অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা দেশের পুনর্গঠন ও উন্নয়নে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সক্রিয় অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি উল্লেখ করেন, প্রবাসীরা বাংলাদেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং দেশের সামগ্রিক পরিবর্তন ও অগ্রযাত্রায় তাঁদের অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশ নতুন সম্ভাবনার পথে এগিয়ে চলেছে। এই পরিবর্তনের ধারা টেকসই করতে প্রবাসীদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখতে হবে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, “দূরে গ্যালারিতে দাঁড়িয়ে খেলা দেখব—এমন সময় শেষ হয়ে গেছে। এখন সময় এসেছে মাঠে নামার, সবাইকে নিজে খেলার।”
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে স্থানীয় সময় শনিবার আয়োজিত “এনআরবি কানেক্ট ডে: এমপাওয়ারিং গ্লোবাল বাংলাদেশি” শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বর্তমানে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশ নেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র সফরে রয়েছেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে থাকা দেশের রাজনৈতিক নেতারাও উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, এ সফরে রাজনৈতিক নেতাদের উপস্থিতি আমাদের আত্মবিশ্বাস আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান একটি প্রেজেন্টেশন দেন। সেখানে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর গত ১৫ মাসে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি তুলে ধরা হয়। তিনি উল্লেখ করেন, রেমিট্যান্সে ২১ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি এসেছে প্রবাসীদের অবদানের কারণে। পাশাপাশি বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপও তুলে ধরা হয়।
এ আয়োজনকে আরও প্রাণবন্ত করতে অনুষ্ঠিত হয় “ব্রিজিং বর্ডারস: কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড ডায়াস্পোরা এনগেজমেন্ট” শীর্ষক একটি ইন্টারেক্টিভ প্যানেল আলোচনা। এটি পরিচালনা করেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত। আলোচনায় প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা এবং আরও দুইজন অংশ নেন।
একই সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থেকে অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশের উন্নয়ন ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে তাঁদের মতামত ব্যক্ত করেন। এতে জাতীয়তাবাদী দল, জামায়াতে ইসলামী এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতারা দেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের ওপর তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন।
এছাড়া জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা সঞ্চালনা করেন “শেপিং টুমোরো: দ্য ফিউচার অব বাংলাদেশ” শীর্ষক আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্যানেল আলোচনা। সেখানে ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা বাংলাদেশের সম্ভাবনা, চ্যালেঞ্জ এবং অগ্রগতির বিষয়গুলো বিস্তারিতভাবে উপস্থাপন করেন।
অনুষ্ঠানে প্রবাসীদের জন্য বিশেষ উদ্যোগ হিসেবে উদ্বোধন করা হয় “শুভেচ্ছা” নামে একটি মোবাইল অ্যাপ। এই অ্যাপের মাধ্যমে প্রবাসীরা সহজে প্রয়োজনীয় পরিষেবা, নির্দেশনা এবং বিনিয়োগের সুযোগ পাবেন।
প্রধান উপদেষ্টা তাঁর বক্তব্যে পুনরায় জোর দিয়ে বলেন, “দেশের অগ্রযাত্রা আর উন্নয়নে প্রবাসীদের সক্রিয় ভূমিকা অপরিহার্য। এখন সময় এসেছে সবাইকে মিলে মাঠে নামার।”