জনপ্রিয় ড্রোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটিকে চীনা সামরিক কোম্পানি হিসেবে চিহ্নিত করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগের তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। সম্প্রতি এক ফেডারেল আদালতের বিচারক এই রায় দেন।
আদালতের রায়ে বলা হয়, প্রতিরক্ষা বিভাগ যথেষ্ট প্রমাণ উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছে যে প্রতিষ্ঠানটির প্রযুক্তি চীনের প্রতিরক্ষা শিল্পক্ষেত্রে অবদান রাখছে। বিশেষ করে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সময় পরিবর্তিত ড্রোন ব্যবহারের বিষয়টি প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়। রায়ে উল্লেখ করা হয়, কোম্পানির নীতিমালা সামরিক ব্যবহার নিষিদ্ধ করলেও বাস্তবে তাদের প্রযুক্তি সামরিক খাতে ব্যবহৃত হয়েছে এবং এর তাত্ত্বিক ও বাস্তব সামরিক প্রয়োগের যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে আদালত প্রতিরক্ষা বিভাগের সব যুক্তি মেনে নেয়নি। কিছু ব্যাখ্যা অপ্রাসঙ্গিক হওয়ায় তা প্রত্যাখ্যান করা হয়।
প্রসঙ্গত, প্রতিরক্ষা বিভাগে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার আগেই অন্যান্য মার্কিন সংস্থা—যেমন বাণিজ্য বিভাগ ও ট্রেজারি বিভাগ—প্রতিষ্ঠানটিকে অনুরূপ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছিল। অবশেষে ২০২২ সালে প্রতিরক্ষা বিভাগও সেটি অনুসরণ করে।
প্রতিষ্ঠানটি গত বছর এই রায়ের বিরুদ্ধে মামলা করে দাবি করে যে তারা কোনোভাবেই চীনা সামরিক বাহিনীর মালিকানাধীন বা নিয়ন্ত্রিত নয়। তাদের বক্তব্যে বলা হয়, প্রতিরক্ষা বিভাগও স্বীকার করেছে তারা কেবল ভোক্তাদের জন্য এবং বাণিজ্যিক ড্রোন উৎপাদন করে, সামরিক ড্রোন নয়। এছাড়া তালিকাভুক্ত হওয়ার কারণে তাদের আর্থিক ক্ষতি, সুনামহানি ও ব্যবসা হারানোর অভিযোগও প্রতিষ্ঠানটি আদালতে তুলে ধরে।
মামলার রায়ের পর প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়ে আইনি বিকল্প বিবেচনা করছে। তাদের বক্তব্যে বলা হয়, আদালতের রায় কেবল একটি নির্দিষ্ট যুক্তির ওপর ভিত্তি করে দেওয়া হয়েছে, যা এমনকি অনেক কোম্পানির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য, অথচ তারা কখনো তালিকাভুক্ত হয়নি।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিষ্ঠানটির সামনে আরও কিছু বড় বাধা রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে আগামী ডিসেম্বর থেকে সম্ভাব্য বিক্রয় নিষেধাজ্ঞা। যদি জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা নিশ্চিত না করে যে তাদের ড্রোন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য অগ্রহণযোগ্য ঝুঁকি তৈরি করছে না, তবে বিক্রয়ে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হতে পারে।
এই রায়ের ফলে প্রতিষ্ঠানটির ভবিষ্যৎ কার্যক্রম যুক্তরাষ্ট্রে আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।