ফ্রান্সের করসিকা দ্বীপের আকাশে অদ্ভুত এক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল যখন একটি যাত্রীবাহী বিমান অবতরণের অনুমতির জন্য এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও কোনো সাড়া পাননি। রাজধানী প্যারিস থেকে করসিকার আজাক্সিও বিমানবন্দরে যাত্রা করা ‘এয়ারবাস এ৩২০’ দীর্ঘ ১৮ মিনিট ধরে আকাশে চক্কর খাচ্ছিল।
ঘটনাটি ঘটেছে গত মঙ্গলবার রাতে। উড়োজাহাজটি যখন অবতরণের অনুমতি চাচ্ছিল, তখন একমাত্র কন্ট্রোলার বেঘোরে ঘুমিয়ে ছিলেন। পাইলটরা প্রথমে রেডিও বার্তা দিয়েও সাড়া পাননি, পরে বিমানটি করসিকার অন্য শহর বাস্তিয়ার দিকে চলে যেতে চাইছিল। পরিস্থিতি গুরুতর হওয়ায় অগ্নিনির্বাপণ বাহিনী ও পুলিশকে ডাকতে হয়।
গ্রাউন্ড স্টাফরা কন্ট্রোল টাওয়ারে পৌঁছালে দেখতে পান কন্ট্রোলার তাঁর ডেস্কে ঘুমাচ্ছেন। তাঁকে জাগানো হয় এবং অবশেষে তিনি রানওয়ে বাতি জ্বালিয়ে উড়োজাহাজটিকে নিরাপদে অবতরণের অনুমতি দেন। পাইলট জানিয়েছেন, তাদের পেশাজীবনে এমন ঘটনা আগে কখনো ঘটেনি। যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক কম ছিল, বরং এটি তারা মজার ঘটনা হিসেবে নিয়েছিলেন।
ফ্লাইটটি সেই রাতে আগে থেকেই প্রায় এক ঘণ্টা দেরিতে ছেড়ে গিয়েছিল। কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যর্থ হওয়ায় গ্রাউন্ড স্টাফরা বিমানবন্দর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে কন্ট্রোল টাওয়ারে পৌঁছান। ততক্ষণে উড়োজাহাজটি নিরাপদে আকাশে চক্কর খাচ্ছিল, যা একটি অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিল।
ফ্রান্সের বেসামরিক বিমান পরিবহন কর্তৃপক্ষ জানায়, কন্ট্রোলারের ঘুমের কারণ নির্ধারণে একটি অভ্যন্তরীণ তদন্ত শুরু হয়েছে। এর আগে দেশটির এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলাররা কাজের পরিবেশ ও মজুরি নিয়ে অভিযোগ করেছেন। তাঁদের বক্তব্য, দীর্ঘ সময় চাপের মধ্যে কাজ করতে গিয়ে মানসিক ক্লান্তি ও অবসাদে ভোগেন।
উড়োজাহাজটি অবশেষে কোনো দুর্ঘটনা ছাড়াই নিরাপদে অবতরণ করে। তবে এই ঘটনাটি এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের দায়িত্বের গুরুতর দিক এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতা উন্মোচন করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কন্ট্রোলারদের মানসিক ও শারীরিক সুস্থতার দিকে আরও নজর দেওয়া অত্যন্ত জরুরি, কারণ তাদের সতর্কতা সরাসরি যাত্রীদের জীবন নিরাপত্তার সঙ্গে যুক্ত।