ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের নৌবহর গাজার দিকে এগোচ্ছে, যেখানে কনশানস নামের প্রধান জাহাজটি দ্রুতগতিতে অন্যান্য নৌযানগুলোর সঙ্গে সংযুক্ত হয়েছে। কনশানস জাহাজের গতিসম্পর্কিত সমস্যার কারণে এটি আটটি নৌযানের সঙ্গে সংস্পর্শে আসে, তবে দ্রুত গতি নিয়ন্ত্রণ করে সব নৌযান এখন একসঙ্গে নিরাপদভাবে এগোচ্ছে।
দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও আলোকচিত্রী শহিদুল আলম কনশানস জাহাজে অবস্থান করেই এ তথ্য ফেসবুকে জানিয়েছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন, কনশানস বহরের সবচেয়ে বড় নৌযান, যা ইতালি থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর যাত্রা শুরু করেছিল। তার আগে আটটি নৌযান রওনা হয়েছিল এবং আরও দুটি নৌকার অবস্থান এখনো অজানা। যদিও কনশানস শেষ রওনা করলেও এর দ্রুত গতির কারণে অন্যান্য নৌযানগুলোর সঙ্গে সংস্পর্শ ঘটেছে। এখন সব নৌযান একসাথে গাজার দিকে এগোচ্ছে।
কনশানস জাহাজটি আন্তর্জাতিক উদ্যোগ ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (এফএফসি) এবং থাউজেন্ড ম্যাডলিনস টু গাজা (টিএমটিজি) যৌথভাবে পরিচালিত। এফএফসি হলো বৈশ্বিক প্রচেষ্টা ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’-র অংশ, যা ইসরায়েলের অবরোধ ভেঙে গাজায় ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ করে। তবে এই মিশনে খাদ্যসামগ্রী সরবরাহ করা হয়নি।
শহিদুল আলম ফেসবুকে লিখেছেন, ‘থাউজেন্ড ম্যাডলিনস একটি প্রতীকী ধারণা। বিশ্বনেতাদের নিষ্ক্রিয়তা ও কপট ভূমিকার কারণে মানুষ নিজেরাই পদক্ষেপ নিয়েছে। হাজারো জাহাজের এই সংযুক্তি সমুদ্রযানের ইতিহাসে অন্যতম বৃহৎ বহর।’ তিনি আরও বলেছেন, কনশানস জাহাজের মানুষরা অবরোধ ভাঙতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। দমন-পীড়নকারী কখনোই জনগণের শক্তির বিরুদ্ধে টিকতে পারেনি, এবং ইসরায়েলও ব্যর্থ হবে।
ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, কনশানস জাহাজে ২৫টি দেশের সাংবাদিক ও স্বাস্থ্যকর্মী উপস্থিত আছেন। এই মিশন গত বুধবার শুরু হয়। এটি গাজার দিকে রওনা হয়েছে আন্তর্জাতিক সাংবাদিক ও চিকিৎসকবাহী এই জাহাজের মাধ্যমে।
ইসরায়েল গত দুই বছর ধরে বিদেশি সাংবাদিকদের গাজায় প্রবেশে বাধা দিয়ে আসছে। একই সময়ে ফিলিস্তিনি সাংবাদিকদের উপর লক্ষ্যবস্তু হামলাও বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে বর্তমানে পর্যন্ত ২৭০-এর বেশি সাংবাদিক নিহত হয়েছেন, এবং অনেকে আটক ও কারাগারে বন্দী আছেন। এই পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর জন্য গভীর উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের এই মিশন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, সাংবাদিক ও মানবিক সহায়তা বহনকারী নৌযান গাজার পথে নির্ভয়ে এগোতে সক্ষম। কনশানসের নেতৃত্বে এই বহর ইসরায়েলের অবৈধ অবরোধ ভাঙার দৃঢ় সংকল্প প্রকাশ করছে।