ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ায় স্কুলে ভ্যাকসিন ম্যান্ডেট ঘিরে তীব্র আইনি বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে। অঙ্গরাজ্যের গভর্নরের নির্বাহী আদেশ ও শিক্ষা বোর্ডের সিদ্ধান্তের মধ্যে দ্বন্দ্ব এখন আদালতে গড়িয়েছে।
এর আগে ওয়েস্ট ভার্জিনিয়া যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি অঙ্গরাজ্যের মধ্যে ছিল যেখানে কেবল চিকিৎসাজনিত কারণে ভ্যাকসিন ছাড়ের অনুমতি দেওয়া হতো। তবে এ বছরের জানুয়ারিতে দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম দিনেই অঙ্গরাজ্যের রিপাবলিকান গভর্নর এক নির্বাহী আদেশ জারি করেন, যাতে পরিবারগুলো ধর্মীয় বা দার্শনিক কারণে সন্তানদের ভ্যাকসিন থেকে অব্যাহতি দিতে পারে।
এই সিদ্ধান্তের ফলে রাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগ, শিক্ষা বোর্ড ও অভিভাবকদের মধ্যে আইনি লড়াই শুরু হয়। কিছু পরিবার ও চিকিৎসকরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, এই ছাড় শিশুদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়াতে পারে। বিশেষ করে দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন শিশুদের জন্য এটি মারাত্মক হতে পারে। এক শিশুর মা এবং এক শিশুক্যান্সার বিশেষজ্ঞ আদালতে মামলা করেছেন, যেখানে বলা হয়েছে—অতিরিক্ত ছাড় দেওয়া হলে সংক্রমণের আশঙ্কা বহুগুণ বেড়ে যাবে।
অন্যদিকে, কিছু অভিভাবক ধর্মীয় কারণে ভ্যাকসিন ছাড়ের পক্ষে অবস্থান নিয়ে শিক্ষা বোর্ডের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। আদালত আপাতত তাদের সন্তানদের স্কুলে উপস্থিতির অনুমতি দিয়েছে। এখন রাজ্যের সুপ্রিম কোর্টে বিষয়টি চূড়ান্তভাবে নিষ্পত্তি হওয়ার অপেক্ষা।
ডেটা বিশ্লেষণে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৭৭% কাউন্টিতে ২০১৯ সালের পর থেকে টিকাদানের হার কমেছে। ওয়েস্ট ভার্জিনিয়াতেও এই হার দ্রুত নিচে নামছে। নতুন আদেশ কার্যকর থাকলে অঙ্গরাজ্যটি যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে শিথিল ভ্যাকসিন নীতিমালার রাজ্যে পরিণত হতে পারে।
চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, হাম, হুপিং কাশি, পোলিও বা ডিপথেরিয়ার মতো রোগ আবারও ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়তে পারে। অন্যদিকে, ধর্মীয় ছাড়ের পক্ষে থাকা পরিবারগুলো বলছে, ভ্যাকসিন নেওয়া মানে ঈশ্বরপ্রদত্ত রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতায় হস্তক্ষেপ করা।
এমন প্রেক্ষাপটে ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ার এই লড়াই এখন যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ভ্যাকসিন নীতি নিয়ে বাড়তে থাকা বিভাজনের প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠেছে।