রোববার বাংলাদেশের সময় দুপুর সাড়ে বারোটার পর, দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও আলোকচিত্রী একটি পোস্টে স্বচ্ছভাবে জানিয়েছেন যে গাজা পৌঁছানোর কথা থাকলেও এখন তা সম্ভবত কিছুটা দেরি হবে। ওই পোস্টে তিনি পাঠকদের উঠা-নামার নানা প্রশ্নের উত্তর দেন এবং যাত্রা সংক্রান্ত অবস্থা সম্পর্কে বিস্তৃতি দেন। তিনি জানিয়েছেন যে, আমাদের যাত্রাপথ নিরীক্ষণের সবচেয়ে কার্যকর উপায় হল ট্র্যাকার ব্যবহারের মাধ্যমে নৌবিহারে থাকা জাহাজগুলোর গতিবিধি অনুসরণ করা।
পোস্টে বলা হয়েছে যে অনলাইনে থাকা একটি তদন্তমূলক প্ল্যাটফর্ম — ‘ফরেনসিক আর্কিটেকচার’ — তাদের সাবেক সহযোগিতার প্রেক্ষিতে কনশানস ও থাউজেন্ড ম্যাডলিনস উভয় নৌবহরের পথ ট্র্যাক করেছে। এতে যেসব রুট দেখা যায় সেগুলোই বর্তমানে তাদের চলার ধরণ বুঝতে সহায়তা করছে। ফলে পাঠক যারা জানতে চেয়েছেন “এখন কোথায় আছেন” বা “গাজায় পৌঁছতে আর কত সময় লাগবে” — তাদের জন্য এই ট্র্যাকিং সিস্টেমই আপাতত সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য প্রমাণ হিসেবে কাজ করবে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
তিনি দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তরে পরিষ্কার করেন যে গাজায় পৌঁছানো সম্পূর্ণভাবে আইডিএফের (ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী) কিভাবে প্রতিক্রিয়া দেখায় তার ওপর নির্ভরশীল। পূর্বের অভিজ্ঞতা অনুযায়ী, তাদের ওপর কড়া নজর রাখা বা বাধা দেয়া হতে পারে; এমনকি আটক করা বা ফিরিয়ে পাঠানো ও কারাগারে পাঠানোর মতো পরিস্থিতিও সৃষ্টি হতে পারে। এসবের কখন এবং কোথায় ঘটবে তা পূর্বেই বলা মুশকিল; এসব সিদ্ধান্ত তাদের হাতের বাইরে। তিনি পুনরায় জোর দিয়ে বলেন, চলমান প্রক্রিয়ায় এই অনিশ্চয়তা নিয়ে তাদের দল প্রস্তুত রয়েছে এবং পরিস্থিতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
একই পোস্টে তিনি পাঠকদের কাছে সহায়তার আহ্বানও জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, গাজায় পৌঁছানোর জন্য যে একমাত্র কার্যকর কৌশল আছে তা হচ্ছে সাধারণ মানুষের পর্যাপ্ত চাপ—ইসরায়েলের ওপর আন্তর্জাতিক নাগরিকদের, সমাজের এবং রাষ্ট্রসমূহের পর্যায়ে চাপ সৃষ্টি করা। যদি পাঠকরা ও সমর্থকরা এমন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন যা গাজায় পৌছানোর বিষয়ে চাপ সৃষ্টি করে, তাহলে সেটাই সর্বোত্তম ফলাফল আনতে পারে। তিনি সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে, প্রতিরোধে অংশ নিয়ে এগোবার আহ্বান জানিয়েছেন এবং এটিকে অধিকার ও ন্যায়বিচারের জন্য একটি প্রচারণা হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন।
প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেছেন যে আজ সকালেই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছ থেকে শুভেচ্ছাবার্তা পান, যা তাদের গতিশীলতায় নৈতিক সমর্থনের একটি নিদর্শন। তিনি আরও নিশ্চিত করেন যে বর্তমানে তিনি কনশানস নামক নৌযানে অবস্থান করছেন। কনশানস আন্তর্জাতিক উদ্যোগ ‘ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (এফএফসি)’ এবং ‘থাউজেন্ড ম্যাডলিনস টু গাজা (টিএমটিজি)’ নৌবহরের একটি অংশ হিসেবে গাজা অভিমুখে প্লান করা জাহাজগুলোর মধ্যে একটি।
নোটযোগ্য বিষয় হল, যদিও এই বহরে অংশ নিয়ে তারা গাজার অবরোধ ভাঙতে ও মানবিক পরিস্থিতি সম্পর্কে আন্তর্জাতিক মনোযোগ আকৃষ্ট করতে চাইছে, তাদের বহরে সরাসরি খাদ্যসামগ্রী নেই—এটি কথিত যে এফএফসি বৈশ্বিক ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’র অংশ এবং মূল লক্ষ্য হচ্ছে অবরোধ ভাঙ্গার ক্ষেত্রে নজর আকৃষ্ট এবং আইনি-নৈতিক ভিত্তিতে চাপ সৃষ্টি। তিনি সবশেষে আবারও জনসাধারণকে আবেদন জানিয়েছেন—আপনারা যদি সমর্থন ও চাপ গঠন করতে পারেন, তাহলে সেটাই তাদের গন্তব্যে পৌঁছানোর সম্ভাবনাকে বাড়াবে। তিনি পরিস্থিতি সম্পর্কে আপডেট দেবেন বলেও উল্লেখ করেছেন এবং বর্তমানে যাত্রার পথে থাকা ও অনিশ্চয়তা নিয়ে সতর্কতা অবলম্বন করতে অনুরোধ করেছেন।