Sunday, October 5, 2025
spot_img
Homeসম্পাদকীয়ওয়াশিংটনের দুর্গম অঞ্চলে উদ্ধার হওয়া অজ্ঞাত দেহাবশেষ প্রমাণিত হলো তিন কন্যার হত্যার...

ওয়াশিংটনের দুর্গম অঞ্চলে উদ্ধার হওয়া অজ্ঞাত দেহাবশেষ প্রমাণিত হলো তিন কন্যার হত্যার আসামির

ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যের এক দুর্গম এলাকায় পাওয়া দেহাবশেষ ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়েছে যে এটি তিন কন্যাকে হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত সাবেক সেনাসদস্য এক পিতার। দীর্ঘ কয়েক মাসের অনুসন্ধান শেষে অবশেষে তার সন্ধান মিলেছে বলে কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে।

স্থানীয় শেরিফ দপ্তর জানিয়েছে, রাজ্যের অপরাধ পরীক্ষাগার থেকে প্রাপ্ত ডিএনএ রিপোর্টে প্রমাণিত হয়েছে যে উদ্ধার হওয়া দেহাবশেষ অভিযুক্ত ওই ব্যক্তিরই। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার পোশাকও তার বলে শনাক্ত করা হয়েছে।

শেরিফ দপ্তরের পক্ষ থেকে নিহত শিশুদের মায়ের কাছে বিলম্বিত অনুসন্ধানের জন্য দুঃখপ্রকাশ করা হয়। তবে জানানো হয়, অভিযুক্তের মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ায় মামলাটি চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। বর্তমানে মৃত্যুর কারণ ও সময় নির্ধারণের জন্য ময়নাতদন্তের ফলাফলের অপেক্ষায় রয়েছে প্রশাসন।

একজন মনোবিজ্ঞানীর পরামর্শ অনুসরণ করে প্রায় ৭,৫০০ ফুট উঁচু একটি পাহাড়ি এলাকায় অনুসন্ধান চালানো হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই অভিযুক্তের অবস্থান শনাক্ত করতে সক্ষম হয় কর্তৃপক্ষ।

উল্লেখ্য, গেল সপ্তাহে শেরিফ দপ্তর জানিয়েছিল যে লেভেনওর্থের দক্ষিণের একটি বনাঞ্চলে দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয়েছে। ওই এলাকা সিয়াটল থেকে প্রায় ১২০ মাইল দূরে। এখানেই অভিযুক্তের তিন কন্যার লাশ উদ্ধার হয়েছিল জুন মাসে।

৮, ৯ এবং ৫ বছর বয়সী তিন কন্যার লাশ পাওয়া গিয়েছিল একটি ক্যাম্পসাইটে, যেখানে তাদের মাথায় ব্যাগ পরানো ছিল। তদন্তে বেরিয়ে আসে, শিশুদের হাত পা জিপ-টাই দিয়ে বাঁধা হয়েছিল। ঘটনাস্থলেই অভিযুক্তের গাড়ি পাওয়া যায়, যার পেছনে রক্তমাখা হাতের ছাপ ছিল।

পোস্টমর্টেম রিপোর্টে জানা যায়, তিন শিশুর মৃত্যু হয়েছে শ্বাসরোধে। শিশুদের হত্যার অভিযোগে পিতার বিরুদ্ধে খুন ও অপহরণের মামলা দায়ের করা হয়েছিল। এছাড়া, বিচারের হাত থেকে বাঁচতে পালিয়ে যাওয়ার কারণে তার বিরুদ্ধে ফেডারেল স্তরেও মামলা ছিল।

তদন্তকারীরা কোনো সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্যের তথ্য প্রকাশ করেনি। তবে আদালতের নথিতে উল্লেখ করা হয়, অভিযুক্ত ব্যক্তি বিবাহবিচ্ছেদের পর প্রস্তাবিত প্যারেন্টিং পরিকল্পনায় সই করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। সেখানে তাকে মানসিক স্বাস্থ্য চিকিৎসা এবং পারিবারিক সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে থেরাপি নেওয়ার শর্ত দেওয়া হয়েছিল।

৩০ মে শিশুদের নির্ধারিত সাক্ষাতের পর তিনি তাদের ফিরিয়ে দেননি। এরপর শুরু হয় ব্যাপক অনুসন্ধান, যা শত শত বর্গমাইল জুড়ে বিস্তৃত হয়। অভিযুক্তের সম্ভাব্য অবস্থান নিয়ে অসংখ্য তথ্য পাওয়া গেলেও অধিকাংশই মিথ্যা প্রমাণিত হয়। এমনকি অনুসন্ধান দল আইডাহোর স’টোথ ন্যাশনাল ফরেস্ট পর্যন্ত গিয়েছিল, কিন্তু সেখানেও তাকে পাওয়া যায়নি।

প্রশাসনের ভাষ্যমতে, অভিযুক্ত ছিলেন প্রকৃতির সঙ্গী এবং দীর্ঘ সময় অফ-গ্রিড অবস্থায় বেঁচে থাকার অভ্যাস ছিল তার। লেভেনওর্থের দক্ষিণে একবার তাকে হেলিকপ্টারের দল লক্ষ্য করলেও তিনি দ্রুত পালিয়ে গিয়েছিলেন।

অবশেষে দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর অভিযুক্তের মৃত্যু নিশ্চিত করায় তদন্তের এক অধ্যায় সমাপ্ত হলো। নিহত শিশুদের পরিবারের কাছে এটি কিছুটা হলেও স্বস্তি বয়ে আনবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments