চার্লি কার্ককে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া কিছু মন্তব্যকে “অযোগ্য” আখ্যা দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশ কয়েকজন কর্মীকে সাময়িক বরখাস্ত ও তদন্তের মুখে পড়তে হয়েছে। এই পদক্ষেপকে ঘিরে দেশে নতুন করে বাকস্বাধীনতা নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে।
বলা হচ্ছে, রাজনৈতিকভাবে ডানপন্থি মহল থেকে এমন এক প্রচারণা চালানো হচ্ছে, যেখানে সমালোচনামূলক মন্তব্যকারীদের চাকরি থেকে অপসারণ বা শাস্তির মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, সাংবাদিক, স্বাস্থ্যকর্মী, এমনকি বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মীরাও এর শিকার হয়েছেন।
দক্ষিণ ক্যারোলিনার এক বিশ্ববিদ্যালয় শনিবার জানায়, তারা একজন কর্মীকে বরখাস্ত করেছে এবং অন্যদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। বিবৃতিতে বলা হয়, অনলাইনে “অযোগ্য কনটেন্ট” প্রকাশ করা হয়েছে এবং এ বিষয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে একই সঙ্গে তারা যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে সুরক্ষিত বাকস্বাধীনতার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলেও জানায়।
এমন অবস্থানে ক্ষোভ প্রকাশ করেন দক্ষিণ ক্যারোলিনার এক সিনেটর। তিনি বলেন, “বাকস্বাধীনতা থাকলেই যে খারাপ সিদ্ধান্তের কারণে চাকরি যাবে না, তা নয়।”
ফ্লোরিডার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আর্ট হিস্ট্রির এক অধ্যাপককেও সাময়িক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ, তিনি চার্লি কার্ক হত্যাকাণ্ড নিয়ে বারবার মন্তব্য করেছেন। তবে সংশ্লিষ্ট অধ্যাপক দাবি করেছেন, তিনি হত্যাকাণ্ড নিয়ে কিছু লেখেননি; বরং কার্কের রাজনীতি ও সামাজিক অবস্থান নিয়ে অন্যদের সমালোচনামূলক পোস্ট শেয়ার করেছিলেন।
এদিকে, বাকস্বাধীনতা বিষয়ক সংগঠনগুলো বলছে, এ ধরনের সিদ্ধান্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করছে। একাধিক মানবাধিকারকর্মী সতর্ক করেছেন, রাজনৈতিক চাপে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যেন তাৎক্ষণিক বরখাস্ত না করে, বরং ন্যায্য প্রক্রিয়া অনুসরণ করে।
এছাড়া, কিছু ডানপন্থি নেতার বিরুদ্ধে সমালোচকদের ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ (ডক্সিং) করে হয়রানি চালানোর অভিযোগ উঠেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন (ACLU)-এর দক্ষিণ ক্যারোলিনা অধ্যায় একে “হয়রানি ও ভয় দেখানোর কৌশল” হিসেবে উল্লেখ করেছে।
বাকস্বাধীনতার পক্ষে কাজ করা সংগঠনগুলোর মতে, রাজনৈতিক সহিংসতা যেমন নিন্দনীয়, তেমনি সংবিধানে সুরক্ষিত মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে সীমিত করাও সমানভাবে উদ্বেগজনক।