মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, চলতি বছরের মধ্যেই তিনি উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গে বৈঠক করতে চান। সোমবার (২৫ আগস্ট) হোয়াইট হাউসে দক্ষিণ কোরিয়ার নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট লি জে মিয়ং–এর সঙ্গে আলোচনার সময় তিনি এ কথা বলেন। ট্রাম্প একই সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে নতুন করে বাণিজ্য আলোচনায় বসার আগ্রহও প্রকাশ করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
ট্রাম্পের মন্তব্য
লি জে মিয়ংকে প্রথমবার ওভাল অফিসে স্বাগত জানাতে গিয়ে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, “আমি এই বছর কিম জং উনের সঙ্গে দেখা করতে চাই। সুযোগ পেলেই তার সঙ্গে বৈঠকের অপেক্ষায় আছি।”
বাণিজ্য ও কূটনৈতিক ইস্যু
গত জুলাইয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার রপ্তানি পণ্যে কড়া মার্কিন শুল্ক এড়াতে দুই দেশের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। তবে পারমাণবিক কর্মসূচি, প্রতিরক্ষা ব্যয় এবং যুক্তরাষ্ট্রে দক্ষিণ কোরিয়ার ৩৫০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে মতভেদ রয়ে গেছে।
ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনার পর প্রেসিডেন্ট লি যুক্তরাষ্ট্রের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে ব্যবসায়িক ফোরামে অংশ নেন, যেখানে কোরিয়ান ও মার্কিন কোম্পানির সিইওরাও উপস্থিত ছিলেন। সফরের অংশ হিসেবে দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় বিমান সংস্থা কোরিয়ান এয়ার ১০৩টি বোয়িং বিমান কেনার ঘোষণা দেয়।
উত্তর কোরিয়ার প্রতিক্রিয়া
ট্রাম্পের মন্তব্যের বিষয়ে পিয়ংইয়ং প্রাথমিকভাবে কোনো সাড়া দেয়নি। তবে পরে তাদের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানায়, যুক্তরাষ্ট্র–দক্ষিণ কোরিয়ার যৌথ সামরিক মহড়া প্রমাণ করে যে ওয়াশিংটন কোরীয় উপদ্বীপে প্রভাব বিস্তার ও আঞ্চলিক দেশগুলোকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করতে চাইছে।
অতীত প্রেক্ষাপট
জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ট্রাম্প কিম জং উনের সঙ্গে পুনরায় আলোচনার ইচ্ছা প্রকাশ করে আসছেন। কিন্তু ২০১৭–২০২১ মেয়াদে হওয়া সরাসরি কূটনীতির ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে উত্তর কোরিয়ার পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি। ফলে তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ন্ত্রণে আনতে নতুন কোনো সমঝোতাও হয়নি।
দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনীতি ও নতুন প্রেসিডেন্ট
ওভাল অফিসে বৈঠকের সময় ট্রাম্প ও লি রাজনৈতিক বিরোধ এড়িয়ে গলফ ও শান্তি প্রতিষ্ঠা নিয়ে আলাপ করেন। লি ট্রাম্পের অভ্যন্তরীণ নীতি ও শান্তি প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন।
এটি ছিল লি জে মিয়ং-এর প্রথম হোয়াইট হাউস সফর। তিনি ক্ষমতায় আসেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল অভিশংসিত হওয়ার পর। ইউন গত বছরের শেষ দিকে সামরিক আইন জারি করেছিলেন, যা আইনসভা দ্রুত বাতিল করে। এর পর বিদ্রোহের অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
নতুন প্রেসিডেন্ট দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে প্রকাশ্যে প্রচেষ্টা চালালেও, পিয়ংইয়ং এখনো কোনো ইতিবাচক সাড়া দেয়নি।