খাইবার পাখতুনখাওয়ায় সাম্প্রতিক সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে ভয়াবহ সংঘর্ষে ১৯ জন সেনা নিহত হয়েছেন। এ ঘটনার পর পাকিস্তান সরকার ঘোষণা দিয়েছে, সন্ত্রাস দমনে তারা সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করবে এবং কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।
সামরিক সূত্র জানিয়েছে, দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সন্ত্রাসীদের গোলাগুলিতে ১২ সেনা নিহত হন। পাল্টা অভিযানে সেনারা ১৩ জন সন্ত্রাসীকে হত্যা করে। পরে লোয়ার দির এলাকায় আরেকটি সংঘর্ষে আরও ৭ সেনা প্রাণ হারান এবং নিরাপত্তা বাহিনী ১০ জন সন্ত্রাসীকে হত্যা করতে সক্ষম হয়।
আইএসপিআর জানিয়েছে, ১০ থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলা অভিযানে ভারতের সহায়তায় পরিচালিত কথিত ‘ফিতনা আল খাওয়ারিজ’ গোষ্ঠীর অন্তত ৩৫ জন সদস্য নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ওয়াজিরিস্তানে নিহত ১৩ জনও অন্তর্ভুক্ত। পাকিস্তান সরকার দীর্ঘদিন ধরেই এ গোষ্ঠীকে নিষিদ্ধ সংগঠন তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের (টিটিপি) ছদ্মনাম হিসেবে চিহ্নিত করে আসছে। একইভাবে বেলুচিস্তানভিত্তিক গোষ্ঠীগুলোকে তারা ‘ফিতনা আল হিন্দুস্তান’ বলে উল্লেখ করে থাকে।
ঘটনার পর প্রধানমন্ত্রী ও সেনাপ্রধান বান্নু এলাকা সফর করেন। সেখানে তারা উচ্চপর্যায়ের সন্ত্রাসবিরোধী বৈঠকে যোগ দেন এবং নিহত সেনাদের জানাজায় অংশ নেন।
প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, পাকিস্তানে সন্ত্রাস দমনে সরকার কঠোর পদক্ষেপ নেবে। তিনি অভিযোগ করেন, সন্ত্রাসী হামলার মূল পরিকল্পনাকারীরা আফগান ভূমিতে অবস্থান করছে এবং ভারতের প্রত্যক্ষ সমর্থন পাচ্ছে। পাশাপাশি তিনি সতর্ক করে দেন—যারা সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দেয়, সাফাই গায় কিংবা বিদেশি প্রভাবের হয়ে কাজ করে, তারা পাকিস্তানের শত্রু হিসেবে বিবেচিত হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, সন্ত্রাসবাদকে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের বিভ্রান্তি বা রাজনৈতিক প্রচারণা মেনে নেওয়া হবে না। খাইবার পাখতুনখাওয়ার জনগণসহ সমগ্র জাতির ঐক্য ও সাহসের প্রশংসা করে তিনি আশ্বাস দেন, সরকার দ্রুত প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক ও আইনি পদক্ষেপ নিয়ে কার্যকর জবাব নিশ্চিত করবে।