ক্যালিফোর্নিয়া যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম রাজ্য হিসেবে আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তাদের সরকারি কার্যক্রম চলাকালে মুখ ঢেকে রাখার প্রথা নিষিদ্ধ করেছে। শনিবার গভর্নরের স্বাক্ষরের মাধ্যমে এই আইন কার্যকর হয়, যা বিশেষ করে অভিবাসন দমন অভিযানে মুখোশ ব্যবহার নিয়ে তীব্র বিতর্কের পর আনা হয়।
সম্প্রতি লস অ্যাঞ্জেলেসে ব্যাপক অভিবাসন অভিযানে মুখোশ পরিহিত ফেডারেল কর্মকর্তাদের দেখা যায়। এ ঘটনায় কয়েকদিন ধরে ব্যাপক প্রতিবাদ হয় এবং পরবর্তীতে প্রেসিডেন্ট জাতীয় গার্ড ও মেরিন বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দেন।
গভর্নর জানান, ক্যালিফোর্নিয়ার জনসংখ্যার প্রায় ২৭ শতাংশ বিদেশে জন্মগ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, বৈচিত্র্যই এই রাজ্যের শক্তি, অথচ তা আক্রমণের মুখে পড়েছে। মুখোশ পরে পরিচয় গোপন রেখে মানুষ গ্রেপ্তার করার প্রথা গণতান্ত্রিক অধিকার ও প্রক্রিয়াকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
তবে নতুন আইনের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, কারণ ফেডারেল সংস্থাগুলো এই আইনের আওতায় পড়বে কি না তা স্পষ্ট নয়। ফেডারেল কর্মকর্তারা যুক্তি দিয়েছেন, তাদের ও পরিবারের নিরাপত্তার জন্য পরিচয় গোপন রাখা জরুরি। মার্কিন দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার ভারপ্রাপ্ত অ্যাটর্নি সামাজিক মাধ্যমে জানান, ফেডারেল সংস্থার কাজে এ আইন কোনো প্রভাব ফেলবে না।
হোমল্যান্ড সিকিউরিটির এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা আইনটিকে “অফিসারদের নিরাপত্তা ঝুঁকিতে ফেলার প্রচেষ্টা” বলে অভিহিত করেছেন। তাদের মতে, আইন প্রয়োগকারীরা ইতোমধ্যেই হামলার মুখোমুখি হচ্ছেন এবং মুখোশ ব্যবহার তাদের সুরক্ষার জন্য অপরিহার্য।
নতুন আইন অনুযায়ী, অফিসিয়াল দায়িত্ব পালনের সময় স্থানীয় ও ফেডারেল কর্মকর্তারা নেক গেইটার, স্কি মাস্ক বা অনুরূপ মুখোশ ব্যবহার করতে পারবেন না। তবে আন্ডারকভার মিশন, চিকিৎসাজনিত কারণে মাস্ক ব্যবহার বা কৌশলগত পোশাক এর আওতার বাইরে থাকবে। রাজ্য পুলিশকেও এ নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য নয়।
এছাড়া একই দিনে আরেকটি আইন পাস করা হয়, যাতে অভিবাসন কর্মকর্তারা বৈধ পরোয়ানা ছাড়া স্কুল বা স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন না। স্কুলে এ ধরনের পরিস্থিতি হলে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষককে জানানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
রাজ্যের আইনপ্রণেতারা জানিয়েছেন, এ উদ্যোগ জনআস্থা বাড়াতে সহায়তা করবে এবং ভুয়া কর্মকর্তা সেজে অপরাধ করার প্রবণতা কমাবে। একইসাথে শিক্ষার্থীরা ভয়ের মধ্যে না থেকে স্বাভাবিকভাবে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারবে।