত অপ্রয়োজনীয় এবং অসুস্থ মানসিকতার পরিচয় দেয়। কিন্তু এবিসি এবং ডিজনি এটি নিয়ন্ত্রকের চাপে নয়, বরং তাদের স্বার্থ ও জনসমর্থনের কথা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
‘জিমি কিমেল লাইভ’ বর্তমানে রাতের বেলা সম্প্রচারিত হয় এবং এটি মূলত রাজনৈতিক ও সামাজিক বিষয় নিয়ে কৌতুকময় আলোচনা করে থাকে। অনুষ্ঠান পুনরায় সম্প্রচারে ফিরায় অনেকেই এটি ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতি একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন। কারণ, প্রেসিডেন্ট নিয়মিত সংবাদমাধ্যম ও সমালোচকদের বিরুদ্ধে নিয়ন্ত্রণমূলক পদক্ষেপ গ্রহণের হুমকি দিয়ে থাকেন।
আজকের অনুষ্ঠানে আশা করা হচ্ছে, কিমেল নিজে বিষয়টি মিটমাট করে দর্শকদের সামনে আরও স্পষ্টভাবে তুলে ধরবেন। তবে এখনও তিনি বা তাঁর প্রতিনিধি বিষয়টি নিয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেননি।
ডিজনি এবং এবিসি নেটওয়ার্কের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অনুষ্ঠান বন্ধ রাখা এবং পুনরায় সম্প্রচার শুরু করার মধ্যে কোনো রাজনৈতিক চাপের প্রভাব ছিল না। এটি ছিল কেবলমাত্র শো ও সম্প্রচার সংক্রান্ত স্বার্থ এবং দেশের পরিস্থিতিকে বিবেচনা করে নেওয়া একটি সিদ্ধান্ত।
এই ঘটনায় শোটি বন্ধ ও পুনরায় সম্প্রচারের মধ্য দিয়ে মিডিয়া স্বাধীনতা, বিনোদন ও রাজনৈতিক সংবেদনশীলতার মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিতর্ক আবারও সৃষ্টি হয়েছে।