Sunday, October 5, 2025
spot_img
Homeঅন্যান্যচীনের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় মিলল সম্ভবত বিশ্বের প্রাচীনতম মমি

চীনের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় মিলল সম্ভবত বিশ্বের প্রাচীনতম মমি

গবেষকরা জানিয়েছেন—প্রচলিত ধারণার বিপরীতে মিশর নয়, চীন ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন পুরনো কবরস্থলেই এমন মানবঅবশেষ পাওয়া গেছে যেগুলোর বয়স মিশরের মমি থেকে অনেক বেশি। নতুন গবেষণায় দেখা গেছে ওই অঞ্চলের কিছু কবরস্থল ৪,০০০ থেকে ১৪,০০০ বছর আগের মধ্যে সময়কালভিত্তিক থাকতে পারে, যা মমিফিকেশনের ইতিহাসকে অনেক পুরনো ও বিস্তৃত দিক দেখায়।

গবেষণাটিতে প্রাক-নিউলিথিক সময়ের ১১টি প্রত্নতাত্ত্বিক সাইট থেকে মোট ৫৪টি কবর বিশ্লেষণ করা হয়; নমুনার বড় অংশ এসেছে ভিয়েতনাম ও চীনের দক্ষিণাঞ্চলের একটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের স্থানীয় আবস্থান থেকে, এবং কম সংখ্যক নমুনা পাওয়া গেছে ফিলিপাইন, লাওস, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া থেকেও।

তদন্তে দেখা গেছে মৃত্যুর পরে দেহগুলো সাধারণত কুঁচকে বা বসার ভঙ্গিতে রাখা হয়েছিল এবং আঙ্গিনায় আগুন জ্বালানোর চিহ্নও রয়েছে। গবেষকরা বলছেন, এসব কঙ্কাল আগুনের ধোঁয়া ও তাপ দিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে ধোয়া-শুকিয়ে সংরক্ষণ করার লক্ষণ দেখায়—অর্থাৎ এটি মমিফিকেশনের এক স্থানীয় পদ্ধতি ছিল।

অস্ট্রেলিয়ার একটি শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এমেরিটাস অধ্যাপক ও গবেষণা দলের এক সহ-লেখক এই অবস্থানকে ওই অঞ্চলের প্রাচীন শিকারের-সংগ্রাহক জনগোষ্ঠীর সাথে সংযুক্ত করে দেখেছেন। তিনি বলেন, এই মানবঅবশেষগুলি প্যালিওলিথিক যুগে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বসতি প্রতিষ্ঠা করা আদিপৌরুষতার সঙ্গে সম্পর্কিত এবং তাদের সাংস্কৃতিক অনুষঙ্গ আঞ্চলিকভাবে বিস্তৃত ছিল—যেটি অস্ট্রেলিয়া ও নিউ গিনি পর্যন্ত পর্যবসিত ছিল।

আগে পর্যন্ত সবচেয়ে পুরনো বলে গণ্য মমিগুলো দক্ষিণ আমেরিকার উপকূলীয় এক মৎস্যভিত্তিক জনগোষ্ঠীর তৈরির বলে ধরা হতো—অর্থাৎ আগে জানা রেকর্ডও এই নতুন আবিষ্কারের সঙ্গে তুলনায় ন্যায়সঙ্গত নয়। এক মিশরীয়তত্ত্বের বিশারদ এই আবিষ্কারকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, ‘মমি’ শব্দের ব্যাপ্তি এখন খুব সাধারণভাবে ব্যবহৃত; মূল উদ্দেশ্য—দেহ সংরক্ষণ—দুই ক্ষেত্রেই মিল রয়েছে।

গবেষণা প্রকল্পটি আনুষ্ঠানিকভাবে ২০১৭ সালে শুরু হয়ে ধীরে ধীরে ২৪ জন বিশিষ্ট বিশেষজ্ঞের সমন্বয়ে একটি বড় পদ্ধতিগত কাজ হিসেবে গড়ে ওঠে। দলের প্রধান লেখক এক ই-মেইলে উল্লেখ করেছেন, এটি ছিল একরকম তদন্তমূলক কাজ—বিভিন্ন সূক্ষ্ম সূত্র জুড়ে বড় একটি ধারণা তৈরির প্রক্রিয়া।

এই ফলাফলগুলো প্রাগৈতিহাসিক কবরচর্চা ও মৃতদেহ সংরক্ষণ সম্পর্কিত ধারণাকে বিস্তৃত করে দিয়েছে এবং প্রমাণ করে যে মমিফিকেশন একক অঞ্চলের কুসংস্কার নয়—বিভিন্ন ভৌগোলিক অঞ্চলে ভিন্ন পদ্ধতিতে মানবদেহ সংরক্ষণের প্রচেষ্টা মানবসমাজে বহু প্রাচীন থেকে বিদ্যমান ছিল।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments